ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় প্রথমা প্রকাশনের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রথমা প্রকাশনের ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে ৭৩তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রথমা প্রকাশনের সদ্য প্রকাশিত ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের কেন্দ্রস্থলে বিশাল পরিসরের বইমেলা শুক্রবার থেকে সাধারণ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। আজ আন্তর্জাতিক বইমেলার ৬ নম্বর হলে বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের প্যাভিলিয়নে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে জার্মানি সফররত সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বইটির লেখক সরাফ আহমেদ, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও প্রবাসী বাঙালিরা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করা হয়। ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছিলেন বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে। বেলজিয়াম, জার্মানি, ভারত ও ব্রিটেনে কীভাবে কেটেছিল তাঁদের সেই সব দুঃসহ দিন, তারই অনুসন্ধানী ও রুদ্ধশ্বাস বিবরণে ঠাসা ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ বইটি। দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক ধরে জার্মানিতে বসবাসরত সাংবাদিক সরাফ আহমেদ তুলে এনেছেন সেই সময়ের অজানা নানা তথ্য।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি ও সাংবাদিক মিনার মনসুর এবং বইটির লেখক সরাফ আহমেদ।

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, প্রথাগত লেখক এবং গবেষক না হয়েও একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক অদম্য ইচ্ছাশক্তি, সৃজনশীলতা আর পরিশ্রম দিয়ে কতটা অসাধ্য সাধন করতে পারেন, তার উদাহরণ এই বই।

রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এই জার্মানিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের দুঃসময়ের অজানা ইতিহাস বইটির প্রধান উপজীব্য, যা আগামী দিনে গবেষকদের জন্য মূল্যবান দলিল হিসেবে কাজ করবে।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর দুই কন্যাকে কতটা দুঃখ ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল, তা এই বই পড়ে জানা যাবে।
লেখক সরাফ আহমেদ বলেন, জার্মানিতে আসার কারণেই প্রাণে বেঁচে যান দুই কন্যা।

তবে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ১০টি দিন তাঁদের কাছে হয়ে উঠেছিল যেন ১০ বছরের সমান। তাঁরা কীভাবে কোথায় ছিলেন, কারাই-বা সেই রুদ্ধশ্বাস সময়ে বিপদের সাথি হয়েছিলেন, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংবাদপত্র, জার্মানির সেই সময়কার রাজনীতিক বা জার্মানরা বিষয়টি কীভাবে দেখেছিলেন, সেই সব ঘটনা নতুন প্রজন্ম ও গবেষকদের কাছে তুলে ধরার তাগাদা থেকেই বইটি লেখা। বঙ্গবন্ধুপ্রেমী সবাইকে বইটি পড়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মেলায় বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকাশনার বঙ্গবন্ধুবিষয়ক চার শ ছবির বই প্রদর্শিত হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মিডিয়া সেল প্রধান নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, এই বছরের আন্তর্জাতিক বইমেলায় বিভিন্ন দেশের বইবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় প্রতিদিন বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আসছে।

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জার্মানিপ্রবাসী হুমায়ূন কবীর, হাসিব মাহমুদ, হামিদুল খান, মহুয়া কবীর, মাহজাবিন আহমেদ, হাবিবউল্লা বাবুল, হাবিবউল্লা বাহার, লিটন খান, শওকত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।