তারিক মনজুর: আধুনিক বাংলা অভিধানের বিশেষত্ব কোথায়? কিংবা এটাকে আমরা ‘আধুনিক’ বলব কেন?
জামিল চৌধুরী: কিছু শব্দ আমি দিয়েছি, যেগুলো বাজারের প্রচলিত অভিধানে নেই—কিন্তু থাকা দরকার। এই শব্দগুলো আমাদেরই হয়ে গেছে; যেমন: সেলফি, সিমকার্ড—এগুলো বাদ দিয়ে তো আমরা চলতে পারি না।
তারিক: নতুন শব্দ-সংযোজন করেছেন। আর?
জামিল: বাংলা অভিধান-এ দেখবেন কিছু প্রতিশব্দ দেওয়া থাকে। কিন্তু এখানে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। আপনাকে দুটি শব্দ দেখাই...এখানে দেখুন ‘আগুন’—‘নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে কোনো পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট তাপ ও আলো বিকিরণকারী শিখা’। আমরা যদি ‘অনল’ বলি, তাহলে তো আগুনের প্রকৃত পরিচয় হবে না।
তারিক: তাহলে প্রতিশব্দ যথাসম্ভব বর্জন করেছেন?
জামিল: বর্জন করা সম্ভব না। আবার দেখুন ‘মাছরাঙা’। আমরা কি বলব ‘পাখিবিশেষ’? এটাকে আমরা লিখেছি, ‘গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে জলাশয়ের ওপর নিশ্চল হয়ে শূন্যে ভেসে থেকে শিকারের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার পর জলে ঝাঁপ দিয়ে শিকার তুলে আনে, এমন বড় মাথাওয়ালা বিচিত্র বর্ণের উজ্জ্বল পালকবিশিষ্ট পাখি’।
তারিক: প্রথমে বললেন শব্দ-সংযোজনের কথা, তারপর বললেন সংজ্ঞার্থ দেওয়ার ব্যাপারটা। আর কোনো বিশেষত্ব?
জামিল: আরেকটা জিনিস দেখুন, আমরা এত দিন ধরে বাংলা যে বর্ণ ব্যবহার করে এসেছি, তাতে যুক্তবর্ণ অদ্ভুত আকার পায়। এই শব্দটা দেখুন—ল-য়ে ল, সঙ্গে হ্রস্ব উ-কার। যেটা সবাই ব্যবহার করে—একটার সঙ্গে অন্যটা লেগে যায়, অনেক ঝুলে যায়, উচ্চতা বেড়ে যায়। অন্য যুক্তাক্ষরগুলোও দেখুন খুব পরিষ্কার।
তারপর আরেকটা জিনিস আমাদের নজর দেওয়ার সময় এসেছে। আমরা এত দিন ধরে কয়েকটা বর্ণের অবস্থান ভুল দেখে এসেছি। যেমন: ‘চন্দ্রবিন্দু’ স্বরের ওপরে হওয়া উচিত।
তারিক: আপনার আগের বানান অভিধান—যেটি বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত, সেখানে কিন্তু ব্যঞ্জনের ওপরে চন্দ্রবিন্দু বসেছে।
জামিল: আমি তখন এই বিষয়গুলো দেখিনি। আমরা এখানে ডেফিনেশনেই বলেছি, ‘চন্দ্রবিন্দু’ অনুনাসিক ধ্বনির প্রতীকরূপে কেবল স্বরবর্ণ বা স্বরের সঙ্গে যুক্ত হয় এমন বর্ণ। তার সঙ্গে স্বর যুক্ত না হলে আপনি কিন্তু উচ্চারণই করতে পারবেন না। ঠিক তেমনি রেফ-এর অবস্থানও কিন্তু আমরা ভুল করি। এই অভিধানেও অবশ্য ভুল আছে। আমরা দ্বিতীয় সংস্করণে ঠিক করে ফেলেছি। আগে তো আমরা ‘র’ উচ্চারণ করি; তারপর বর্ণটা। আমরা যদি বলি ‘তর্ক’—ত, র, ক। রেফটা আমরা একটু বাঁদিকে সরিয়েছি। আর চন্দ্রবিন্দুটা একটু ডানদিকে রেখেছি।
তারিক: এই অভিধানের ফন্টের ব্যাপারে তাহলে বেশ ভেবেছেন।
জামিল: এটা প্রথম বাংলা ফন্ট। ১৯৮৪ সালে আমি যখন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে ছিলাম, তখন এই বাংলা ফন্ট তৈরি করি। তখন বাংলাদেশে এভাবে কম্পিউটার ব্যবহার আরম্ভ হয়নি। এটা যিনি তৈরি করেছিলেন তিনি ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় পারেননি। এই ফন্ট দেখুন, কত স্বচ্ছ এবং কত পরিষ্কার। যেমন: আমরা ল্-য়ে ম লিখব, সঙ্গে সঙ্গে এটি নিচে নেমে আসবে। ল্-এর সঙ্গে ক—শুল্ক, কিংবা ক্ষ-এর সঙ্গে ম, যেমন—লক্ষ্মী কত পরিষ্কার। বর্ণগুলো ঝুলেছে কোথাও? অথচ এটি অনেক পুরান ফন্ট।
তারিক: এই ফন্টের নাম কী?
জামিল: শহিদ লিপি।
তারিক: ফন্টটি কে বানিয়েছিলেন?
জামিল: সাইফুদ্দাহার শহীদ নামে এক প্রকৌশলী। কিন্তু এটা প্রচার পায়নি। তিনি এখন আমেরিকায় থাকেন। আমি তাঁর কাছে বলেছিলাম একটা ফন্ট তৈরি করে দিতে। আমি এখন ভাবছি, বাংলা একাডেমিকে বলব কিছু টাকা খরচ করে এই ফন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে।
তারিক: এই ফন্ট তো বলছেন অনেক পুরান। তাহলে বিন্দুযুক্ত বর্ণ যেমন: জ-এর নিচে বিন্দু, ফ-এর নিচে বিন্দু দেওয়া বর্ণগুলো কি নতুন বানানো?
জামিল: এগুলো তো আমরা নতুন দিতে শুরু করেছি। আমি অবশ্য এটা আমার আগের অভিধানে ব্যবহার করেছি। কলকাতার দে’জ থেকে আমার একটা অভিধান বেরিয়েছে—শব্দ সংকেত। সেখানে কিন্তু আছে এটা।
তারিক: দে’জ থেকে প্রকাশিত আপনার শব্দ সংকেত (২০০৯) অভিধানে আন্তর্জাতিক ধ্বনিতাত্ত্বিক বর্ণমালা বা আইপিএ ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সেটা করতে চাইলেন না কেন?
জামিল: ওখানে যে আইপিএ ব্যবহার করা হয়েছে সেটা পুরান ফন্ট। নতুন ফন্ট আমার কাছে ছিল না। হয়তো দেওয়া যেত, কিন্তু তখন কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
তারিক: আপনার নতুন অভিধানে সম্পাদনা সহযোগীদের ভূমিকা কী ছিল?
জামিল: তাঁদের বলা হয়েছিল বিভিন্ন জায়গা থেকে লিখে আনতে, ব্রিটানিকায় বা অন্য অভিধানে কী আছে তা দেখতে। এই অভিধানে আমরা কিন্তু ‘গাছবিশেষ’ বা ‘ফুলবিশেষ’ লিখে ছেড়ে দিইনি। যত দূর সম্ভব সেই গাছের বা ফুলের তথ্য সংগ্রহ করেছি—কোথায় হয়, কোন দেশে তার আদিনিবাস—এসব তথ্য যুক্ত করেছি। আমরা প্রত্যেকটা শব্দের জন্য প্রয়োজনে এনসাইক্লোপিডিয়া ঘেঁটে, রোগের জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তারপর লিখেছি।
তারিক: কীভাবে আপনি এ কাজ শুরু করলেন?
জামিল: বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান সাহেব বললেন, আপনি আমার এই কাজটা করতে রাজি আছেন কি না। তিনি ব্যবহারিক অভিধান সংস্কার করতে চেয়েছিলেন। আমি একটা নতুন অভিধান করার জন্য প্রস্তাব দিই।
তারিক: প্রতিদিন কাজ করতেন আপনারা?
জামিল: প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। প্রতিদিন, শুক্রবারসহ। সকাল সাতটার মধ্যে আমি বাংলা একাডেমিতে পৌঁছে গেছি।
তারিক: এই অভিধানের কাজ করতে গিয়ে ঘটেছে এমন কোনো মজার গল্প আছে কি না?
জামিল: না, তেমন কোনো গল্প নেই। তবে এই কাজ তো সবাই করতে চায় না। এটা একটা সাধারণ অফিসের কাজ নয়। যেমন: একজন এই কাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছিল।
তারিক: কাজ শেষ হওয়ার আনন্দে?
জামিল: কাজ আর করতে হবে না—এই আনন্দে! সে এত খুশি হয়েছিল যে সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছে...বলেছে, যাক্, বাঁচা গেল!
তারিক: আপনি তো বিজ্ঞানের শিক্ষক, ছাত্র। সম্পূর্ণ একটা ভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থাৎ অভিধানের দিকে কেন আগ্রহী হলেন?
জামিল: আমি বিজ্ঞানের ছাত্র এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর পদার্থবিজ্ঞান পড়িয়েছি।...আমি তো টেলিভিশনে ছিলাম। তখন থেকেই আগ্রহ তৈরি হয় বাংলা বানানের দিকে। ১৯৬৪ সালের ঘটনা সেটা। ১৯৮৪ সালে বানান ও উচ্চারণের ওপর একটা বই লিখলাম। ১৯৬৪ সালে, সেই ঘোর পাকিস্তান আমলে আমি সিদ্ধান্ত নিই, বাংলায় লিখতে হবে। আমি নিজে যদি না জানি, তবে ভাষাটা লিখব কীভাবে।...প্রথম বাংলা চেক আমি লিখি। তখন আমি টেলিভিশনে। সে সময় টেলিভিশনের চেকগুলো যে ব্যাংকে জমা হতো, সেখানে একজন বাঙালি অফিসার ছিলেন, তাঁকে বলেছিলাম, আমি বাংলায় চেক দেব। আপনি যদি এটা ফেরত দেন, তবে লিখে জানাবেন—বাংলায় লেখা বলে ফেরত পাঠানো হলো।
তারিক: অভিধানে শব্দের বিকল্প বানান কি রেখেছেন?
জামিল: অভিধানে বিকল্প বানান আমরা রাখিনি। আমাদের নীতিগতভাবেই সিদ্ধান্ত ছিল, বিকল্প বানান আমরা রাখব না।
তারিক: শব্দ সংকেত-এ-ও তো একই ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
জামিল: আমি নিজেই এই ফন্টটা তৈরি করিয়েছি। আমি এই ফন্টটা সম্পর্কে জানি। এটা ইউনিকোড করে বাংলা একাডেমি সবার জন্য সুলভ করে দিতে পারে।...আর যুক্তবর্ণের ব্যাপারটা শুনুন। ১৯৮৮ সালে কুমিল্লার বার্ড-এ বাংলা বর্ণ নিয়ে এক কর্মশালা হয়েছিল, সেখানে আমি ছিলাম। সেখানে প্রস্তাব ছিল, যুক্তবর্ণ স্বচ্ছ হতে হবে। আমরা অনেক বর্ণ স্বচ্ছ করেছি। আবার কিছু বর্ণ স্বচ্ছ করার ব্যাপারে সবার সম্মতি দরকার। যেমন: ক্+ষ = ক্ষ—এটা আমরা ভাঙব কি না। আবার ‘কৃষ্ণ’ লিখতে ষ্+ণ। আমি মনে করি, এগুলো ভেঙে স্বচ্ছ করা যায়। পাঠ্যবইয়ে এক রকম পড়বেন, এখানে অন্য রকম, তা কেন হবে? আমি বাংলা একাডেমিকে প্রস্তাব করব, আপনারা এই ফন্টটা নিয়ে ডেভলপ করুন।
তারিক: বিজ্ঞানের কিছু টার্ম বা পারিভাষিক শব্দ—আপনি বিজ্ঞানের ছাত্র, ফলে আপনার জন্য এগুলো দেওয়া সহজ হয়েছে। কিন্তু এমন অনেক শব্দ রয়েছে, যা বিজ্ঞানের শব্দ হয়েও অন্য রকম দ্যোতনা বা বিশেষ অর্থ জ্ঞাপন করে।
জামিল: যেমন?
তারিক: যেমন: ‘পদার্থ’ শব্দের একটা বিজ্ঞানভিত্তিক সংজ্ঞার্থ তো দেওয়া যায়। আবার আমরা যখন বলি, ‘ওর মধ্যে পদার্থ বলে কিছু নেই’—তখন তো অন্য রকম অর্থও প্রকাশ করে।
জামিল: আমরা কিন্তু দুই রকম অর্থই দিয়েছি। দুই রকম অর্থই অভিধানে অন্তত থাকা দরকার।
তারিক: সহজ বাংলা অভিধান, বাংলা উচ্চারণ অভিধান, বাংলা বানান অভিধান, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান—আমাদের হাতে এ রকম অনেকগুলো অভিধান থাকার পরেও নতুন করে আধুনিক বাংলা অভিধান প্রণয়নের প্রয়োজনবোধ করলেন কেন?
জামিল: বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এ ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখান। এই নামটাও কিন্তু তাঁর দেওয়া। আধুনিক বাংলা অভিধানেআমার ব্যক্তিগত চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে। আমি চিন্তা করেছি, একটা অভিধান কেমন হওয়া উচিত। একটা শব্দের উৎস দেওয়া উচিত, উচ্চারণ দেওয়া উচিত। তা ছাড়া আমরা যে শব্দগুলো ভুক্তিতে এনেছি, সেখানে প্রতিশব্দের বদলে সংজ্ঞার্থ দিতে চেয়েছি। আর অভিধানে ব্যবহৃত শহিদ লিপিতে ছোটখাটো কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো দূর করে এটিকে আধুনিক ফন্টে রূপান্তর করা যায়।
তারিক: অভিধানের দ্বিতীয় সংস্করণের কাজ বললেন এরই মধ্যে শেষ করে এনেছেন। সেখানে কী কী পরিবর্তন আনলেন বা সংযোজন করলেন?
জামিল: শব্দের সংযোজন খুব করিনি। এখানে ছোটখাটো কিছু ভুল ছিল, যেগুলো সংশোধন করা হয়েছে। চৌদ্দ শ-পনেরো শ পৃষ্ঠার অভিধান—কিছু ভুল থাকা অস্বাভাবিক নয়। অনেক কম সময়ের মধ্যে—এক মাসের মধ্যে করে ফেলেছি দ্বিতীয় সংস্করণের পুরো কাজ।...রেফটা যতটুকু ডানে লেখা হয়, আমি তার চেয়ে খানিক বাঁয়ে আনতে চাই। এখন ‘তর্ক’ লেখার সময় অনেকটা ডানে সরে যায় রেফ। আমি এটিকে ক-এর শুরুতেই বাঁয়ে রাখতে চাই। এটা আমি অলরেডি বদলে দিয়েছি দ্বিতীয় সংস্করণে।
তারিক: এ পর্যন্ত কতগুলো অভিধান করলেন আপনি?
জামিল: প্রথমে শুরু হয়েছে উচ্চারণ-সম্পর্কিত একটা বই দিয়ে। বানান ও উচ্চারণ নামে সেটি ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমি থেকে। তারপর ১৯৮৮ সালে উচ্চারণ অভিধান বের করি জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট থেকে। সেটাই বাংলা ভাষার প্রথম উচ্চারণ অভিধান। আমার সঙ্গে ওয়াহিদুল হক ছিলেন, আনিসুজ্জামান ছিলেন—আমরা চারজন মিলে করেছিলাম। আমার সব সময়ই অভিধানের প্রতি আগ্রহ। শুদ্ধ বাংলা লিখতে পারব, সবকিছু বাংলায় লিখব—এই তাগিদ ছিল। এরপর বাংলা বানান-অভিধান ১৯৯৪ সালে, বাংলা একাডেমি থেকে বের হয়। ২০০৯ সালে দে’জ পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত হয় শব্দ সংকেত।
তারিক: ভাষার প্রতি আপনার এই দায়বোধের বিশেষ কোনো কারণ?
জামিল: আমি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। ভাষার প্রতি আমার একটা কমিটমেন্ট আছে। আমি মনে করি, এটা যেহেতু রাষ্ট্রভাষা...বাংলা কি এতই ফেলনা? বাংলাতেও নিয়ম আছে। বাংলা ভাষা অনেক সুন্দর; এর ধ্বনিবিন্যাস ও যুক্তাক্ষর-পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত। বাংলার যে টাইপোগ্রাফি, তা-ও অনেক সুন্দর।
তারিক: আপনার ভাষা আন্দোলনে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে বলুন।
জামিল: আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রথম বর্ষে পড়ি। আমার পাশের একজন শহীদ হয়। এটা কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। কোথায় ১৪৪ ধারা; সেদিন হাজার হাজার লোকে ভেসে গেল। আমরা যখন দলবদ্ধভাবে সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছি, যখন হাইকোর্টের সামনে এসেছি, আমার পাশের একটা ছেলে—গা-ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল—হঠাৎ দেখি সে ছেলে রাস্তায় শুয়ে পড়েছে। তাকে দুজন ধরে নিয়ে গেল। তার সব জামাকাপড় লাল হয়ে গেছে। তারপর পুলিশ লাঠিচার্জ করল।
তারিক: সামনে আপনি কী কাজ করতে আগ্রহী? বা কী নিয়ে ভাবছেন?
জামিল: আমি সংস্কৃত খুব কম জানি। সেটা নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা আছে আমার।