যদি হতে চান হৃতিক রোশন

বলিউডের সবচেয়ে ফিট নায়কদের অন্যতম হৃতিক রোশন। নিজের ফিটনেস আর ডায়েট নিয়ে অত্যন্ত সচেতন এই বলিউড তারকা। তাঁর মতো আকর্ষণীয়, নির্মেদ, পেশিবহুল শরীর কে না চায়! হৃতিকের শারীরিক কাঠামোকে তুলনা করা হয় গ্রিক দেবতার সঙ্গে। এই বলিউড সুপারস্টার খুবই শৃঙ্খল জীবনে বিশ্বাসী। আর কিছু নিয়ম তিনি চোখ বুজে মেনে চলেন। হৃতিক নিজেই তাঁর নির্মেদ, ঝরঝরে, স্লিম শরীরের রহস্য ফাঁস করেছেন। একনজরে দেখে নেওয়া যাক হৃতিকের মতো শরীর পেতে কী কী করতে হবে। হৃতিকের খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়াম—এই দুই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

স্লিম শরীরের জন্য ওয়ার্কআউটের পাশাপাশি হেলদি ডায়েট খুবই জরুরি বলে মনে করেন হৃতিক। এই বলিউড নায়ক তাঁর ডায়েট নিয়ে খুবই সাবধানী। তবে হৃতিক আপাদমস্তক ভোজনরসিক। তাই স্বাদ বজায় রেখে স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট মেনে চলেন তিনি। ভারতীয় ও চায়নিজ কুইজিনের ভক্ত এই বলিউড তারকা। তাঁর ডায়েটে প্যানকেক, ব্যানানা স্পিল্ট, দই আর মিটবলসহ আরও অনেক সুস্বাদু খাবার থাকে। তবে হৃতিকের প্যানকেক প্রোটিন পাউডার দিয়ে চিনি ছাড়া বানানো হয়। প্রোটিন পাউডার, দই আর কলা দিয়ে এক খাবার তাঁর ডায়েটে থাকে। তিনি সাপ্লিমেন্টও নেন।

সকাল, দুপুর আর রাতের খাবার

হৃতিকের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার থাকে। পালং, ব্রকলি, ভাত, স্প্রাউট আর পাস্তা থাকে। এই বলিউড নায়ক ক্যাপসিকাম আর ব্রকলি খেতে খুব ভালোবাসেন। ব্রেকফাস্টে তিনি ছয়টি ডিমের সাদা অংশ, দুটি ব্রাউন ব্রেড, প্রোটিন শেকস, নাটস, দুধের সঙ্গে কর্নফ্লেক্স আর ফল খান।

হৃতিক দুপুরে খান দুটি রুটি, সবুজ সবজির তরকারি, চিকেন ব্রেস্ট, সালাদ, মাছের একটি পদ, প্রোটিন শেকস আর ডিমের সাদা অংশ। রাতের খাবারে থাকে লাল আটার রুটি, ডিমের সাদা অংশ, অর্ধেক চিকেন বা হালকা ভাজা মাছ, সবজি আর সালাদ। সবুজ সবজি সেদ্ধ করে খেতে পছন্দ করেন হৃতিক। স্প্যানিশ ওমলেট বা সেদ্ধ ডিম খেতে ভালোবাসেন তিনি। চকলেট মিল্কও খুবই পছন্দ তাঁর।

বিকেলে বাদাম, প্রোটিন শেক পান করেন তিনি। তবে ব্রাউনি আর বাদাম তাঁর দুর্বলতা বলে জানিয়েছিলেন হৃতিক। ফলের মধ্যে তিনি আম, আপেল, কলা, তরমুজ আর মিষ্টি আলু ভালোবাসেন। এই বলিউড সুপারস্টার জানান, তিনি কখনোই পেটপুরে খান না। কিছুটা খালি রাখেন। সারা দিনে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করেন। এ ছাড়া ফলের জুস আর গ্রিন টি তাঁর ডায়েটে থাকে। করোনার জন্য তিনি একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করেছেন। আদা-হলুদ দেওয়া গরম পানি খান। আবার আদা, তুলসীপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচ দিয়ে 'কাড়া' পান করেন হৃতিক। ব্যায়াম করার পর ৪৫ মিনিট তিনি কিছুই খান না। তবে দুই ঘণ্টা পরপর কিছু না কিছু খান।

প্রোটিনজাতীয় খাবার

শরীরের পেশি গঠনের জন্য প্রোটিনজাতীয় খাবার অত্যন্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি ওয়ার্কআউটের পর ক্ষতিগ্রস্ত পেশি মেরামত করার জন্যও প্রোটিন আবশ্যক। হৃতিকের ডায়েট প্রোটিনজাতীয় খাবারে ভরপুর।

বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম

হৃতিক প্রতিদিন কঠিন 'ওয়ার্কআউট' করেন। তবে সপ্তাহে সাত দিনের বদলে চার বা পাঁচ দিন ব্যায়াম করেন তিনি। সকাল আর বিকেল—দিনে দুই বেলা শরীরচর্চা করেন তিনি। নিজের শরীরকে অ্যাথলেটিক লুক দেওয়ার জন্য তিনি রোজ কার্ডিও, স্ট্রেচিং আর পাওয়ার ওয়ার্কআউট করেন। এই বলিউড তারকা প্রতিদিন সকালে ৩০ মিনিট কার্ডিও এক্সারসাইজ করেন।

একেক দিন একেক ব্যায়াম

হৃতিক সপ্তাহের প্রথম দিন বুকের এক্সারসাইজ করেন। পরের দিন তিনি করেন পায়ের এক্সারসাইজ। তৃতীয় দিন বিশ্রাম নেন। চতুর্থ দিন তিনি বাহু আর পেশির এক্সারসাইজ করেন। পঞ্চম দিন তিনি কাঁধের ব্যায়াম করেন।

সার্কিট ট্রেনিং

সার্কিট ট্রেনিং ওয়ার্কআউটে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। এর মাধ্যমে দ্রুত পেশি গঠন করা যায়। শরীরের যথাযথ কাঠামো দেওয়ার জন্য সার্কিট ট্রেনিং খুবই জরুরি। হৃতিক বিকেলে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সার্কিট ট্রেনিং নেন বলে জানিয়েছেন।

আর্মস এক্সারসাইজ

বাহুর যথাযথ শেপ ধরে রাখার জন্য, পেশির সমতা বজায় রাখার জন্য হৃতিক আর্মস এক্সারসাইজ করেন। এর মধ্যে আছে ডবল পুলওভার, স্ট্রেট আর্ম পুলডাউন আর কনসেন্ট্রেটেড কার্লস।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল