আপনাকে কোন রং মানাবে, জানাবে যে প্রতিষ্ঠান
একই মেরুন রঙের পোশাক পরার পর কারও ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক বেড়ে যায়, আবার কেউ পরলে ত্বক দেখায় নিষ্প্রাণ। কিংবা একই শেডের গোলাপি লিপস্টিক একেকজনের ত্বকে দেখায় একেক রকম। এসবের পেছনে আছে রঙের খেলা। তাই পোশাক বা গয়না বাছাই করার আগে ত্বকের ধরন জেনে নেওয়াটা খুব জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের থেকে ত্বকের ধরন অনুযায়ী কোন রঙের পোশাক মানাবে, জেনে নিচ্ছেন অনেকেই। দেশেও গত জুন মাসে বনানীতে যাত্রা শুরু করেছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান, নাম ‘কেমিস্ট্রি’। এটির স্বত্বাধিকারী কিমিয়া কিসমত।
লন্ডনে পড়ালেখা করতে গিয়ে রং বিশ্লেষণের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন কিমিয়া। এরপর লন্ডন কলেজ অব স্টাইল থেকে কালার অ্যানালাইসিস ও স্টাইলিং বিষয়ে কয়েকটি কোর্স করেন। জানতে পারেন যে মানুষের ত্বকের রং সাধারণত তিন ধরনের বা টোনের হয়ে থাকে। ওয়ার্ম টোন, কুল টোন ও নিউট্রাল টোন।
ওয়ার্ম টোনের অধিকারীদের ত্বকে হলুদ, কমলা কিংবা সবুজের মতো রংগুলো মানিয়ে যায়। নীল, বেগুনি বা গোলাপি রংগুলো মানায় কুল আন্ডারটোনের অধিকারীদের। ওয়ার্ম টোনের অধিকারীদের সাধারণত সোনালি গয়না এবং কুল টোনের অধিকারীদের রুপালি গয়না বেশি মানায়। তবে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হলো নিউট্রাল টোন বা নিরপেক্ষ ত্বকের রঙের অধিকারীরা। কারণ, সব ধরনের রঙের পোশাক ও গয়নাই তাঁদের মানিয়ে যায়।
কিমিয়া বলেন, ‘কেউ যখন আমাদের কাছে সেশন নিতে আসেন, প্রথমে আমরা তাঁদের সম্পর্কে কিছুটা জানতে চেষ্টা করি। তাঁদের ত্বক কীভাবে প্রতিক্রিয়া করে, জিনগতভাবে চুলের রং কেমন ইত্যাদি টুকটাক তথ্য নিয়ে থাকি। এরপর রং সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়ে থাকি। যাতে তাঁরা নিজেরাও কেনাকাটার সময় রং বুঝে পোশাক, মেকআপ ও অলংকার নির্বাচন করতে পারেন।’
পরের ধাপকে বলা হয় ‘ড্রেপিং’। এ ধাপে যিনি রঙের পরীক্ষা করতে আসেন, তাঁকে প্রাকৃতিক আলোর সামনে বসানো হয়। বিভিন্ন রঙের কাপড় ধরে দেখা হয় কোন রংগুলোয় তাঁর চেহারা উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। কোন ধরনের কাপড়, উজ্জ্বলতা বা রং ভালো লাগবে তা নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয় এই ধাপে।
এতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় লেগে যায়। এরপর ফলাফলগুলো তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কেউ মেকআপ নিয়ে এলে সে বিষয়েও পরামর্শ পান। সব মিলিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
রঙের এই বিশ্লেষণ করতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। পুরো কাজটি কিমিয়া নিজেই করে থাকেন। আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে যেতে হবে।