৩০-এ ৩০ প্রিতম

বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে পড়েছেন প্রিতম সরকার
ছবি: সংগৃহীত

মাধ্যমিক পর্যন্ত বিজ্ঞানে পড়েছেন প্রিতম সরকার। তারপর বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তি হন। ‘আর্টস পড়ে কী করে খাবা?’ ‘জীবন তো এখানেই শেষ’—এ রকম কত কথা যে সে সময় শুনতে হয়েছে। বন্ধুরাও বলত, ‘আর্টস কেন নিলি!’

এর মধ্যেই নিজেকে প্রমাণের লড়াই চালিয়ে গেছেন এই তরুণ। ফলও পেয়েছেন। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১১তম, কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ৩৪তম এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৪৬তম হয়েছেন তিনি। একসঙ্গে তিনটি ইউনিটেই কীভাবে ভালো করলেন? প্রিতম বলেন, ‘যেহেতু মানবিকের শিক্ষার্থী ছিলাম, কলেজের প্রথম বর্ষ থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে পড়েছি। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে মানবিকের শিক্ষার্থীদের জন্য অল্প কিছু আসন থাকে। সেখানে বাংলা, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং অর্থনীতি থেকে আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে হয়। এই চার বিষয়েই ভালো প্রস্তুতি থাকার কারণে সব ইউনিটেই ভালো ফল এসেছে।’

আরও পড়ুন

জানিয়ে রাখি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানে সর্বোচ্চ নম্বর ‘৩০’ পেয়েছেন প্রিতম। জানা যায়, এর আগে ২৮ দশমিক ৭৫ নম্বর ছিল সাধারণ জ্ঞানে সর্বোচ্চ। প্রিতম সেই রেকর্ড ভেঙে ৩০-এ ৩০ পেয়েছেন। মুঠোফোনে আমাদের বলছিলেন, ‘৩০টি প্রশ্নের মধ্যে ২৮টির সঠিক উত্তর দেওয়ার পর বাকি দুটি প্রশ্ন আমি অনেক ভেবেচিন্তে দাগিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ৩০টির উত্তরই সঠিক হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা কমবেশি সবার কাছেই স্মরণীয়। এ সময়ের টক-ঝাল-মিষ্টি অভিজ্ঞতাগুলোও মনে থাকে অনেক দিন। প্রিতম যেমনটা জানালেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে যেদিন পরীক্ষা, তার আগের রাতে ছিলেন বাসে। বাসভ্রমণের ঝক্কিতে এক সেকেন্ডও ঘুমাতে পারেননি। পরদিন ওই অবস্থাতেই সকাল-বিকাল পরীক্ষা দিয়েছেন। ফলাফলের সময় দেখা গেল, দুই ইউনিটেই তিনি ভালো করেছেন। সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অনুষদে হয়েছেন ১৩তম। কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৪০তম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রিতমের স্বপ্নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদি কোনো ইউনিটে পরীক্ষা খারাপ হয়, এই শঙ্কায় তিনটি ইউনিটেই অংশ নিয়েছিলেন। প্রিতম জানালেন, আইন বিভাগে ভর্তি হবেন তিনি। কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন, ‘মূলত আমি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে চাই। আইন বিভাগে পড়লে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার প্রচুর সুযোগ আছে। তা ছাড়া, আইন বিভাগ থেকে পড়াশোনা করে দেশে-বিদেশে অনেক ভালো অবস্থানে পৌঁছানো যায়।’