'হয় আমি কেউ নই, অথবা আমিই একটা জাতি'

>

‘সাগরই হচ্ছে সেই মহাকাব্য, যার সংস্পর্শে এলে আগের লেখা কবিতার প্রতিটি পঙ্‌ক্তি মুছে যায়’ লিখেছিলেন ডেরেক ওয়ালকট। নোবেলজয়ী এই কবি মারা গেছেন সম্প্রতি

ডেরেক ওয়ালকট (২৩ জানুয়ারি ১৯৩০-১৭ মার্চ ২০১৭)
ডেরেক ওয়ালকট (২৩ জানুয়ারি ১৯৩০-১৭ মার্চ ২০১৭)

জায়গাটি আমাদের খুবই চেনা—ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চেনা, ওই ক্রিকেটের সুবাদে। কিন্তু এই নামে কোনো দেশ নেই। ক্রিকেটের কথা ছেড়ে দিলে বাইরের বিশ্বের মানুষ এই জায়গাটাকে জানে ক্যারিবিয়া বলে। প্রায় ২৮টি দ্বীপ-জাতির বসবাস এখানে। ওই দ্বীপগুলোরই একটি সেন্ট লুসিয়া। সেখান থেকেই বিশ্বসাহিত্যে পদার্পণ ঘটেছিল তাঁর। ১৯৯২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলে আমরা জেনে যাই, ছোট্ট হলেও ওই দ্বীপে একজন মহান কবি আছেন—ডেরেক ওয়ালকট। ওয়ালকটই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাহিত্য বলে কিছু নেই; ক্রিকেটে যেমন সাহিত্যেও তেমনি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাহিত্য বলে একটা কথা চালু আছে। সেই সাহিত্য ওই দ্বীপদেশগুলোরই সমগ্র সাহিত্য। জ্যামাইকা ও ত্রিনিদাদে জাতীয় সাহিত্য বলে ধীরে ধীরে একটা কিছুর চর্চা হচ্ছে। কিন্তু এই চর্চা হোক বা না হোক, ‘ক্যারিবীয় অভিজ্ঞতা’ বলে ভিন্ন একধরনের অভিজ্ঞতা এই অঞ্চলের লেখকদের হয়ে থাকে, যার প্রতিফলন ঘটে তাঁদের লেখায়। কথাগুলো বলেছিলেন ওয়ালকট।

ওয়ালকট ওই দ্বীপাঞ্চল সাহিত্যের এই যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, তার সবচেয়ে চমকপ্রদ, নজরকাড়া প্রতিফলন ঘটে তাঁর নিজের লেখায়। ওয়ালকটের বয়স যখন অল্প, তখন তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। ছাত্র হিসেবে ছিলেন বেশ মেধাবী। ‘সেই অল্প বয়সেই বুঝতে পারছিলাম, আমি একজন লেখক হতে চলেছি,’ বলেছেন তিনি। পরিণত বয়সে ওয়ালকটই হয়ে ওঠেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কালো আর মিশ্র বর্ণের মানুষের কণ্ঠস্বর। ওই অঞ্চলের বিশেষ ভূপ্রকৃতি, মানুষের মানসগঠন, জীবনযাপন আর ভাগ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়ে তাঁর সাহিত্য।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ব্রিটিশ আর ফরাসিদের দ্বারা শাসিত থাকার পরে ১৯৭৯ সালে স্বাধীন হয় সেন্ট লুসিয়া। স্বাভাবিকভাবেই বহুভাষী বহু সংস্কৃতি বহু ধর্মের উদারনৈতিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছিল দ্বীপটি, আফ্রিকার সঙ্গে যার সম্পর্ক নিবিড়। কেননা, ওই আফ্রিকা থেকেই তো একদিন দাস হয়ে এই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর পূর্বপুরুষেরা। ওয়ালকটের যত লেখালেখি তার সবই এই ক্যারিবীয় আত্মপরিচয়ের পটভূমিতে রচিত। ‘ক্যারিবিয়া এই অঞ্চলের সব মানুষের অভিজ্ঞতার বিমিশ্রণ,’—আফ্রিকীয়, ভারতীয়, চীনা, ডাচ, ফরাসি—সবার। এভাবেই গড়ে উঠেছে এর সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়।

ওয়ালকট কবিতা লিখতেন ইংরেজি ভাষায়, কখনো ক্যারিবিয়ার বিমিশ্র ক্রেয়লে। ইংরেজি ভাষা তিনি এতটাই ভালো জানতেন যে পাঠকেরা তো বটেই, সমকালের শ্রেষ্ঠ ইংরেজ কবিকুল, যেমন সিমাস হিনির মতো কবিও তাঁকে ইংরেজি ভাষার একজন মহান কবি বলে আখ্যায়িত করেছেন। সব মিলিয়ে কুড়িটির মতো কবিতার বই প্রকাশ করেন ওয়ালকট। এগুলোর ভাষিক ঐশ্বর্য, ভূপ্রকৃতির বিশিষ্ট উপস্থাপনা আর জনমানুষের কথা চমৎকারভাবে উঠে আসার কারণে, কবিতা রচনায় তিনি পেয়েছিলেন শিখরস্পর্শী সাফল্য।

এপিকতুল্য কবিতার বই ওমেরস প্রকাশের পর ব্রিটেন ও আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ডেরেক ওয়ালকটের কবিপরিচয়
এপিকতুল্য কবিতার বই ওমেরস প্রকাশের পর ব্রিটেন ও আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ডেরেক ওয়ালকটের কবিপরিচয়

নোবেল বক্তৃতাতেই তিনি বলেছিলেন, ক্যারিবিয়ায় তাঁর জন্য জন্মগ্রহণ করা ছিল দারুণ ভাগ্যের ব্যাপার। একটা সজীব ভাষা আর প্রাণবন্ত মানুষ সারা জীবন তাঁর কবিতা রচনার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। অঞ্চলটা তাঁর ‘নতুন পৃথিবী’—হয়তো একে ইডেন বা স্বর্গোদ্যান বলা যাবে না, কিন্তু ‘লেখকের স্বর্গ’, যে এই পৃথিবীর মানুষ তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে চায়। কবিতার পর কবিতায় এরই নান্দনিক সৃষ্টিশীল উপস্থাপনা ঘটিয়ে গেছেন ওয়ালকট।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ টোয়েন্টি ফাইভ পোয়েমস-এর প্রকাশক ছিলেন ওয়ালকট নিজেই। মায়ের অর্থানুকূল্যে যখন এটি প্রকাশ করেন, তখন তাঁর বয়স উনিশ। তবে তিনি প্রথম পাঠকদের নজরে আসেন ইন এ গ্রিন নাইট (১৯৬২) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে। এরপর প্রকাশিত হয় দ্য কাস্টঅ্যাওয়ে অ্যান্ড আদার পোয়েমস (১৯৬৫), দ্য গাল্‌ফ (১৯৭০) নামের দুটি কবিতার বই। তবে তাঁর পরবর্তী কবিতার বই অ্যানাদার লাইফ (১৯৭৩) ক্যারিবীয় সংস্কৃতির চমকপ্রদ উপস্থাপনা আর আত্মজৈবনিক অনুষঙ্গের কারণে পাঠকপ্রিয়তা পায়, সমালোচকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয় সি গ্রেপ্‌স (১৯৭৬), দ্য স্টার-অ্যাপল কিংডম (১৯৭৯), ফরচুন ট্রাভেলার (১৯৮১), মিডসামার (১৯৮৪) ও আরকানসাস টেস্টামেন্ট (১৯৮৭) নামের পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ। তবে যে কবিতার বইয়ের জন্য তিনি বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছিলেন, সেটি হলো ওমেরস (১৯৯০)। এপিকতুল্য এই শেষের বইটি প্রকাশের পর ব্রিটেন ও আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তাঁর কবিপরিচয়। এর পরও তিনটি উল্লেখযোগ্য কবিতার বই বেরিয়েছে তাঁর—দ্য বাউন্টি (১৯৯৭), দ্য প্রোডিগাল (২০০৪) ও হোয়াইট ইগ্রেটস (২০১০)।

ওয়ালকটের জন্মভূমি সেন্ট লুসিয়া দ্বীপের অবস্থান ক্যারিবিয়ার একটা বিশেষ জায়গায়। এর একদিকে আটলান্টিক মহাসাগর, অন্যদিকে ক্যারিবীয় সাগর। এই সাগরকে ওয়ালকট বলেছেন ‘দ্য থিয়েটার অব দ্য সি’ বা সাগরের রঙ্গমঞ্চ। তাঁর কবিতায় এই দ্বীপের প্রভাব অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁকে অনেকেই তাই ‘দ্বীপাঞ্চলের কবি’ আখ্যা দিয়েছেন। এই দ্বীপই হচ্ছে ওয়ালকটের সেই নতুন পৃথিবী, যার কথা তাঁর অসংখ্য কবিতার ছত্রে ছত্রে প্রকাশ পেয়েছে। ওমেরস-এ ক্যারিবিয়ার এই বিশেষ অঞ্চল সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সাগরই হচ্ছে সেই মহাকাব্য, যার সংস্পর্শে এলে আগের লেখা কবিতার প্রতিটি পঙ্‌ক্তি মুছে যায়, আবার নতুন করে সাগরের ফেনায় ফেনায় পঙ্‌ক্তিগুলো রচনা করার ইচ্ছা জাগে।’ ওয়ালকট এভাবেই হয়ে উঠেছেন প্যান-ক্যারিবীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রবক্তা ও কবি। সাঁ-ঝ্যঁ পার্স, এইমে সেজার, সিএলআর জেমসের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে তিনি যুক্ত বলে মনে করতেন। এরাই, আলেহো কার্পেন্তিয়ার যেমন বলেছিলেন, ক্যারিবীয় বিভিন্ন অনুষঙ্গের ‘নামকরণ’ করেছিলেন, অর্থাৎ বাইরের পৃথিবীর মানুষের কাছে তুলে ধরেছিলেন ক্যারিবিয়া আর লাতিন আমেরিকাকে।

হার্ট ক্রেন ও ডিলান টমাসের পরে মনে করা হয় ইংরেজি ভাষার শব্দঝংকার আর সুর-মূর্ছনা ওয়ালকটের কবিতাতেই সবচেয়ে বেশি। ‘যখন আমি কবিতা লিখি, এই কবিতা, অথবা এর প্রতিটি বাক্যখণ্ড লবণে ডোবানো থাকে।’ ক্যারিবীয় অঞ্চলের মানুষের মুখের বুলি ও প্রবচনের ভাষিক সুষমা ও বৈচিত্র্য—যা একাধারে ধ্রুপদি ও স্থানীয়, ইংরেজি আর ফরাসি ভাষার মিশ্রণে গড়ে উঠেছে—কবিতায় ব্যবহার করেছেন ওয়ালকট।

প্রথম দিকে আকৃষ্ট হয়েছিলেন শিল্পের নান্দনিকতায়। অ্যানাদার লাইফ-এর আত্মজৈবনিক কবিতায় নিজেকে লক্ষ করে বলেছেন, ‘সে শিল্পের প্রেমে পড়েছে, এরপরই শুরু হলো তার প্রকৃত জীবন।’ সি গ্রেপ্‌স থেকে কবিতায় তুলে আনতে থাকলেন ভাষিক বৈচিত্র্যেও বহুমাত্রিক ঐতিহ্য। তাঁর কবিতায় ঢুকে পড়ল উপভাষা। ব্যবহার করতে শুরু করলেন ক্যারিবিয়ার শ্বেতাঙ্গদের ইংরেজির সঙ্গে মিশে যাওয়া কৃষ্ণাঙ্গ বা মিশ্র জনমানুষের ভাষা, যাকে ‘মুলাটো’ বলে প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন সেনেগালের কবি লিওপোল্ড সেঁঘর। ওয়ালকটের এপিক কাব্যগ্রন্থ ওমেরস এবং অন্যান্য নাট্যিক একোক্তিধর্মী কবিতায় এই মিশ্র ভাষারীতিরই ব্যবহার ঘটেছে। ওডেসির চরিত্র সাবাইনের জবানিতে তিনি এমন কিছু কথা বসিয়ে দিলেন, যার মাধ্যমে একদিকে ঔপনিবেশিক দাসত্ব এবং আরেক দিকে উপনিবেশের প্রভাবে গড়ে ওঠা দেশজ উত্তরাধিকারকে জাতিগত অহংকার বা গর্বের অংশ বলে মনে করেছেন: ‘আমি ঠিক সেই লালবর্ণ নিগার যে সমুদ্রকে ভালোবাসে,/ আমার আছে সুস্থির ঔপনিবেশিক শিক্ষা,/ আছে ডাচ, নিগার আর ইংরেজি ভাষা,/ এবং হয় আমি কেউ নই, অথবা আমিই একটা জাতি...।’

ওয়ালকটের এই যে ‘আমি’, সেটাই হয়ে উঠেছে একটা নতুন জাতির প্রতিনিধি।

এখানে পৌঁছেই আমরা বুঝতে পারি, ওয়ালকটের ঐতিহ্য ছিল বিভাজিত ঐতিহ্য। তিনি তাঁর ভেতরেই খুঁজেছেন সমন্বয়। দেশজ সংস্কৃতিকে যেমন জন্মসূত্রে পেয়েছিলেন, তেমনি আরোপিত ঔপনিবেশিক ঐতিহ্য, যা কালের প্রবাহে মিশ্র বর্ণের ক্যারিবীয় মানুষের স্বাভাবিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছিল, তাকেও অস্বীকার করেননি। এরই সূত্র ধরে ইংরেজি সাহিত্যকেও তিনি নিজের সাহিত্য বলে মনে করেছেন। মূল ইংরেজি সাহিত্যকে ‘পুরোনো পৃথিবী’ আর ক্যারিবীয় ইংরেজি সাহিত্যকে উল্লেখ করেছেন ‘নতুন পৃথিবী’ বলে। ইংরেজি মেটাফিজিক্যাল কবিদের পাশাপাশি এলিয়ট ও অডেনের অনুরাগী ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে গ্রিক ঐতিহ্য, বিশেষ করে হোমারীয় অনুষঙ্গকেও তিনি তাঁর ওমেরস কাব্যগ্রন্থে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ক্যারিবীয় করে তুলেছিলেন। ফলে, গ্রিক, ইংরেজি, আফ্রিকীয় আর ক্যারিবীয়—এই চার ধারায় প্রবহমান সংস্কৃতির অসামান্য সমন্বয় ঘটেছে তাঁর কবিতায়।

খুব সহজেই অস্বীকার করেছেন বর্ণবাদ, ‘কবি কখনো শ্বেতাঙ্গ হন না অথবা কৃষ্ণাঙ্গ।’ ঔপনিবেশিক দাসত্ব ও শাসনকে তাই তিনি নিন্দা না করে নিজের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য বলে গ্রহণ করেছিলেন। সমকালীন কৃষ্ণাঙ্গ লেখকেরা যেখানে পশ্চিমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন, ওয়ালকট সেখানে ‘উত্তর’ ও ‘দক্ষিণে’র সমন্বয়ে বিশ্বাসী ছিলেন। সি গ্রেপ্‌স-এর পরে তাঁর যতগুলো কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে এই দ্বিমুখী সংস্কৃতিকে সমানভাবে ছুঁয়ে দেওয়ার আর্তি প্রবলভাবে উপস্থিত। এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি একজন বিভাজিত লেখক, একটা ঐতিহ্য আমার অন্তর্গত, আরেকটা অন্য রকম।’ জন্মগ্রহণও করেছিলেন মিশ্র বর্ণের একটা পরিবারে। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর থেকে তিনি কবিতার বিষয়ে অধ্যাপনাও করেছেন প্রথমে ইংল্যান্ডে এবং পরে আমেরিকায়। ওয়ালকট তাই সে অর্থে উপনিবেশ-বিরোধী দ্রোহী কবি ছিলেন না, ছিলেন সমন্বয়পন্থী ‘ইতিবাচক’ কবি। মূলত তিনি লিরিক্যাল কবি, কিন্তু ইতিহাসকে নাটকীয় ন্যারেটিভের মাধ্যমে পাঠকদের সামনে তুলে ধরেছেন। নাট্যকার হিসেবেও ছিলেন খ্যাতিমান। ছবি আঁকতেন। কবিতাও লিখতেন পারফর্ম করার জন্য, যা একদিকে নাটকীয়তা আর অন্যদিকে রংতুলিতে বহুবর্ণিল।

 ডেরেক ওয়ালকটই দেখিয়ে গেছেন, কবি তিনি যেখান থেকেই উঠে আসেন না কেন, প্রতিভা থাকলে বিশ্বকবিতার মূল কেন্দ্রে উঠে আসা যায়, অর্জন করা যায় প্রতিষ্ঠা।