করোনায় কোন মাস্ক কতটা কার্যকর

করোনা প্রতিরোধে এই ১৪টি মাস্কের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখেছেন ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। ছবি: সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে নেওয়া
করোনা প্রতিরোধে এই ১৪টি মাস্কের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখেছেন ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। ছবি: সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে নেওয়া

করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের অনেক দেশেই এখন মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরপরও সবাই যে মাস্ক পরছেন, তা নয়। কেউ কেউ পরছেন। আবার যাঁরা পরছেন, তাঁদের অনেকেই সঠিকভাবে পরছেন না। আবার অনেকেই করোনা প্রতিরোধে কার্যকর কি না, তা না জেনেই বাজার থেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করছেন। এতে মাস্ক পরেও অনেকেই করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। এখন বাজারে থাকা মাস্কগুলো করোনা প্রতিরোধে কতটা কার্যকর, তার ওপর একটি গবেষণা করেছেন আমেরিকার ডিউক ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। তাঁরা বলছেন, বাজারে থাকা সব মাস্ক করোনাপ্রতিরোধী নয়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৭ আগস্ট ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এই গবেষণা প্রতিবেদন ‘দ্য জার্নাল সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’–এ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁরা এন৯৫ থেকে শুরু করে মোট ১৪ ধরনের মাস্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন। ব্ল্যাক বক্স, লেজার ও ক্যামেরার সাহায্যে ১৪ ধরনের মাস্কের প্রতিটি ১০ বার করে পরীক্ষা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষ হাঁচি, কাশি, গান গাওয়া, চিৎকার করা ও কথা বলার সময় মূলত ড্রপলেট আসে। আর করোনাভাইরাস মূলত ড্রপলেটের মাধ্যমেই বেশি ছড়ায়। করোনায় সংক্রমিত প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ জানেন না, তাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন। এ কারণে তাঁরা চিন্তাহীনভাবে ঘুরে বেড়ান। এতে করোনার সংক্রমণ অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। এ কারণেই সবাইকে মাস্ক পরিধান করা উচিত।

ডিউক ইউনিভার্সিটির ফিজিশিয়ান ও গবেষক দলের সদস্য এরিক ওয়েস্টম্যান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদি সবাই মাস্ক ব্যবহার করে, তাহলে মানুষের ড্রপলেট থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর হার ৯৯ শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব। ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আসার আগ পর্যন্ত প্রমাণিত যে এভাবেই নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে।’

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর মাস্ক হলো ভাল্ব ছাড়া এন৯৫ মাস্ক। যদিও এই মাস্ক স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিন স্তরবিশিষ্ট সার্জিক্যাল মাস্ক ও হাতে তৈরি সুতির মাস্কও করোনা প্রতিরোধে বেশ কাজে দেয়। দৌড়বিদেরা যেসব মাস্ক ব্যবহার করেন, সেসব মাস্ক করোনা প্রতিরোধে ব্যবহার না করা ভালো। কারণ, এসব মাস্ক ড্রপলেট আটকাতে পারে না। সাধারণ কাপড় বা রুমাল ও নিটেড মাস্কও করোনা প্রতিরোধে তেমন কোনো কাজ করে না। তাই এসব মাস্ক ব্যবহার না করাই ভালো।

গবেষক দলের সদস্য ডিউক ইউনিভার্সিটির কেমিস্ট ও ফিজিসিস্ট মার্টিন ফিসার বলেছেন, ‘আমরা সবাইকে মাস্ক পরার বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে যেনতেন মাস্ক নয়, যেসব মাস্ক কার্যকর, কেবল সেসব মাস্কই পরতে হবে।’

মার্টিন ফিসার বলেন, তিন স্তরবিশিষ্ট সার্জিক্যাল মাস্ক ও ঘরে তৈরি সুতির মাস্ক করোনা প্রতিরোধে অনেক কার্যকর। যেসব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি মাস্ক তৈরি করে, তাদের এখন এই কার্যকারিতা পরীক্ষা করে তৈরি করা উচিত। এতে সবার উপকার হবে।