দেখা-অদেখা হুমায়ূন আহমেদ

নুহাশপল্লীতে বিশাল দাবা ছকের মাঝখানে হ‌ুমায়ূন আহমেদ। ছবি: নাসির আলী মামুন/ফটোজিয়াম
নুহাশপল্লীতে বিশাল দাবা ছকের মাঝখানে হ‌ুমায়ূন আহমেদ। ছবি: নাসির আলী মামুন/ফটোজিয়াম

পরনে চেক লুঙ্গি। পায়ে চপ্পল। গায়ে জড়িয়েছেন চাদর। শীতের মিষ্টি রোদ খেলা করছে চারপাশে। ছাদে শুকোতে দেওয়া রংবেরঙের কাপড়চোপড়ের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে তাঁর মুখ। হুমায়ূন আহমেদ!
অথবা কোনো এক বইমেলার মৌসুম। হাওয়াই শার্ট গায়ে তিনি হেঁটে চলেছেন হনহনিয়ে। চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা। ভাবুক দৃষ্টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে চেনা হুমায়ূন! অথবা বিশাল দাবার ছকের ওপরে আনমনা শুয়ে আছেন তিনি। না, এসব দৃশ্য আর সত্যি হবে না কোনো দিন। আর হবে না বলেই নাসির আলী মামুনের ক্যামেরায় বন্দী এসব আপাত সাধারণ দৃশ্য অসাধারণ হয়ে ওঠে। প্রয়াত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে সদ্য প্রকাশিত ছবির অ্যালবাম অনন্ত জীবন যদি। বইমেলায় সশরীরে হুমায়ূন আহমেদ নেই। কিন্তু অন্যপ্রকাশের এই বইয়ের পুরোটাজুড়ে তিনি হাজির নানারূপে। কখনো দখিন হাওয়ার বাসভবনে। কখনো নুহাশপল্লীর অবসরে। কখনো লেখার মুহূর্তে, কখনো পরিবার-পরিজনের মাঝে।

অনন্ত জীবন যদি বইয়ের প্রচ্ছদ
অনন্ত জীবন যদি বইয়ের প্রচ্ছদ

হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে এই ছবির অ্যালবাম তৈরির কাজটি নাসির আলী মামুন শুরু করেছিলেন ২০০৫ সালে। অ্যালবামের কাজ শুরুর অভিজ্ঞতা তিনি বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন এভাবে, ‘অবিলম্বে হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে নুহাশপল্লীতে যাওয়ার সুযোগ হয়। তাঁর প্রচণ্ড ভালো লাগার জায়গাটিতে সেদিন প্রচুর ছবি তুলে মনে হয়, তিনি আগামী দিনগুলোয় অনেক সময় দেবেন...।’
আলোকচিত্রীর এই আশা শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি সত্যি হয়নি। আগ্রহ থাকার পরও শত ব্যস্ততায় হুমায়ূন আহমেদ যথেষ্ট সময় দিতে পারেননি ক্যামেরার সামনে। সেই আক্ষেপ আছে আলোকচিত্রীর কথায়, ‘ছবির বইকে ছবির মতো সরব হতে হয়। এটি যেন ছোটগল্পের মতো ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’। আলোকচিত্রীর অপূর্ণতা থাকবে। কিন্তু তবুও এসব ছবি ‘অমূল্য’ হয়ে থাকবে সব সময়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান যেমন ছবির এই অ্যালবাম নিয়ে বলেছেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র-বৈশিষ্ট্য এতে প্রকাশিত হয়েছে যথার্থভাবে। বইটি ইতিহাসের দলিল হিসেবে মূল্যবান।’