
মেয়েটি শর্ত দিয়ে রেখেছিল যে তারা প্রতিদিন অন্তত একবার পরস্পরকে বলবে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
মহানন্দে মেনে নিয়েছিল ছেলেটি। এমন মধুর শর্ত!
হঠাৎ মেয়েটি একদিন বলল, ‘তুমি আমাকে ভালোবাসো কি না তার প্রমাণ দাও!’
ছেলেটি অবাক, ‘ভালোবাসার আবার প্রমাণ কী! সেটা কীভাবে দিতে হয়?’
‘দিতে হয়। তুমি দেবে কি না বলো?’
‘তুমি চাইলে দেব।’
‘তাহলে আমাকে পারিজাত ফুল এনে দাও।’
ছেলেটি এ কথা অন্তত জানত যে কবিরা অজস্র গান এবং কবিতায় ফুল হিসেবে পারিজাতের কথা লিখলেও উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত মর্ত্যের কোনো ফুলকেই পারিজাত বলে চিহ্নিত করেনি। হতভম্ব অবস্থায় তার মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়, ‘তা কীভাবে সম্ভব?’
মেয়েটি তার সবচেয়ে তীক্ষ্ণ এবং অব্যর্থ হৃদয়ভেদী ভ্রুভঙ্গি করে বলে, ‘ভালোবাসা থাকলে সম্ভব।’
এই রকম ভ্রুর ওঠানামা দেখলে ছেলেটির এমনিতেই স্বর্গ-পাতাল একাকার হয়ে যায়। সে তৎক্ষণাৎ দ্বিধাহীন বলে, ‘এনে দেব পারিজাত ফুল!’
মেয়েটি বলে, ‘শুভস্য শীঘ্রম। এসো, আমার হাতে একটা চুম্বন এঁকে বেরিয়ে পড়ো পারিজাতের সন্ধানে।’
কারও কাছে জিজ্ঞেস করে যে কোনো উত্তর পাওয়া যাবে না, এ কথা ছেলেটি জানে। এমনকি তাদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রটিও জানবে না পারিজাতের সন্ধান। কারণ, বিসিএস গাইড বইতে পারিজাতের কথা লেখা নেই। বিষণ্ন ছেলেটি তবু পথে বেরিয়ে পড়ে। কোনো বাহনে উঠলে তো তাকে জানাতে হবে গন্তব্যস্থল। সে কী বলবে বাহনচালককে? তাই তার কোনো বাহনে ওঠা হয় না। এই শহরে ঢোকার যেমন অসংখ্য পথ, বেরিয়ে যাওয়ার পথও তেমনই অনেক। সে শহর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য অনির্দিষ্ট একটা পথ ধরে চেনা ভূগোলকে অচেনা বানিয়ে হাঁটতে থকে। তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া পথচারীদের কেউ কেউ তাকে চিনতে পারে। তারা কুশলাদি জানতে চায়, জানতে চায় এই দিকে ছেলেটির গন্তব্য। কেউ কেউ তো সৌজন্যবশত এক কাপ চা খেয়ে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানায়। সে পাশকাটানো গোছের উত্তর দেয়। তারপর কোথাও না থেমে এগিয়ে চলে।
হঠাৎ সবিস্ময়ে তার মনে হয়, সে টিয়া পাখিদের রাজ্যে এসে উপস্থিত হয়েছে। তারপর সচকিত হয়ে দেখতে পায়, দলে দলে তরুণী-যুবতীর দল টিয়া রঙের শাড়ি পরে তার পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে। টিয়া রঙের শাড়ি আর সোনালি পাড়। বেখেয়ালে থাকা ছেলেটি প্রথমে হকচকিয়ে যায় একই রঙের শাড়ি পরা দলে দলে তরুণীদের কলকলিয়ে হেঁটে যেতে দেখে। এরপরেই তার মনে হয়, এরা নিশ্চয়ই পিটিআইয়ের প্রশিক্ষণার্থী। সামনেই তাহলে নিশ্চয়ই শিক্ষিকা প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়। হ্যাঁ। ভালো করে তাকিয়ে সে ঠিকই চিনতে পারে। দেয়ালজুড়ে শিক্ষা যে কত মহীয়ান বস্তু, তা প্রচার করার জন্য নানা রকম বাণী। তখন সচকিত হয়ে ছেলেটির মনে পড়ে, আর কিছুদূর এগোলেই তো পড়বে চাঁদমারী মাঠ। সে নিজেকে তৎক্ষণাৎ দেখতে পায় ছোটবেলায়। হঠাৎ হঠাৎ কোনোদিন শহরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে অনবরত গুড়ুম গুড়ুম শব্দ আসতে থাকলে তারা অবাক হতো, একটু ভীতও। কিন্তু তার সব মুশকিলের আসান মা জানিয়ে দিত যে চাঁদমারীর মাঠে আজ বন্দুক ছোড়ার ট্রেনিং হচ্ছে। স্কুলের একটু ওপরের ক্লাসে ওঠার পরে সে তো অনেক দিনই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কিংবা টিফিনের ঘণ্টায় চতুরতর কোনো সহপাঠীর সঙ্গে দেখতে এসেছে চাঁদমারী। অর্ধ একটা উপবৃত্ত তৈরি করে দাঁড়িয়ে থাকা বিরাট পাঁচিলের গায়ে নানা রকম দাগ কেটে সেই দাগ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে যাচ্ছে পাঁচিলের দিকে মুখ করে থাকা খাকি যুবকের দল। তাদের কাছে তখন স্বপ্নের মতো মনে হতো চাঁদমারী। বন্দুক হাতে থাকা পেশল শরীর আর ছাঁটা চুলের যুবকদের মনে হতো রূপকথার বীরপুরুষ। ইচ্ছা হতো নিজেরাও একদিন...।
এরপরেই তো থাকার কথা লাশকাটা ঘর। চাঁদমারীর মাঠ পেরিয়ে আর কিছুদূর হাঁটলেই পাওয়া যায় সেই পরিত্যক্ত ঘর। এই প্রান্তে আগে শহরের শেষ সীমা ছিল এটাই।
কিন্তু লাশকাটা ঘর পেরিয়েও রাস্তাকে আরও দক্ষিণে এগিয়ে যেতে দেখে ছেলেটিও সেই রাস্তা ধরে হাঁটা অব্যাহত রাখে। মনে করার চেষ্টা করে। হ্যাঁ। এবার সাঁওতাল পল্লি পড়ার কথা।
পথ চিনতে পেরে সে অস্বস্তিতে পড়ে যায়। কেননা চেনা পথ তো তাকে পারিজাত ফুলের কাছে নিয়ে যাবে না। সে এমন কোনো চেনা পথের কথা জানে না, যে পথ পারিজাতের কাছে যেতে পারে। সে অচেনা পথে যাওয়ার কথা ভাবে। তখনই খেয়াল করে, সাঁওতাল পল্লিতে ঢোকার আগে একটা জংলাপথ বাঁদিকে চলে গেছে ঝোপঝাড়ের গন্ধ মাখতে মাখতে। সে সেই মুহূর্তে জংলাপথে ঢুকে পড়ে এবং জোর পায়ে চেনা জগৎকে ছেড়ে এগিয়ে যেতে থাকে।
তারপর সে হাঁটতে থাকে।
হাঁটতে থাকে।
হাঁটতেই থাকে।
হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যার ছায়া নেমে এলে তার প্রেমিকার কথা মনে পড়ে। সন্ধ্যার ছায়া নেমেছে, অন্ধকার নামতে আরও কিছুটা দেরি। এই সময়টা তার প্রেমিকার সান্ধ্যকালীন প্রসাধনলগ্ন। প্রেমিকাকে ছেড়ে সে কোথায় বিজন পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভাবতে গিয়েই ছেলেটির চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সে চোখ মোছে। কিন্তু চোখ আবার ঝাপসা হয়। আবার মোছে, কিন্তু আবার দুই চোখ ঝাপসা হয়। সেই পানিভাসা চোখের মণি দিয়ে সে দেখতে পায় একজন লোক তাকে ডাকছে। চোখের ভ্রম! কিন্তু তবু এবার সে উত্তমরূপে চোখ মোছে। তারপর দেখতে পায়, সত্যিই একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। আর সেই লোকের ঠিক পেছনেই,
অনেক আগের যুগে যেমনটি থাকত, সেই রকম একটি শহরের প্রবেশ-তোরণ।
সে কিছুটা দ্বিধা নিয়েই লোকটার কাছে যায়। এই রকম সান্ধ্যছায়ায় কারও মুখের রেখা দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই লোকটার মুখ নিরীক্ষণ করা হয়ে ওঠে না তার। কিন্তু লোকটার কাছে যেন সে কতকালের চেনা। লোকটা তার নাম ধরে ডাকে। বলে, ‘অভিশপ্তদের নগরীতে স্বাগতম!’
২.
নগরতোরণেও বড় করে লেখা ‘অভিশপ্তদের নগরী’।
ছেলেটি ভয় পাচ্ছিল এই রকম নামের একটি জায়গাতে ঢুকতে। তাকে স্বাগত জানানো লোকটি তার মনের কথা বুঝতে পেরে বলে, ‘ভয় নেই। এখানে প্রবেশ করে কেউ শাপগ্রস্ত হয় না। বরং শাপগ্রস্ত মানুষেরাই এখানে বাস করে। এসো যুবক!’

ছেলেটি ভেতরে ঢুকে মুগ্ধই হয়ে যায়। দিনের আলো এখন নেই। কিন্তু রাতের জন্য কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা যথেষ্ট। সেই আলোতে ছেলেটি যতটুকু দেখতে পায়, তাতেই সে বুঝে নিয়েছে এমন ছিমছাম জনপদ আগে কোনোদিন দেখা হয়নি তার। ছিমছাম এবং জীবন্ত। মানুষজনের মুখের দিকে তাকালে বোঝা মুশকিল যে তারা অভিশপ্ত। এমনকি তাকে যে লোকটি স্বাগত জানিয়েছে, এখন তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেই লোকটিকে পর্যন্ত খুবই দীপ্তিমান দেখাচ্ছে। ছেলেটি তাই প্রশ্ন না করে পারে না, ‘এটিকে অভিশপ্তদের নগরী বলা হচ্ছে। কিন্তু কোনো মানুষকেই তো অভিশপ্ত মনে হচ্ছে না। সবাই সুস্থ, প্রাণবন্ত, হাসিখুশি। এই ভুল নাম কে দিয়েছে তোমাদের?’
‘ভুল নয়। আমরা আসলেই অভিশপ্ত।’
‘বুঝলাম না। কীভাবে তোমরা অভিশপ্ত হলে? কে তোমাদের অভিশাপ দিয়েছে?’
‘কেউ অভিশাপ দেয়নি। আমরা নিজেরা নিজেরাই অভিশপ্ত হয়ে গেছি।’
‘এমন কথা কোনোদিন শুনিনি! তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে নিজেরা নিজেরা অভিশপ্ত হওয়া খুব মজার ব্যাপার।’
হেসে ফেলে লোকটা বলে, ‘সত্যিই! মজারই ব্যাপার।’
‘একটু খুলে বলবে ভাই!’
‘বলব। তবে তার আগে তোমার বিশ্রাম দরকার। পরিচ্ছন্ন হওয়া দরকার। খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। এই তো আমরা অতিথিশালায় চলে এসেছি প্রায়। তুমি বিশ্রাম করো। কথাবার্তার জন্য তো সারা রাতই পড়ে রয়েছে। আজ রাতে তো আর তুমি পথে বেরিয়ে পড়তে পারবে না।’
‘আচ্ছা, একটা কথার উত্তর দাও।’
‘কী কথা?’
‘তুমি এমনভাবে দাঁড়িয়ে ছিলে যেন জানতে যে আমি এই পথ দিয়ে আসব। তুমি কি সত্যিই জানতে?’
‘না। জানতাম না। কিন্তু মাঝে মাঝেই সূর্য ডোবার পরেও মানুষ এই পথ দিয়ে যায়। তারা তো জানে না এই নগরীর পরে আর রাতের কোনো আশ্রয় জুটবে না।’
‘কেন? এই নগরীর পরে আর আশ্রয় পাওয়া যাবে না কেন?’
‘কারণ, এর পরেই শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সেই কারণেই আমরা কেউ-না-কেউ গোধূলির সময় থেকে বেশ রাত পর্যন্ত রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকি। যাতে পথিকের কষ্ট লাঘব করা যায়।’
ছেলেটি আরও বিস্মিত, ‘বলো কী! এরপরে শুধু পাহাড়! কিন্তু কই? কোনো ভূগোল বই বা মানচিত্রে তো তেমনটি বলা নাই।’
‘ভূগোলে বা মানচিত্রে আর কতটুকু থাকে!’
ছেলেটির তর সইছিল না। তার মনের মধ্যে অসংখ্য প্রশ্ন আঁকুপাঁকু করছে। সে খুব তাড়াতাড়ি প্রক্ষালন সারে। অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্যবস্তুও তাড়াহড়া করে খেয়ে নেয়। তারপরেই প্রশ্ন করে, ‘এবার বলো কীভাবে তোমরা অভিশপ্ত হলে?’
লোকটা মৃদু হাসে, ‘বলব। অবশ্যই বলব। তবে তার আগে তোমার কথাও আমি শুনতে চাই। তুমি কেন এই এলাকায় এসেছ?’
ছেলেটি কোনো দ্বিধা না করে তার প্রেমিকার কথা, পারিজাত ফুল আনার জন্য পথে বেরিয়ে পড়ার কথা খুলে বলে।
শুনে লোকটা যেন নিজেকেই নিজে বলে, ভালোবাসার জন্যে মানুষ কত কী-ই না করতে পারে! এভাবে ভালোবাসতে পারে বলেই তো মানুষের নাম মানুষ।
ছেলেটি তাকিয়ে আছে ব্যগ্র কৌতূহল নিয়ে লোকটার মুখের দিকে, ‘কীভাবে তোমরা অভিশপ্ত হলে?’
‘মানুষের ভেতরটা দেখতে পাওয়া শিখে ফেলেছি আমরা। যে মুহূর্তে মানুষের ভেতরটা দেখতে পাওয়া শিখলাম, সেই মুহূর্ত থেকেই আমরা অভিশপ্ত।’
এমন একটা উত্তর শুনতে হবে, ধারণাও করেনি ছেলেটি। সে বিহ্বলের মতো উচ্চারণ করে, ‘মানুষের ভেতরটা দেখলেই অভিশপ্ত হতে হয়!’
‘হ্যাঁ। কারণ, যখন তোমার প্রিয়জন তোমাকে ভালোবাসার কথা বলছে, কিন্তু তুমি দেখতে পাচ্ছ যে তার ভেতরে ভালোবাসার কোনো জায়গা নাই, আছে কেবল লাভ-ক্ষতির হিসাব, তখন তো তুমি বিশ্বাস হারাবে মানুষের ওপর থেকে।’
‘ঠিক।’
‘আর মানুষের ওপর থেকে বিশ্বাস হারানোর চেয়ে বড় অভিশাপ আর কী আছে! যখন তুমি দেখতে পাবে প্রিয়জন তোমার জন্য যেসব প্রেমবাণী উচ্চারণ করছে, সেগুলো নেহাতই মিথ্যে, তখন প্রথমে তোমার হৃদয়কে দখল করবে মৃত্যুর চেয়েও বড় বেদনা, তারপর আসবে ক্ষোভ, তারপর আসবে নিজেকে বঞ্চিত এবং প্রতারিত ভাবার পালা, তার সঙ্গে সঙ্গে আসবে ক্রোধ। কিন্তু নির্মম বাস্তবতা তো তোমাকে রেহাই দেবে না। তোমার জেনে যাওয়া সত্য তখন প্রতিমুহূর্তে তোমাকে মৃত্যুযন্ত্রণা উপহার দেবে। তখন তুমি কী করবে এই রকম অঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে?’
‘ওরেব্বাপরে, আমাকে অঙ্কের কথা বলো না। আমি অঙ্ককে খুব ভয় পাই। অঙ্ক বুঝি না।’
‘অঙ্ক বোঝো না বলেই তো তুমি এমনভাবে ভালোবাসতে পারো।’
‘এ আবার কেমন কথা!’
‘যে মেয়ের ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে তুমি পারিজাত এনে তার হাতে তুলে দেবে বলে জীবনপণ করে বেরিয়ে পড়েছ, তুমি কি ঠিক জানো সে-ও তোমাকে ভালোবাসে?’
‘অবশ্যই ভালোবাসে।’
‘অঙ্কশাস্ত্র বলে, ভালোবাসলে সে তোমাকে এমন বিপদের মধ্যে পাঠাত না।’
প্রতিবাদ করতে গিয়েও থমকে যায় ছেলেটি—তাই তো!
ভোরের আগেই বিদায় নেয় ছেলেটি। নিজের জনপদে ফিরছে সে, কিন্তু মেয়েটির কাছে নয়। তবু সে একবার দেখা করতে যায় মেয়েটির সঙ্গে। তার হৃদয় ভেঙে গেছে অঙ্কের হিসাব জেনে।
কিন্তু বাড়ির দরজায় পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে যেন তার বুকের ওপর উড়ে এসে আছড়ে পড়ে তার প্রেমিকা। তার চেহারা শুকিয়ে কাঠ, চোখের কোলে কালি, কাঁদতে কাঁদতে ফুলে গেছে চোখের পাতা। সে গভীর আবেগে চুমু খায় ছেলেটিকে, আর বলে, ‘তুমি এসেছ আমার প্রাণ! তুমি যে মুহূর্তে শহর ছাড়লে তখন থেকে মনে হচ্ছিল আমার বুক শূন্য হয়ে গেছে, তুমি যাওয়ার পর থেকে আমি কেবল নিজেকে অভিশাপ দিয়েছি অবিরাম।’
ছেলেটি আস্তে আস্তে বলে, ‘কিন্তু আমার তো পারিজাত ফুল আনা হলো না।’
‘চাই না চাই না আমি পারিজাত। চাই না কোনোকিছু। তুমি শুধু আমাকে ছেড়ে কোত্থাও যাবে না, এটুকুই চাই।’
ছেলেটি গভীর স্বস্তিতে চোখ বোজে—অঙ্কশাস্ত্র হেরে গেছে ভালোবাসার কাছে।