শহরে ছিল এক পাথরের সড়ক।
চলে যাওয়া এক গাড়ির চাকা একটা পাথর অন্য পাথর থেকে আলাদা করে দিল। সেই পাথর মনে মনে ভাবল, ভালোই হলো। এই একই রকম পাথরগুলোর সঙ্গে আর থাকা উচিত নয়। তার চেয়ে ভালো অন্য কোথাও গিয়ে থাকি।
একটা ছেলে এল।
সে পাথরটা হাতে তুলে নিয়ে চলতে শুরু করল।
পাথর মনে মনে বলল, বাহ! আমি চাইছিলাম পথ চলতে! সে-ও কপালে জুটে গেল...শুধু চাইতে জানতে হয়! ছেলেটা পাথরকে একটা বাড়ির দিকে ছুড়ে দিল।
পাথর মনে ভাবল, আমি হাওয়ায় উড়তে চেয়েছিলাম, সেই ইচ্ছাও পুরো হলো! শুধু চাইতে যা দেরি! পাথর গিয়ে খট করে লাগল এক জানালার কাচে।
জানালার কাচ ঝনঝন করে ভেঙে যেতে যেতে বলল, বদমাশ! তোর মতলব কী?
পাথর পাল্টা বলল, আমার পথ থেকে সরে গিয়ে ভালোই করেছ! আমার পথের সামনে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াক, তা আমি সহ্য করি না। সবকিছু আমার মর্জিমাফিক হতে হবে। এই আমার নীতি!
এই বলে পাথর গিয়ে পড়ল এক নরম বিছানায়।
বিছানায় পড়ে পাথর মনে মনে ভাবল, অনেক লম্বা সফর হয়েছে। এখন দুদণ্ড বিশ্রাম করে নিই।
এমন সময় ঘরে ঢুকল চাকর। দেখল বিছানায় পাথর পড়ে আছে। পাথরকে বিছানা থেকে তুলে সে ছুড়ে ফেলল বাইরে রাস্তায়। রাস্তায় পড়েই পাথর তার মতো অন্য পাথরগুলোর উদ্দেশে বলে উঠল, ভাইয়েরা, খোদা তোমাদের মঙ্গল করুন। আমি এইমাত্র এক বিশাল প্রাসাদ থেকে এখানে এলাম। প্রাসাদের শানশওকত আমার একেবারে ভালো লাগল না। আমি তো তোমাদের কাছে ফিরে আসার জন্য অস্থির হয়ে ছিলাম। তাই সব ছেড়ে ফিরে এলাম।