এবার ষোলোতম পুরস্কার

‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই’ পুরস্কার প্রবর্তনের ষোলোতম এ বছরে সৃজনশীল শাখায় শাহাদুজ্জামানের গল্পের বই মামলার সাক্ষী ময়না পাখি এবং মননশীল শাখায় রায়হান রাইনের গবেষণাগ্রন্থ বাংলার দর্শন: প্রাক্-উপনিবেশ পর্ব পুরস্কার পেয়েছে। ১৪২৫ বাংলা সনে বাংলাদেশে প্রকাশিত দুই শাখায় এই দুটি বইকে পুরস্কৃত করা হয়। রায়হান রাইন দ্বিতীয়বারের মতো এ পুরস্কার পেলেন। এর আগে ১৪২০ বাংলা সনে সৃজনশীল শাখায় 

তিনি এ পুরস্কার পেয়েছিলেন আগুন ও ছায়া উপন্যাসের জন্য।

ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ, ভীষ্মদেব চৌধুরী, শাহীন আখতার ও সুমন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী সম্প্রতি পুরস্কারের জন্য এ দুটি বইকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করেছেন।

পুরস্কারবিজয়ী দুই লেখকের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও অভিজ্ঞানপত্র দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত করা হবে। ১২ জানুয়ারি রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সাহিত্যানুরাগীদের জন্য উন্মুক্ত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ী লেখকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুরস্কার।

সৃজনশীল ও মননশীল শাখায় পুরস্কারপ্রাপ্ত এবারের দুটি বইয়ের প্রকাশকই প্রথমা প্রকাশন।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের জন্ম ১০ নভেম্বর ১৯৬০, ঢাকায়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক। পরে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা নৃবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা ও অধ্যাপনা করছেন। ছোটকাগজের মাধ্যমে তাঁর লেখালেখির সূচনা। ১৯৯৬ সালে বেরোয় প্রথম গল্পের বই কয়েকটি বিহ্বল গল্প। কথাসাহিত্য ছাড়াও অনুবাদ, কলাম ছাড়া নানা ধরনের লেখা লেখেন শাহাদুজ্জামান। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো—গল্পগ্রন্থ: পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ, কেশের আড়ে পাহাড়, অন্য এক গল্পকারের গল্প, উপন্যাস: বিসর্গতে দুঃখ, ক্রাচের কর্নেল, একজন কমলালেবু, গবেষণা: একটি হাসপাতাল, একজন নৃবিজ্ঞানী, কয়েকটি হাড় এবং সাক্ষাৎকার সংকলন: কথা পরম্পরা। এ ছাড়া তিনি আরও বহু গ্রন্থের প্রণেতা। ২০১৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন।

রায়হান রাইনের জন্ম ১৯৭১ সালের ৮ মার্চ, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার খোর্দবয়রা গ্রামে। বিএল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন দর্শন বিষয়ে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তম ফলাফলের জন্য পেয়েছেন এম ইউ আহমেদ ট্রাস্ট থেকে স্বর্ণপদক। এখন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক। মননশীল লেখালেখির পাশাপাশি সৃজনশীল রচনায়ও সক্রিয় রায়হান রাইন। প্রথম বই গল্পগ্রন্থ আকাশের কৃপাপ্রার্থী তরু বেরিয়েছিল ২০০৪ সালে। তাঁর অন্যান্য বই হলো—গল্পগ্রন্থ: পাতানো মায়ের পাহাড়, স্বপ্নের আমি ও অন্যরা, উপন্যাস: আগুন ও ছায়া, নিখোঁজ মানুষেরা, কাব্যগ্রন্থ: তুমি ও সবুজ ঘোড়া, একদিন সুবচনী হাঁস। সম্পাদনা করেছেন বাংলার ধর্ম ও দর্শন। মনসুর আল-হাল্লাজের কিতাব আল-তাওয়াসিন, প্রশ্নপুস্তক: পাবলো নেরুদা তাঁর অনুবাদগ্রন্থ।