২.

তুমি জানো, কী আমার বিরহ?
কেন কোনো লেখাই তোমাকে ছাড়া লেখা যাচ্ছে না। জানি খুব অল্পই দূরত্ব তবু বাতাসের আগে কেন আমার আত্মা দৌড়াতে থাকে! আর সন্ধ্যাগুলো এমন কৌশলে নামে যেন কোনো অভিকর্ষ বলেই আমাদের দেখা হবে না আর বাতাসে ফাল্গুনও একটা ছল, পাতা ঝরবে বলে

একটা সকাল বন্ধুদের সাথে দেখা হলো তাই সারাটা দিন মুকুল হয়ে থাকল মন। তোমাকে বললাম, একলা খাই বলে এত ঝরঝরে দুপুরও বৈমাত্রেয় লাগে! আর সারা বেলা গুনগুন করা একটা সুর থেকে গানের কথাগুলো কোনোভাবে খেয়ালে আনতে পারলাম না।

তোমাকে বলেছি কী আমার বিরহ? কারা আজও নিজস্ব নামসহ আমাদের স্বপ্নে ফিরে আসে...

৩.

তোমার পাশে শুয়েও মাঝে মাঝে তোমাকে মনে পড়ে। মনে পড়ে, অনেক দিন নীলক্ষেত যাই না। ঘুপচিগলি আর স্যাঁতসেঁতে পথ পার হয়ে আমার নিঃসঙ্গতা সারি সারি বইয়ের নিচে চাপা দেওয়ার কথা। পুরানা বইয়ের লোভ আমাকে ছেড়ে যায়নি যেভাবে টিকিট কাটা পর্যন্তই কিছু মানুষ বন্ধুসুলভ থাকে। মনে পড়ে, তাড়াহুড়া করে নীলক্ষেত গেলে জানা যেত আজ মঙ্গলবার! আজ তুমিও আসবে না!

এখন কি পাতাঝরা মৌসুম শুরু হবে পাখি? ফিনফিনে বাতাসের মধ্যে আমাদের হন্তদন্ত হাঁটা? আমি খুব ধীরে ধীরে হাঁটতে চাই। সকালের রোদে বাসার দারোয়ানদের গোল হয়ে বসে থাকা, প্রত্যেকটা দোকানের নাম পড়তে পড়তে আগায়া যাব বাসস্ট্যান্ডের দিকে। ‘মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোর’ ‘সুমি টিস্টল’...। দোকানের মালিক কেউ নয় আমাদের তবু নাম মিলে গেলে কোনো পরিচিত মুখ মন পড়ে।

মনে পড়ে, তোমাকে বলিনি কেমন ছিল সেদিনের আকাশ, কীভাবে কাঁপছিল কপাট, আমার সমস্ত হায়া! আর শুধু সিনেমাতেই দেখলাম পাথরে পাথরে আগুন জ্বলে। কোথাও পৌঁছাতে চাই না আমি, এই সব মনে পড়া নিয়ে আরেকটু স্থিরতা আমাকে পেয়ে বসুক। দেখি, মোড়ের গাছটায় পাতারা সবুজ হচ্ছে। পৃথিবীর সব ঘুঘু বোধ হয় এখনো ডেকে যাচ্ছে হিজলের বনে!