লর্ড বায়রন
ছবি: সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবি লর্ড বায়রন কবিতা ভালোবাসতেন তো বটেই, এর পাশাপাশি তাঁর ভালোবাসা ছিল নিজের পোষা প্রাণীদের প্রতি। সেই ভালোবাসার রূপটি এত আগ্রাসী ও প্রবল ছিল যে এখন শুনলে খানিকটা অবাকই হতে হয়।

১৮০৫ সালে বায়রন যখন কেমব্রিজে ট্রিনিটি কলেজে পড়তে গেলেন, তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানাল, এখানে থাকতে হলে কোনো কুকুর সঙ্গে আনা যাবে না। এ ঘটনায় পশুপ্রেমী বায়রন খুব ক্ষুব্ধ হলেন। কারণ, কুকুর তো তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই থাকে। কর্তৃপক্ষকে জবাব দেওয়ার নতুন উপায় খুঁজতে থাকলেন তিনি। উপায় একটা বের হলোও বটে। বায়রন কুকুরের বদলে সঙ্গে করে নিজের পোষা ভালুককে নিয়ে এলেন। যুক্তি দেখালেন, কলেজ প্রাঙ্গণে কুকুর নিষিদ্ধ হলেও ভালুকের ব্যাপারে কিছু বলা নেই। তাঁর যুক্তি ছিল অকাট্য। ফলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে তা মেনে নিতে হলো।

এরপরের ঘটনা, ওই ভালুককে নিয়েই কলেজ হোস্টেলের একটি কক্ষে থাকা শুরু করলেন বায়রন। শুধু তা-ই নয়, মাঝেমধ্যে ভোরবেলা দুজনকে একসঙ্গে কলেজ প্রাঙ্গণে মহাদর্পে পায়চারি করতেও দেখা যেতে লাগল।

লর্ড বায়রন ওই ভালুককে কলেজে ভর্তি করানোরও চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সংগত কারণেই তাঁর চেষ্টা সফল হয়নি। একবার ভাবুন, আপনার পাশের বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে সাত ফুট লম্বা একটা লোমশ বাদামি ভালুক। এমন যদি ঘটে, সে সময় প্রশ্নপত্রের দিকে তাকানোর ফুরসত কি পাবেন আপনি?

না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।

লর্ড বায়রনের পশুপ্রীতি শুধু ভালুকেই সীমাবদ্ধ ছিল, এমন নয়। এ কবির পোষা প্রাণীদের দলে ছিল হাঁস, ঘোড়া, বাঁদর, ময়ূর, ইগল, গিনি মুরগি, ভোঁদড়, শিয়াল, বগলা পাখি, মিসরীয় বক, ছাগল ও কাক!

ফলে বায়রন যখন লেখেন, ‘মানুষেরে আমি বাসি না কম ভালো/কেবল প্রকৃতিরে বাসি বেশি’, তখন মনে হয়, তিনি যদি এমন করে না লেখেন, তবে আর কে লিখবেন!

সূত্র: সিএসকেডটইউকে

● গ্রন্থনা: মাহীন হক