চরিত্র কীভাবে ভাষার শব্দ হয়ে ওঠে

‘মফিজ’ আর ‘লেট লতিফ’ শব্দ দুটি কোথা থেকে এল—এটা একটা জিজ্ঞাসাই বটে! শুধু ‘মফিজ’ আর ‘লেট লতিফ’ নয়, বাংলা ভাষায় এসেছে ‘বস’ আর ‘ব্রো’র মতো শব্দও। কখনো কখনো এসব শব্দ চরিত্রেরও প্রতিনিধি হয়ে ওঠে।

অনেক শব্দ ভাষা ব্যবহারকারীর মুখে জন্ম নিয়ে ঠোঁট পর্যন্তই থাকে, অন্যের ঠোঁটে যায় না। আবার অনেক শব্দ ঠোঁট থেকে ঠোঁটে চলতে চলতে বহুল প্রচলিত হয়। একসময় সেসব শব্দের কোনো কোনোটি ‘মান্যজন’দের স্বীকৃতি পেয়ে অভিধানেও জায়গা করে নেয়। তবে হাল আমলে শব্দ কেবল ঠোঁটে জন্ম নেয় না। ইউটিউব, ফেসবুক কিংবা অনলাইন যোগাযোগের সূত্র ধরেও শব্দ তৈরি হয়।

ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ সব সময় কেবল শব্দ নয়। অর্থ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শব্দ প্রায়ই বহন করে সমাজ ও সংস্কৃতির চিহ্ন। বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহৃত এমন কয়েকটি শব্দ—মফিজ, লেট লতিফ, বস, ব্রো। এগুলোর শব্দগত উৎস আর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গল্প শোনা যাক...

মফিজ আর লেট লতিফদের কাছে যাওয়ার আগে গেল শতকের আশির দশকে যাওয়া যাক। টেলিভিশনে শাবানা-জসীমের সিনেমা চলছে। প্রবল অর্থকষ্টে পড়ে শাবানা সেলাই মেশিন চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে ছোট ভাইবোন, দেবর কিংবা সন্তানের দুঃখে কেঁদেকেটে বুক ভাসিয়ে দিচ্ছেন। যখন কোনো গতিই মিলছে না, তখন জসীম হঠাৎ লটারির টিকিট পেয়ে আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন—এবার সব দুঃখের অবসান হবে। একটা-দুটো নয়, আশির দশকের অসংখ্য বাংলা সিনেমায় মধ্যবিত্ত আবেগকে কাজে লাগিয়ে এভাবে কাহিনি গড়ে উঠেছে। এখান থেকেই তৈরি হয়েছে শাবানা আর জসীমকে নিয়ে দুটি শব্দ।

কেউ স্বার্থ ত্যাগ করে অপরের জন্য কাজ করলে বলে, ‘শাবানার সেলাই মেশিন হয়ে গেছিস দেখছি!’ আবার আকস্মিকভাবে পাওয়া দারুণ কোনো খবর শুনলে বলে, ‘জসীমের লটারি পেয়ে গেছিস তাহলে!’ যে প্রজন্ম নাম দিয়ে এ ধরনের শব্দ বানিয়েছে, তারা বিটিভিতে সিনেমা দেখতে দেখতে বড় হয়েছে। তখন বিটিভির বাইরে আর কোনো চ্যানেল ছিল না। তার মানে সেটা নব্বইয়ের দশকের ঠিক আগের প্রজন্ম। তারা হাসিখুশি প্রাণবন্ত মানুষকে বলেছে ‘টেলি সামাদ’, মোটাসোটা কোনো বস্তু দেখলেও বলেছে ‘জাম্বু’, বেশভূষা সাধারণ ও অগোছালো হলে মজা করে বলেছে ‘কাজের বেটি রহিমা’। অনলাইনের এই যুগে মিমিক, রিলস আর শর্টস হয়েছে নতুন শব্দ প্রচলনের উপায়।

তবে তৈরি হওয়া সব শব্দ অভিধানে জায়গা পায় না। কারণ, অনেক শব্দ খুব দ্রুত তৈরি হয়ে দ্রুতই মরে যায়। আবার কিছু শব্দ পণ্ডিতজনের স্বীকৃতি না পেয়ে ‘স্ল্যাং’ হয়েই ভাষা ব্যবহারকারীর মুখে চলতে থাকে। বিপরীতভাবে কিছু ‘স্ল্যাং’ পণ্ডিতি স্বীকৃতি পেয়ে অভিধানে জায়গা করে নেয়। যেমন ‘মার্কামারা’। ব্রিটিশ আমলে মিলের কাপড়ে কোম্পানির মার্কা বা ছাপ মারা থাকত। সেখান থেকে বিশেষ চেহারার বা ধরনের মানুষকে ‘মার্কামারা’ বলা হতো। অনেক পরে অভিধানে তা জায়গা পেয়েছে। তবে সব শব্দের উৎস এভাবে খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

‘মফিজ’ আর ‘লেট লতিফ’দের ক্ষেত্রে গল্প আছে বটে, কিন্তু শব্দের জন্ম-উৎসের সঙ্গে সেগুলোকে ঠিক মেলানো যায় না। প্রতারক মানুষ বোঝাতে ‘মির জাফর’ আর কুচক্রী মানুষ বোঝাতে ‘ঘসেটি বেগম’ শব্দ দুটি বাংলা ভাষায় অন্তত দুই শ বছর ধরে চলছে। শব্দগুলোর সঙ্গে ঐতিহাসিক সত্য জড়িয়ে থাকায় এগুলোর উৎস বুঝে নিতে সমস্যা হয় না। কিন্তু অতি সাধারণ ‘মফিজ’দের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য সূত্র খুঁজে বের করা কঠিন। একইভাবে কঠিন ‘আবুল’, ‘মোখলেছ’, ‘কুদ্দুস’-এর মতো শব্দগুলোর সূত্র খুঁজে বের করা। প্রতি ক্ষেত্রেই এসব নামবাচক শব্দগুলো বিশেষণীয় রূপ হিসেবে সম্বোধনে ব্যবহৃত হয়।

শুরুর দিকে উত্তরবঙ্গের, বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরের মানুষকে ‘মফিজ’ বলা হয়েছে। পরে অন্য অঞ্চলের মানুষও ‘মফিজ’ হয়েছে বোকা বোকা কাজের জন্য। কিন্তু উত্তরবঙ্গের মানুষ কি আসলেই বোকা স্বভাবের ছিল কিংবা এখনো বোকা রয়ে গেছে? তাদের বোকামির কিছু নমুনা জনশ্রুতি আকারে অবশ্য প্রচলিত। একটা নমুনা এমন: এক লোক কাঁধে বাখারি নিয়ে জিনিস বিক্রি করতে চলেছে হাটে। বাখারির একদিকে বেঁধেছে জিনিসটা। আর ভারসাম্য তৈরির জন্য অন্যদিকে বেঁধেছে বড় একখণ্ড পাথর। এমনই বুদ্ধি লোকটার!

কেউ স্বার্থ ত্যাগ করে অপরের জন্য কাজ করলে বলে, ‘শাবানার সেলাই মেশিন হয়ে গেছিস দেখছি!’ আবার আকস্মিকভাবে পাওয়া দারুণ কোনো খবর শুনলে বলে, ‘জসীমের লটারি পেয়ে গেছিস তাহলে!’ যে প্রজন্ম নাম দিয়ে এ ধরনের শব্দ বানিয়েছে, তারা বিটিভিতে সিনেমা দেখতে দেখতে বড় হয়েছে। তার মানে সেটা নব্বইয়ের দশকের ঠিক আগের প্রজন্ম।

আয়োডিনের অভাবজনিত গলগণ্ড রোগের উদাহরণ হিসবে উত্তরবঙ্গের মানুষের কথা বলা হয়। আয়োডিনের অভাবে বুদ্ধির ঘাটতি হয়—এমন প্রচার টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনেও হয়েছে। তবে আয়োডিনের চেয়েও বুদ্ধির বড় পার্থক্য ঘটিয়েছে ঢাকায় আসার মেয়াদকালের ব্যবধান। ১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলা আলাদা হওয়ার পরে এখানকার অর্থনীতি আর সাহিত্য-সংস্কৃতির রাজধানী হয়েছে ঢাকা। নৌপথের সুবিধা নিয়ে নৌকা বা স্টিমারে করে অপেক্ষাকৃত সহজে এই নতুন শহরে আগে ঢুকেছে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ। এর অনেক পরে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা মানুষেরা ঢুকেছে পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়িতে করে পথ ভেঙে ভেঙে।

উত্তরবঙ্গের মানুষকে যতই মঙ্গাপীড়িত বলা হোক, দুমুঠো খেয়েও তাদের সুখের সীমা ছিল না। তাই ঢাকায় আসার তাগিদ ছিল না তাদের। কিন্তু যত দিনে তারা ঢাকায় এসেছে, তত দিনে ঢাকায় বড় বড় দালান তৈরি হয়ে গেছে। ফলে তারা ঢুকেছে উঁচু দালানের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে। দক্ষিণের মানুষের চোখে তারা ধরা পড়েছে ‘মফিজ’ বা বোকা হিসেবে। অনেক পরে উত্তরের মানুষ ঢাকায় স্থায়ী হয়ে এর জবাব দিয়েছে। বলেছে, ‘আমরা কি পানিতে ভাইস্যা আসছি নাকি?’

টেলিভিশনে পণ্যের বিজ্ঞাপনে ‘মফিজ’ নামের ব্যঙ্গাত্মক ব্যবহার শব্দটিকে আরও জনপ্রিয় করেছে। তবে মফিজ মানে বোকা নয়। আরবি ‘মোফিদ’ শব্দ বাংলায় হয়েছে মফিজ, যার অর্থ উপকারী। পূর্ব বাংলায় এ রকম আরবি বা ফারসি নাম রাখার প্রবণতা শুরু হয় এ অঞ্চলে ইসলামের বিস্তৃতির যুগ থেকেই। অর্থাৎ ১৩ শতকের গোড়া থেকেই। সন্তানের নামকরণের ক্ষেত্রে ধর্মান্তরিত মুসলমান কখনো অর্থ নিয়ে ভাবেনি। শব্দটি ‘মুসলমানীয়’ কি না, ওই পর্যন্তই ছিল ভাবনার জায়গা।

বাংলা ভাষার মান্যায়ন যত দিন কলকাতাকেন্দ্রিক ছিল, তত দিন এসব মুসলমানি নাম লিখিত বাংলায় কম ঢুকেছে। তাই ‘কংস মামা’, ‘গণেশ উল্টানো’, ‘রাবণের চিতা’, ‘ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির’—এ রকম বাগ্‌ধারা যত পাওয়া যায়, ‘দাতা হাতেমতাই’, ‘সবজান্তা সমশের’-এর মতো বাগ্‌ধারা তত পাওয়া যায় না। তবে দেশভাগের পর পূর্ব বাংলার মানুষ নিজেদের মতো করে অনেক নাম বাগ্‌বিধিতে যুক্ত করেছে পূর্ববঙ্গীয় সমাজ-সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে। যেমন ‘ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার’-এর মতো করে ঢাকায় তৈরি হয়েছে ‘অজু নাই গোসল নাই নিধান মুন্সি’।

ধারণা করা যায়, ‘লেট লতিফ’ শব্দটিও দেশভাগের পরে চালু হয়েছে। কলকাতা পর্বে চালু হলে শব্দটি হতো ‘লেট নারায়ণ’ বা এ রকম কিছু। ‘লেট লতিফ’ শব্দটি অবশ্যই গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ। কারণ, শহরে ঘড়ি ধরে কাজ করার তাড়া আছে। ঢাকায় নতুন নতুন অফিস স্থাপনের পর এই শব্দের জন্ম হয়ে থাকবে। এরপর ঢাকা থেকে এর বিস্তার ঘটেছে সারা দেশে। এমনকি হিন্দি ভাষায়ও শব্দটি ঢুকেছে। আরবি বা ফারসিতে ‘লতিফ’ অর্থ মৃদু, নমনীয়, দয়াশীল বা খাঁটি। কথ্য ভঙ্গিতে ব্যবহারের সময় সেসব অর্থের তোয়াক্কা করা হয়নি। বরং ‘লেট লতিফ’-এর অর্থ করার সময় ইংরেজি ‘লেট’ শব্দের ‘ঢিলা’ বা ‘আইলসা’ অর্থই প্রাধান্য পেয়েছে। একই অর্থে ‘লেট মকবুল’ও চালু আছে বাংলা কথ্য ভাষায়। এ ক্ষেত্রে ‘লেট লতিফ’ জনপ্রিয় হয়েছে কেবল শ্রুতিগত ঐক্যের কারণে। ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘মুখের আরাম’ বলে একটা কথা আছে। যে কারণে ‘গোবর গণেশ’ হয়, ‘গোবর কার্তিক’ হয় না।

‘বস’ শব্দটি ‘লেট লতিফ’-এর আগের। তবে শব্দটি নতুন ব্যঞ্জনা পেয়েছে ‘লেট লতিফ’-এর পরে। ঢাকা ‘অফিসের নগরী’ হয়ে ওঠার পর ষাটের দশকে অফিসের বড়কর্তাকে ‘বস’ বলা হতো। আশির দশকের শেষ দিকে ঢাকা ‘করপোরেট নগরী’ হয়ে উঠতে থাকে। তখন সম্মানিত ক্লায়েন্ট বা কাস্টমারকে ‘বস’ ডাকা শুরু হয়। ইংরেজিতেও ‘বস’ শব্দের নতুন ব্যঞ্জনা পাওয়া যায়। সামন্ত যুগে ইউরোপে জমির মালিক বা ল্যান্ডলর্ডকে ‘মাস্টার’ বলা হতো। এর সঙ্গে দাসপ্রথার ঘনিষ্ঠ সংযোগ থাকার কারণে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ‘মাস্টার’ শব্দের বদলে ‘বস’ ব্যবহৃত হতে থাকে। বিশ শতকের শুরুতে পুঁজিবাদের বিকাশের পর ‘বস’ ব্যবহৃত হতে থাকে মিলের মালিক অর্থে।

ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম বই দীনবন্ধু মিত্রের নীল-দর্পণ– (১৮৬০) ‘বস’ শব্দের প্রয়োগ আছে। সেখানে এক রায়তকে বলতে শোনা যায়, ‘মুই হলাম ভিনগাঁর রেয়েত, মুই স্বরপুর আলাম কবে, তা, বস মশার সলায় পড়ে দাদন ঝ্যাড়ে ফ্যাল্লাম? মোর কোলের ছেলেডার গা তেতো করেলো তাইতি বস মশার কাছে মিচ্রি নিতি অ্যাকবার স্বরপুর আয়েলাম’ (দ্বিতীয় অঙ্ক প্রথম গর্ভাঙ্ক)। নাটকটিতে ‘বস’ শব্দের ব্যবহার হয়েছে ‘মনিব’ অর্থে। নীল-দর্পণ–এর সংলাপ কথ্য ভঙ্গির। এ থেকে বোঝা যায়, সর্বজনের সাধারণ ব্যবহারেও ‘বস’ ছিল।

তবে আশির দশকের শেষ দিকে ‘বস’ শব্দের ব্যবহার শুরু হয় ‘স্যার’ শব্দের বিকল্প হিসেবে। এ সময়ে ‘করপোরেট ঢাকা’য় বড় বড় ব্যবসা আর বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে উঠতে থাকে। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি চাকরিকে প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নেয়। তারা অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত লোকদের সঙ্গে অর্থসংশ্লিষ্ট কাজে যোগাযোগ করেছে, কিন্তু তাদের ‘স্যার’ বলতে দ্বিধা করত। আত্মপরিচয়ের সংকটে ভোগা নব্য শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মুখে এভাবেই ‘বস’ শব্দের নতুন ব্যঞ্জনা তৈরি হয়।

আর ‘ব্রো’ শব্দটি আরও পরের। এটি ইংরেজি ‘ব্রাদার’ শব্দের ভগ্নরূপ। প্রফেশনাল অর্থে যেমন ‘প্রো’, তেমনি ব্রাদার বোঝাতে ‘ব্রো’। বিশ শতকের প্রথম দিকে আফ্রিকান-আমেরিকানরা পরস্পরকে ‘ব্রো’ বলে ডাকতে শুরু করে। কথ্য বাংলায় শব্দটি জনপ্রিয় হয়েছে একুশ শতকের গোড়ায়—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসার পর। দেশে দেশে অনলাইন যোগাযোগ বেড়ে যাওয়ার কারণে পৃথিবীর অনেক ভাষায়ই এখন সাধারণ সম্বোধন হিসেবে ‘ব্রো’ চলছে। নিকটাত্মীয় নয় এমন পরিচিত পুরুষ ব্যক্তিকে আরেক পুরুষ ‘ব্রো’ সম্বোধনে ডাকে। বহুকাল ধরে বাংলাদেশের গ্রাম ও শহরে ‘ভাই’ ডাকা হয়েছে যেভাবে, একইভাবে এখনকার ডিজিটাল তরুণেরা পরস্পরকে ‘ব্রো’ বলে। শব্দকে সংক্ষেপ করলে এর একটি আধুনিক সংস্করণ তৈরি হয় বলে এ যুগের ধারণা। যে কারণে তরুণদের উচ্চারণে সুস্মিতা হয়ে যায় ‘সুস্মি’, জগলুল হয়ে যায় ‘জগ্গু’। তবে সম্বোধনের সুবিধার জন্য শব্দসংক্ষেপের রীতি আরও পুরোনো।