তাঁদের বিচিত্রিতা: কার্ট ভনেগাট

মা দিবসে মায়ের আত্মহত্যা

কার্ট ভনেগাট নামজাদা মার্কিন ঔপন্যাসিক। স্লটারহাউস ফাইভ (১৯৬৯), ক্যাটস ক্র্যাডল (১৯৬৩) ও ব্রেকফাস্ট অব চ্যাম্পিয়নস (১৯৭৩)-এর মতো নিরীক্ষাধর্মী, উত্তরাধুনিক বইয়ের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়। বেশ সচ্ছল পরিবারেই তাঁর জন্ম হয় ১৯২২ সালে। বাবা ছিলেন স্থপতি। তাঁর মা-ও উত্তরাধিকারসূত্রে বেশ সম্পদশালী হয়েছিলেন। কিন্তু গত শতকের তিরিশের দশকের অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে তাঁদের সংসারে একসময় অভাব নেমে আসে। একটা পর্যায়ে গিয়ে নিজেদের বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। সবকিছু মিলিয়ে কার্ট ভনেগাটের মা প্রচণ্ড হতাশা আর বিষণ্নতায় ভুগতে শুরু করেন। নিজেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেন জীবন আর সংসার থেকে। অবশেষে ১৯৪৪ সালের মা দিবসে তিনি আত্মহত্যা করেন।

মাংসের স্তূপে লুকিয়ে থেকে বেঁচে যাওয়া

মায়ের মৃত্যুর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভনেগাট চলে যান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। যুদ্ধের একপর্যায়ে বন্দী হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জার্মানির ড্রেসডেনের একটি কারাগারে। এখানে প্রায় প্রতিদিনই বন্দীদের হত্যা করা হতো। সেই হত্যাযজ্ঞ থেকে তিনি বেঁচে ফিরে আসবেন, এমন আশা কার্ট ভনেগাট ছেড়েই দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে এক দিন শুরু হয় বিমান হামলা। হামলা থেকে বাঁচতে বুদ্ধি করে তিনি আশ্রয় নেন মাটির নিচের এক মাংস সংরক্ষণাগারে। হিমায়িত মাংসের স্তূপে লুকিয়ে থাকেন যতক্ষণ বিমান হামলা চলছিল। তখন ১৯৪৫ সাল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিক। এই হামলার কিছুদিন পর মুক্তি পেয়ে এক পুনর্বাসন ক্যাম্পের মাধ্যমে ফ্রান্স হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন কার্ট।

অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের জন্য অভূতপূর্ব সমীহ

কার্ট ভনেগাট সব সময় অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের খুব সমীহ করতেন। তাঁর লেখাতেও এই সমীহের নিদর্শন পাওয়া যায়। এমনকি নিজেই একদিন অগ্নিনির্বাপণকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই বোধ হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফেরার পর অগ্নিনির্বাপণ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন নিউইয়র্কের এক স্টেশনে। 

গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির

সূত্র: মেন্টাল ফ্লস ও অল দ্যাট ইন্টারেস্টিং ডটকম