কানাডার ‘ফার্স্ট লেডি’ ডায়ানার বিষয়ে কতটা জানেন

প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ডায়ানা কার্নিছবি: এএফপি

জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দলের পক্ষেই সায় দিলেন কানাডার জনগণ। আগে কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মার্ক। এরপর বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান মার্ক গোল্ডম্যান স্যাকসের নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন। কানাডার অর্থনীতিকে দুর্যোগের সময়েও টিকিয়ে রাখার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত মার্ক।
মার্ক কার্নির দল জেতার পর থেকে বিশ্বব্যাপী প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীকে নিয়েও নতুন করে আগ্রহ বেড়েছে। মার্ক কার্নির স্ত্রী ডায়ানা ফক্স কার্নি। মার্ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই ডায়ানা ফক্স কার্নিকে ‘স্পাউস অব দ্য প্রাইম মিনিস্টার অব কানাডা’ ডাকা হয়ে থাকে। মার্ক কার্নি ও ডায়ানা ফক্স কার্নি ১৯৯৪ সালে বিয়ে করেন। মার্ক–ডায়ানা দম্পতির চার মেয়ে। তাদের নাম ক্লিও, টেস, অ্যামেলিয়া ও সাশা। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরে মার্ক পরিবারের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের সমর্থন ছাড়া আমি এখানে দাঁড়াতে পারতাম না। তোমরা ছাড়া আমার কোনো লক্ষ্য নেই। সামনে যে দিন আসছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য আমার যে শক্তি প্রয়োজন, (তোমাদের ছাড়া) তা–ও আমার নেই।’

মার্ক ও ডায়নার প্রথম পরিচয়

ডায়ানা ফক্স ও মার্কের প্রথম দেখা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েই তাঁদের পরিচয়। ডায়ানা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আইস হকি ক্লাবের সদস্য ছিলেন। সেই দলে মার্কও ছিলেন। মার্ক কার্নি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইস হকি ক্লাবের পুরুষ দলের গোলকিপার ছিলেন। তাই বলা যায়, আইস হকি মাঠেই তাঁদের ভালোবাসার পরিধি বিস্তৃত হয়। যতদূর জানা যায়, ডায়না একজন দক্ষ শুটারও।

ডায়ানা ফক্স কার্নি এজন অর্থনীতিবিদ ও লেখক
ছবি: এএফপি

পড়াশোনা

পেশাজীবনে ডায়না একজন অর্থনীতিবিদ ও লেখক। তাঁর জন্ম যুক্তরাজ্যে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরে কৃষি অর্থনীতিতেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। অর্থনীতিবিদ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশে ডায়ানার অনেক কাজ রয়েছে। তিনি ‘কানাডা ২০২০’ নামের একটি সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জলবায়ু, শক্তি, সামাজিক গতিশীলতা ও অসমতা–সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করে কানাডা ২০২০। তিনি ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক পলিসি রিসার্চের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ডায়ানার দুটি একাডেমিক প্রকাশনা রয়েছে। পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে তাঁর অনেক কাজ রয়েছে। ২০১২ সালে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ তাঁকে ইকো ওয়ারিয়র (পরিবেশযোদ্ধা) খেতাব দেয়। মার্ক ও ডায়ানা হকি খেলোয়াড় হলেও তাঁদের পছন্দের খেলা টেনিস। এই দম্পতিকে একত্রে ২০১৬ ও ২০১৮ সালে উইম্বলডন চলাকালে মাঠে দেখা গেছে। ডায়না সেভ দ্য চিলড্রেন, শেল ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাজনীতিবিদের স্ত্রী হলেও ডায়ানা বেশির ভাগ সময় পেছনে থাকতে পছন্দ করেন
ছবি: এএফপি

মেয়েদের গল্প

ডায়ানা–মার্ক দম্পতির মেয়ে ক্লিও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। বাবা বিজয়ী হওয়ার পরে ক্লিও এক ভাষণে বলেন, ‘আমি কানাডিয়ানদের বলতে চাই, আমার বাবা আসলে একজন প্রতিশ্রুতিশীল মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্য তিনি একনিষ্ঠভাবে কাজ করেন। কানাডিয়ানরা কাজের বিষয়ে যত্নশীল, আর আমার বাবা একজন কর্মী মানুষ। আমার বাবা যখন কোনো বিষয়ে আগ্রহী হন, তখন তার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। বিনিময়ে কিছুই পাওয়ার আশা করেন না। তাই তিনি কখনোই আপনাকে হতাশ করবেন না।’

স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা

রাজনীতিবিদের স্ত্রী হলেও ডায়ানা বেশির ভাগ সময় পেছনে থাকেন। পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন না। মার্ক বিজয়ের পর ভাষণে বলেন, ‘আমার এই প্রচারাভিযানে সব রকম সাহায্যের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ, ডায়ানা। তোমাকে ছাড়া আজ রাতটা (বিজয়ের রাত) পাওয়া সম্ভব হতো না।’


সূত্র: পিপল ডটকম ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন