অনেকগুলো জিলাপি। কড়কড়ে ভাজা। চিনির রসে গোসল সারল! হয়ে গেল টসটসে। টসটসে জিলাপি। রসের হাঁড়ি থেকে জিলাপি তুলল জিলাপিওয়ালা। আর বলল,
‘রাখব তোদের
কাচের ঘরে
সাজিয়ে থালায়
থরে থরে।’
তখনই ডানা গজাল একটা জিলাপির। দুটো ডানা। একটা সামনে, একটা পেছনে। আর ডানা গজাতেই, জিলাপিটা দিল লাফ। তারপর উড়তে শুরু করল। ওরে বাপরে বাপ! উড়তে উড়তে ছুটল জিলাপি। আর বলল,
‘থাকব নাকো
কাচের ঘরে
দেখব জগৎ
নয়ন ভরে।’
পেছন পেছন ছুটল জিলাপিওয়ালাও। আর ডাকল,
‘ও জিলাপি
কোথায় যাস?
আমার কাছে
একটু আস।’
জিলাপি বলল,
‘আসব নাকো
তোমার কাছে
আমার অনেক
তাড়া আছে।’
উড়তে উড়তে ছুটতে ছুটতে...
জিলাপি পেরোল মাছির বাড়ি। মাছিও ছুটল জিলাপির পেছনে। আর বলল,
‘জিলাপি ভাই
জিলাপি ভাই
আমি তোমার
সঙ্গে যাই?’
উড়তে উড়তে জিলাপি বলল,
‘আমার সাথে
কী দরকার?
কারণ খুঁজে
পাই না আর।’
তবু মাছি ছুটল। সামনে জিলাপি। তার পেছনে জিলাপিওয়ালা। তার পেছনে মাছি।
উড়তে উড়তে ছুটতে ছুটতে...
জিলাপি এল কাকের বাড়ির সামনে। পথ আগলে বলল কাক,
‘আয় জিলাপি
ঘরে আয়
ছানা তোকে
খেতে চায়।’
জিলাপি বলল,
‘নই তোমাদের
খাবার কারও
রাস্তা ছাড়ো
রাস্তা ছাড়ো।’
তবু কাক সরে না। জিলাপি নিজেই সরল। আর উড়ল। আর ছুটল। জিলাপির পেছনে জিলাপিওয়ালা। তার পেছনে মাছি। তার পেছনে কাক।
উড়তে উড়তে ছুটতে ছুটতে...
জিলাপি ঢুকল রাজা ইলাপির বাড়ি। ইলাপি তখন খেতে বসেছেন। সামনে থালা। টুপ করে থালায় পড়ল জিলাপি। জিলাপি পেয়ে সে তো খুব খুশি! নাচতে নাচতে রাজা বললেন,
‘আমি রাজা ইলাপি
খাব তোকে জিলাপি।’
জিলাপি বলল,
‘ওরা এলে
পাও না-পাও
জলদি আমায়
খাও না, খাও!’
বলতে না-বলতেই, দরজায় ঠক ঠক। দরজা খুলতেই কাক ঢুকল।
তারপর ঢুকল মাছি।
শেষে জিলাপিওয়ালা।
কাক বলল, ‘আমি জিলাপি খাব। আমার ছানাও খাবে।’
মাছি বলল, ‘আমিও খাব।’
জিলাপিওয়ালা বলল,
‘ওরে আমার জিলাপি
তোকে এবার পেয়েছি।’
রাজা এবার
কাককে দিলেন
একটা ডানা
মাছিটাকে
আরেকখানা
জিলাপিওয়ালাকে দিলেন জিলাপির দাম। তারপর বিদায় হলো সবাই।
এবার ইলাপি বললেন,
‘ও জিলাপি
জিলাপি রে
খাব তোকে
ধীরে ধীরে।
খাব তোকে
চেটে চেটে
যাবি নাকি
আমার পেটে!’
জিলাপি বলল,
‘খাও শিগগির
নইলে ভাই
পিঁপড়ে এলে
রেহাই নাই।’
রাজা তাকালেন ঘরের কোণে। আসলেই তো! জিলাপি খেতে পিঁপড়েরাও হাজির। কী আর করা!
পিঁপড়েদেরও
দিলেন একটু খুঁটে
তারপরে তা
খেলেন চেটেপুটে।
কখন আবার কে আসে, তার কি ঠিক আছে!