ইমদাদুল হক মিলনের কাছে ঋণ

কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের লেখালেখির জগতের নানা খুঁটিনাটি বিষয়-আশয় খুঁজে পাওয়া যাবে এই লেখায়।

ইমদাদুল হক মিলনের ছবি অবলম্বনে গ্রাফিকস

ইমদাদুল হক মিলনের কাছে আমার এবং আমাদের ঋণ আছে। আমার যখন পাখা গজানোর বয়স, শুঁয়োপোকা থেকে প্রজাপতির উপমাটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে, বরং বলি, যখন শরীরে অনুভব করছি ডানা গজানোর ব্যথা, পড়ছি আকুল হয়ে সামনে যা পাই, কিছুই পাওয়া যায় না তখন আমাদের ছোট্ট দুঃখী শহর রংপুরে, এর-ওর র‌্যাক থেকে পাচ্ছি ‘গল্পগুচ্ছ’, স্কুলের লাইব্রেরি থেকে পাচ্ছি ‘আবদুল্লাহ’ কিংবা ‘আনোয়ারা’, জসীমউদ্‌দীনের ‘বোবা কাহিনী’, আর হাতে হাতে ঘুরছে নিমাই-ফাল্গুনী-নীহাররঞ্জন, বড়জোর শওকত ওসমানের ‘ওটেন সাহেবের বাংলো’ বা ‘জননী’ আর শরৎচন্দ্র, ঠিক তখনই, ক্লাস নাইনে কি টেনে পড়ি, হাতে এসে গেল বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত সমকালীন লেখকের এক বই, নাম ‘ইমদাদুল হক মিলনের প্রেমের গল্প’। সঙ্গে আরও পেয়েছিলাম ‘যুবকদ্বয়’, আফজাল হোসেন আর ইমদাদুল হক মিলনের বই একসঙ্গে দুই মলাটের ভেতরে। এবং পেয়েছিলাম সৈয়দ শামসুল হকের ‘পরানের গহীন ভিতর’, শামসুর রাহমানের ‘দুঃসময়ে মুখোমুখি’। ব্যস। আলীবাবার সেই রহস্যময় দরজা গেল খুলে, পেয়ে গেলাম নিজেদের গল্প, নিজেদের কবিতা।

মানুষ বাস করে সমকালে, সমস্থানে, স্বসমাজে, তার জীবনযাপনের ও ধারণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার দেখা সে পায় সমকালীন স্বদেশি লেখকের লেখায়, ক্ল্যাসিক তাকে দীপিত করে, বিদেশি সাহিত্য তাকে প্রসারিত করে, কিন্তু তাকে শান্তি দেয়, দুদণ্ডের তরে হলেও, সমকালীন স্বভাষী লেখকেরা। নাটোরের বনলতা সেন যেমনটা দেয়, যেটা দিতে পারে না ট্রয়ের হেলেন, মানে নিজেদের সমাজের নিজেদের লেখক একজন পাঠককে যে আরামটা দেয়, তা আর কেউ দিতে পারে না, তা হলো একই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবার আনন্দ।

‘ইমদাদুল হক মিলনের প্রেমের গল্প’ পড়ে তাই উদ্দীপনা পাই, বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করি, এ তো আমাদের জীবনেরই গল্প! আমিও চেষ্টা করে দেখি না কেন, পারি কি না। এর আগে ছোটদের দেয়ালপত্রিকা নিজেই সম্পাদনা করে নিজেই তার পুরোটা ভরে তুলেছি স্বরচিত ছোটদের গল্প, ছড়া, কবিতা আর ড্রয়িং দিয়ে। কিন্তু বড়দের গল্প যদি লিখতে হয়, তবে? আমার লেখা প্রথম বড়দের গল্পের নাম ‘হার্দিক’, বেরিয়েছিল রংপুর থেকে বেরোনো লিটল ম্যাগাজিন অনীক রেজা সম্পাদিত ‘হৃদয়’ নামের পত্রিকায়, তখন আমি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব বলে অপেক্ষা করছি ক্লাস শুরু হওয়ার জন্য। আমার প্রথম গল্পটি লেখাই হতো না, যদি না আমি ‘ইমদাদুল হক মিলনের প্রেমের গল্প’ নামের বইটা পড়তাম।

মনে রাখতে হবে, তখনো হুমায়ূন আহমেদ অতটা জনপ্রিয় হননি, তাঁর বইও অতটা সহজপ্রাপ্য হয়নি। তাই আমাকে উদ্বোধিত করেননি হুমায়ূন আহমেদ, করেছিলেন ইমদাদুল হক মিলন। এরপরের গল্পটি আমি লিখি একই পত্রিকায়, নাম ‘অনেক কার্তিক একক অগ্রহায়ণ’, এটি আমার প্রকাশিত গল্পের বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে, সেটি পড়লে বোঝা যাবে, এরই মধ্যে আমি পড়তে শুরু করেছি সৈয়দ শামসুল হক এবং তিনি আমাকে গ্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।

হুমায়ূন আহমেদের আগে ইমদাদুল হক মিলন ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। বাংলাদেশের প্রকাশনা যাত্রা শুরু করে তাঁরই হাত ধরে। এর আগে মুক্তধারা যাঁদের বই বের করেছিল, তাঁদের অনেকেই নমস্য লেখক, কিন্তু লেখকের নামে বই বিক্রি শুরু হয় ইমদাদুল হক মিলনকে দিয়েই।

কাজেই এই ঋণ আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে আমার প্রথম গল্পটির পেছনে ইন্ধন আছে ইমদাদুল হক মিলনের। যদিও সব লেখকই কোনো না কোনোভাবে তাঁর প্রভাব ফেলেন পরের প্রজন্মের লেখকের ওপর। ছোটবেলায় আব্বার প্রতিষ্ঠান রংপুর পিটিআইয়ের পাঠাগার আমাদের জন্য উন্মুক্ত ছিল, দেবসাহিত্য কুটিরের বই নিয়ে আসতাম প্রতি সপ্তাহে, শিব্রাম আমার সেইভাবেই পড়া। কিংবা অনুবাদে আরবি গল্পও।

আমার ব্যক্তিগত ঋণের পরে বলব আমাদের সম্মিলিত ঋণের কথা। হুমায়ূন আহমেদের আগে ইমদাদুল হক মিলন ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। বাংলাদেশের প্রকাশনা যাত্রা শুরু করে তাঁরই হাত ধরে। এর আগে মুক্তধারা যাঁদের বই বের করেছিল, তাঁদের অনেকেই নমস্য লেখক, কিন্তু লেখকের নামে বই বিক্রি শুরু হয় ইমদাদুল হক মিলনকে দিয়েই—যদি না ‘খেলারাম খেলে যা’কে হিসাবের বাইরে রাখি। পরবর্তীকালে ভীষণ জনপ্রিয়তা পান হুমায়ূন আহমেদ, এবং আমাদের প্রকাশনা জগৎ শৈশব পেরিয়ে প্রাপ্তবয়স্কতা অর্জন করে। এটা যে কত বড় একটা কীর্তি, সেটা আমরা একটু ভালোভাবে ভেবে দেখব কি? এই দেশের আধুনিক প্রকাশনা জগতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারীদের অগ্রগণ্য হলেন ইমদাদুল হক মিলন।

ইমদাদুল হক মিলন
প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল

আর কী অসামান্য সব গল্প আর উপন্যাসই না তিনি লিখেছেন! আমি তাঁর ‘ও রাধা ও কৃষ্ণ’-এর চিরভক্ত। ‘আমার বাপ শালা একটা লুচ্ছা’—এই কথা বলে কোনো উপন্যাস শুরু হতে পারে, নায়ক বলতে পারে এই কথা? অবিশ্বাস্য রকমের এক আধুনিকতা ছিল ইমদাদুল হক মিলনের। একটা গল্প লিখেছিলেন, নায়িকার গায়ের রং কালো, সবাই তাকে ডাকে ব্লাকি বলে, এই গল্প তো আমরা কেউ লিখতে পারিনি, আমাদের নায়িকারা সবাই হয় রূপবতী আর মায়াবতী। ‘পরাধীনতা’ বোধ হয় পড়েছিলাম কোনো ঈদসংখ্যায়, প্রবাসজীবনের দুঃখ-কষ্টের গল্প, পড়ার পর দিনরাত্রিগুলো আমার এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। ‘দুঃখ/কষ্ট’ নামের গল্পটার কথাও মনে পড়ছে। কবির একটা চরিত্র আছে তাতে, বোধ হয় কবি রফিক আজাদকে মাথায় রেখে লিখেছিলেন ইমদাদুল হক মিলন, তার লাইন এখনো মনে আছে, ‘কবি চলেন হোন্ডা দাবড়ে।’

ইমদাদুল হক মিলনের মাত্র একটা গল্প নিয়ে এখন আলোচনা করব। গল্পের নাম হলো: ‘মেয়েটির কোনো অপরাধ ছিল না’।

এই গল্প শুরু হচ্ছে:
‘বহুকালের পুরোনো যে কড়-ইগাছটি নদীতীর অন্ধকার করে দাঁড়িয়ে আছে, তার মাথার ওপরকার আকাশ একটু একটু করে ফর্সা হচ্ছে। গাছের ঘন ডালপালা এবং ঝিরঝিরে পাতায় জমে আছে গাঢ় অন্ধকার, সেই অন্ধকারের ছায়া পড়েছে তলায়। ফলে গাছতলায় যে একজন মানুষ বসে আছে তার মুখটি স্পষ্ট দেখা যায় না। সাদা শার্ট পরে আছে বলে অন্ধকার গাছতলায় অস্পষ্টভাবে ফুটে আছে সে। অস্থির ভঙ্গিতে বিড়ি টানছে বলে টানে টানে বিড়ির আগুন জোনাকির মতো জ্বলছে।’

এটা প্রথম অনুচ্ছেদ।

এবার শেষ অনুচ্ছেদটায় যাব।

‘শিশি হাতে কুসুম তারপর ঘর থেকে বেরোল।

ঈশ্বরের পৃথিবী তখন আশ্চর্য রকম মোহনীয় হয়েছিল। চাঁদ ছিল আকাশে ঠিক মাঝখানে। ফুটফুটে জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছিল চরাচর। নিশীথবেলার হু হু হাওয়ায় দুলছিল গাছের পাতা, পাতার সঙ্গে মিলেমিশে দুলছিল গাছের ছায়া। বহুদূরে কেঁদে ফিরছিল একাকী এক রাতপাখি। হাওয়ার টানে পাখির কান্না কাছে আসে, দূরে যায়। রাতপোকারা গলা খুলেছিল মধুর সুরে, গানে গানে শীতল করছিল উষ্ণ মাটি। প্রকৃতির এই মহান সৌন্দর্য একটুখানি নষ্ট হয়েছিল কুসুমের কান্নায়। চোখের জলে গাল ভেসে যাচ্ছিল কুসুমের, বুক ভেসে যাচ্ছিল। উঠানে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়েছিল সে, চাঁদের দিকে তাকিয়েছিল। তারপর মুখের ওপর উপুড় করেছিল কীটনাশকের শিশি। সেই তরল আগুন বুক পুড়িয়ে নেমে যায় কুসুমের। মুহূর্তে ঝাপসা করে ফেলে চোখের দৃষ্টি। আস্তে ধীরে উঠোনের মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কুসুম। চাঁদের আলোয় নাকের ফুলখানা জ্বলজ্বল করে তার। জড়িয়ে আসা ঝাপসা চোখে কুসুম তবু দেখতে পায়, আশ্চর্য সুন্দর একখানা নদী বয়ে যায়। নদীতীর অন্ধকার করে দাঁড়িয়ে আছে এক বৃক্ষ। বৃক্ষতলায় অপেক্ষার কষ্ট বুকে নিয়ে বসে আছে এক দুরন্ত প্রেমিক। সে কোনও শাসন মানে না, সে কোনও ধর্ম মানে না।’

ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে আনিসুল হক
ছবি: সংগৃহীত

মাত্র এই দুটো অনুচ্ছেদ (এবং শেষ অনুচ্ছেদের আগে এক লাইনের আরেকটা) পড়লেই বোঝা যায় ইমদাদুল হক মিলনের শক্তির জায়গাটা কোথায়।

প্রথম কথা, গল্পটা শুরু হয় একটা গাছের বর্ণনা দিয়ে, শেষটাও হয় একটা বৃক্ষের কাছে এসে। বৃত্ত নিজেকে সম্পূর্ণ করে।

দ্বিতীয় দৃশ্যকল্প তৈরি করবার অপরূপ দক্ষতা। টানে টানে বিড়ির আগুন জোনাকির মতো জ্বলে, কিংবা জ্যোৎস্নায় নাকের ফুল জ্বলজ্বল করে—একই সঙ্গে অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, কবির দৃষ্টি, আর ডিটেইল করার শক্তি পাই এই দৃশ্যকল্পগুলোতে।

আর তৈরি হয় পরিবেশ। তৈরি হয় চরিত্র।

জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন, উপমাই কবিত্ব, আর আমি বলি, বর্ণনাই কথাসাহিত্য।

ইমদাদুল হকের বর্ণনক্ষমতার যে পরিচয় আমরা উদ্ধৃত অনুচ্ছেদগুলোয় পাই, তা তাঁর উৎকর্ষেরই সামান্য প্রমাণমাত্র।

সবাই বলেন, আমিও বলব, বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে অভিনিবিষ্ট পাঠকদের একজন হলেন ইমদাদুল হক মিলন। হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, কোনো একটা বইয়ে পড়া কোনো লাইন মনে পড়ছে, বইটার নাম মনে পড়ছে না, এমন পরিস্থিতি হলে তিনি ইমদাদুল হক মিলনকে ফোন করতেন, মিলন, এই লাইনটা কোন বইয়ে পড়েছি। মিলন ভাই জবাব দিতেন, হুমায়ূন ভাই, এটা আপনি পড়েছেন সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘জাগরী’ উপন্যাসে।

ওরহান পামুকের একটা আলোচনাগ্রন্থ আছে, ‘দ্য নাইভ অ্যান্ড সেন্টিমেন্টাল নভেলিস্ট’, যেখানে তিনি বলছেন—

‘এই হলো আমার সবচেয়ে জোর মতের একটা: উপন্যাস অনিবার্যভাবে দর্শনযোগ্য সাহিত্যিক কাহিনি।

‘নোবেলস আর অ্যাসেনসিয়ালি ভিজুয়াল লিটারারি ফিকশনস’—তিনি বহু উপন্যাস আলোচনা করে দেখিয়েছেন, ভালো ঔপন্যাসিক গল্প বলেন না, ছবি আঁকেন।

আমরা ইমদাদুল হক মিলনের এই গল্পের দুটো অনুচ্ছেদ থেকে অনুভব করতে পারি, কী অসাধারণ ছবিই না আঁকতে জানেন তিনি।

ইমদাদুল হক মিলন আমাদের সবচেয়ে বড় গিফটেড রাইটারদের একজন।

কিন্তু ইমদাদুল হক মিলন আমাদের সবচেয়ে পরিশ্রমী লেখকদেরও একজন। কী ভীষণ সাধনা, শ্রম, ভালোবাসা, সময় বিনিয়োগ করেই না তিনি লিখেছেন ‘নূরজাহান’।

সবাই বলেন, আমিও বলব, বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে অভিনিবিষ্ট পাঠকদের একজন হলেন ইমদাদুল হক মিলন। হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, কোনো একটা বইয়ে পড়া কোনো লাইন মনে পড়ছে, বইটার নাম মনে পড়ছে না, এমন পরিস্থিতি হলে তিনি ইমদাদুল হক মিলনকে ফোন করতেন, মিলন, এই লাইনটা কোন বইয়ে পড়েছি। মিলন ভাই জবাব দিতেন, হুমায়ূন ভাই, এটা আপনি পড়েছেন সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘জাগরী’ উপন্যাসে।

ইমদাদুল হক মিলন ভাইয়ের কাছে আমাদের (অন্তত আমার) বহু কিছু শেখার আছে। একটা হলো পরিপাটি হয়ে থাকা। সুন্দর করে কথা বলা। কারও নিন্দা না করা। পরচর্চা না করা। অন্যের ভালো দিকগুলো বড় করে দেখা। বড়দের সম্মান করা, ছোটদের স্নেহ করা। ইমদাদুল হক মিলন ভাইয়ের স্নেহ পেয়ে আসছি অনেক দিন হলো। মিলন ভাই অনুজ লেখকদের লেখা মন দিয়ে পড়েন, তাঁর যদি ভালো লাগে, তিনি ফোনটা তুলে নেন, সেই লেখককে ফোন করেন এবং বলেন, তোমার এই লেখাটি আমার ভালো লেগেছে। আমাকে বহু জুনিয়র লেখক বলেছেন, তাঁর লেখা পড়ে ইমদাদুল হক মিলন তাঁকে ফোন করেছিলেন।

তবে তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েও যেটা জীবনে চর্চা করতে পারিনি, তা হলো নিজের স্বাস্থ্যবিধিগুলো মান্য করে চলা। বহুদিন হলো ইমদাদুল হক মিলন ভাইয়ের মৃদু ডায়াবেটিস। মিলন ভাই রোজ শরীরচর্চা করেন এবং মিষ্টি খান না, শর্করা খুবই কম খান। এই নিয়ম-মেনে-চলা তাঁকে সুন্দর রেখেছে, আর আমার নিয়ম-মেনে-না-চলা আমাকে বেঢপ করে ফেলেছে।

মিলন ভাইয়ের কাছে আমাদের শেখার আছে: সর্বশিষ্যে শিক্ষা দেন গুরুমহাশয়, শ্রদ্ধাবান লভে জ্ঞান অন্যে কভু নয়।

অন্যের জন্য, বড়-ছোট যে-ই হোক, অন্যদের জন্য মনের ভেতর থেকে শ্রদ্ধা আসতে হবে, শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। ইমদাদুল হক মিলন সাহিত্যিকদের/গুণী মানুষদের শ্রদ্ধা করেন। এই জন্য তিনি নিজে শ্রদ্ধেয় হয়ে উঠতে পেরেছেন।

আপনারা কি ইমদাদুল হক মিলনের টিভি অনুষ্ঠান ‘কী কথা তাহার সাথে’ দেখতেন? তিনি তাঁর অনুষ্ঠানের অতিথি, তিনি যে-ই হোন না কেন, প্রবীণ কিংবা নবীন, তাঁকে কী শ্রদ্ধাই না দেখাতেন!