ভাইরাল এই বিয়ের কার্ডের পেছনের গল্প

সানজানা তাবাসসুম ও মাহজিব হোসেনের বিয়ের কার্ড সাজানো হয়েছে গবেষণাপত্রের আদলে।মাহজিবের সৌজন্যে

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে বিচিত্র এক আমন্ত্রণপত্র। সানজানা তাবাসসুম ও মাহজিব হোসেনের বিয়ের এই কার্ড সাজানো হয়েছে গবেষণাপত্রের আদলে।

কীভাবে ভাবনাটা মাথায় এল? জানতে চেয়েছিলাম মাহজিবের কাছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এই স্নাতক বলেন, ‘আইডিয়াটা কিন্তু আমার নয়। বেশ কয়েক বছর আগে নাইজেরিয়ান একজন এ রকম একটা কার্ড বানিয়েছিলেন। তখনো কার্ডটা ভাইরাল হয়েছিল। সেখান থেকেই আইডিয়াটা নেওয়া। আর এটাই যে আমার বিয়ের কার্ড হিসেবে ছাপানো হয়েছে, তা-ও নয়। এটা বন্ধুবান্ধবকে অনলাইনে পাঠানোর জন্য মজা করে বানানো।’

সানজানা তাবাসসুম ও মাহজিব হোসেনের বিয়ের আমন্ত্রণপত্র

তবে ভাইরাল হওয়ার পর বেশ সাড়া পাচ্ছেন মাহজিব। এমনকি পাকিস্তান থেকেও তাঁর কাছে ই-মেইল এসেছে। পাকিস্তানের লাহোর থেকে রানা আবদুল রেহমান নামের এক ব্যক্তি বিয়ের কার্ডে এমন সৃজনশীলতার প্রশংসা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নবদম্পতিকে।

মাহজিব যে নাইজেরীয় দম্পতির কথা বলছেন, তাঁদের নাম কবিরু এসবি ও ফাতিমা। ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে কবিরু বলেছিলেন, ‘মহামারির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর কোর্স শুরু না হওয়ায় অলস বসে ছিলাম। ভাবলাম, আমন্ত্রণপত্র নিয়ে একটা পরীক্ষা করা যাক। এরপর এটি বানিয়ে আমি ফাতিমাকে (বাগ্‌দত্তা) পাঠাই।’

কাবিরু ও ফাতিমা দম্পতি
ছবি: সংগৃহীত

মজার ব্যাপার হলো, কনে ফাতিমা কার্ডটা পড়েও দেখেননি। কবিরুর কাছের মানুষেরাও ততটা পাত্তা দেননি। কিন্তু অতিথিদের মধ্যে কেউ কেউ যখন কার্ডের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলেন, রাতারাতি কার্ডটি ভাইরাল হয়ে গেল। যেনতেন ভাইরাল নয়; যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত, সারা পৃথিবীতেই সাড়া ফেলেছে এই অভিনব ভাবনা। পরে অবশ্য বন্ধুদের কাছে জেনে ফাতিমাও আমন্ত্রণপত্রটি পড়ে দেখেছেন।

আরও পড়ুন

একটি পরিপূর্ণ গবেষণাপত্রের মতোই এই নিমন্ত্রণপত্রেও সারসংক্ষেপ, ভূমিকা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, উপসংহার, রেফারেন্সের মতো বিষয়গুলোর উল্লেখ আছে। সারসংক্ষেপে বিয়ে নিয়ে ছোট পরিসরে বেশ একটা ধারণা পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনের আয়াত দিয়ে সাজানো হয়েছে ভূমিকা। গবেষণাপদ্ধতিতে বলে দেওয়া আছে বিয়ের সময় ও স্থান (গুগল ম্যাপসহ)।

সানজানা তাবাসসুম ও মাহজিব হোসেনের বিয়ে হয়েছে গত ১৪ অক্টোবর
ছবি: মাহজিবের সৌজন্যে

কার্ডটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় বিব্রত হচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহজিব বলেন, ‘নাহ। বিয়ে তো হয়েই গেছে। এখন তো আর কেউ দাওয়াত ছাড়া হাজির হতে পারবে না! অনেকে দেখে মজা পাচ্ছেন, তাই ভালো লাগছে। নেতিবাচক মন্তব্য তেমন পাইনি। বিশেষ করে যাঁদের একাডেমিক রিসার্চের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা প্রশংসাই করেছেন। ’

আরও পড়ুন