আলোকচিত্রে গল্প
জাতি যখন তার আত্মার কথা শোনে
অতীত পাঠের অনেক ধরনের উপায় রয়েছে। তারিখ, দলিল, স্মৃতিচারণ বা বিবরণীর মধ্য দিয়ে যেমন, আবার এমন কিছু মুহূর্ত রয়েছে যাদের সমস্ত ভার, আবেগ ও বাস্তবতা সবচেয়ে সংক্ষেপে ধারণ করে কেবল একটি আলোকচিত্র। সময়ের সীমানা ভেদ করে টিকে থাকা এসব ছবির পেছনে থাকে একাধিক গল্প। এই ধারাবাহিকের প্রতিটি পর্বে আমরা তুলে ধরব এমনই কোনো বিশ্ববিখ্যাত আলোকচিত্রের অন্তরঙ্গ ইতিহাস।
আমেরিকান গৃহযুদ্ধ ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ সালে সংঘটিত হয়, যার মূল কারণ ছিল দাসপ্রথা নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ভেতরকার গভীর মতবিরোধ। উত্তরাঞ্চল (ইউনিয়ন) দাসপ্রথা বিলুপ্তির পক্ষে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল (কনফেডারেসি) কৃষিনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থে তা বজায় রাখতে চায়। ১৮৬০ সালে আব্রাহাম লিংকন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে দক্ষিণের বহু রাজ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কনফেডারেট স্টেটস গঠন করে। বিচ্ছিন্নতাকে রোধ করে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে গিয়ে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। চার বছরের লড়াই শেষে উত্তরাঞ্চল বিজয়ী হয় এবং দাসপ্রথা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় একীভূত হয় এবং দেশের রাজনীতি, সমাজ ও অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী আমলে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, নতুন আবিষ্কার এবং সহনশীল বাজার—এই তিনের সমন্বয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত শিল্পবিস্তার ঘটে। শ্রমের চাহিদা ক্রমে বাড়তে থাকে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ ও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বহু শিশু শ্রমবাহিনীতে যুক্ত হয়ে পড়ে। সে সময় কারখানার মজুরি এতটাই কম ছিল যে পরিবারের আর্থিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য শিশুরা কাজ করতে বাধ্য হতো। ১৮৯০ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী যে শিশুদের কারখানা শ্রমিক হিসেবে সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ, তা ১৯১০ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখে।
শ্রমক্ষেত্রে শিশুদের প্রতি যে নিষ্ঠুরতা চালানো হচ্ছিল, তা দেখে লুইস হাইন এতটাই মর্মাহত হয়েছিলেন যে তিনি শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটির হয়ে অনুসন্ধানী আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও শিশুদের নিয়োগ দিতে আগ্রহী ছিল। কারণ, তারা অদক্ষ শ্রমে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক কম মজুরিতে কাজ করত। এ ছাড়া তাদের ছোট্ট হাত ও আঙুল সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি ও খুঁটিনাটি যান্ত্রিক অংশ সামলাতে অধিক দক্ষ ছিল। শিশুদের শ্রমকে সেই সময় পরিবারের সামগ্রিক অর্থনীতির অংশ হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। অভিবাসী পরিবার ও গ্রামাঞ্চল থেকে আসা শ্রমিকেরা প্রায়ই নিজেদের সন্তানদের কাজে পাঠাতেন, এমনকি অনেকে সন্তানদের সঙ্গে পাশাপাশি কাজও করতেন।
কিন্তু এই শিশুদের জীবনে ছিল না শৈশবের কোনো স্বাদ। আগামীর জন্য নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগস্বরূপ বিদ্যালয়ে যাওয়ার ন্যূনতম অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত ছিল। শিল্পকারখানার প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে করতে বহু শিশুর স্বাস্থ্যে মারাত্মক ক্ষতি দেখা দিতে থাকে। অনেকেই পুষ্টিহীনতায় ভুগত; অধিকাংশের শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতো, কারও কারও মেরুদণ্ড বেঁকে যেত। কয়লা খনি ও তুলা কারখানার শিশু-শ্রমিকদের মধ্যে যক্ষ্মা, ব্রঙ্কাইটিসসহ নানা পেশাগত রোগ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দীর্ঘ সময়ের কঠোর পরিশ্রমে সৃষ্ট শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তির কারণে তাদের দুর্ঘটনার হার হতো অত্যন্ত বেশি।
বিংশ শতকের শুরুতে বহু আমেরিকান শিশুশ্রমকে সরাসরি ‘শিশুদাসত্ব’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং এর অবসানের দাবি তুলতে থাকেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, দীর্ঘ সময় শ্রম দিতে বাধ্য হওয়ায় শিশুরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা তাদের উন্নত ভবিষ্যৎকে চিরতরে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে শিশুশ্রম তাদের আজীবন অশিক্ষা, দারিদ্র্য ও দুর্দশার মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলছে।
কারখানার মালিকপক্ষ শিশুশ্রমের বাস্তবিক চিত্র জনসমক্ষে প্রকাশিত হতে দিতে চাইত না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেন তাঁর এই ছবি তোলার ব্যাপারটা কেউ জানতে না পারে, সে জন্য হাইন নানা ছদ্মবেশে কারখানার আলোকচিত্র ধারণ করতেন।
শিশুশ্রমের অবসান ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে ১৯০৪ সালে কিছু প্রগতিশীল সংস্কারক ‘ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটি’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৭ সালে সংগঠনটি কংগ্রেসের স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর তারা বিভিন্ন তদন্তকারী দল নিযুক্ত করে অস্বাভাবিক পরিবেশে শিশুদের শ্রমের প্রমাণ সংগ্রহ করে এবং শিশুদের দুরবস্থার ছবি ও পরিসংখ্যান প্রদর্শনের মাধ্যমে জনমত গঠনের কাজ শুরু করে। এসব প্রচেষ্টার ফলেই ১৯১২ সালে ‘চিলড্রেনস ব্যুরো’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা শিশুসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারের জন্য একটি ফেডারেল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত। ১৯১৩ সালে এই ব্যুরো শ্রম বিভাগে স্থানান্তরিত হয়।
নিউইয়র্ক সিটির একজন আলোকচিত্রী লুইস হাইন বিশ্বাস করতেন, একটি ছবি কখনো কখনো ভাষার চেয়ে শক্তিশালী গল্প বলতে পারে। শ্রমক্ষেত্রে শিশুদের প্রতি যে নিষ্ঠুরতা চালানো হচ্ছিল, তা দেখে তিনি এতটাই মর্মাহত হয়েছিলেন যে তিনি শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটির হয়ে অনুসন্ধানী আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
ফলে হাইন দেশজুড়ে ভ্রমণ করে নানা শিল্পকারখানায় শিশুদের কাজের পরিবেশের ছবি ধারণ করতে থাকেন। তিনি কয়লার খনিতে, মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানায়, বস্ত্রকল ও ক্যানিং কারখানায় শিশুদের শ্রমের ছবি তোলেন। রাস্তায় জুতা চকচকে করা বালক, সংবাদপত্র বিক্রেতা, ফেরিওয়ালাদেরও তিনি ক্যামেরাবন্দী করেন। কারখানার মালিকপক্ষ শিশুশ্রমের বাস্তবিক চিত্র জনসমক্ষে প্রকাশিত হতে দিতে চাইত না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারখানার মালিকেরা যেন তাঁর এই ছবি তোলার ব্যাপারটা জানতে না পারে, সে জন্য হাইন নানা ছদ্মবেশে কারখানায় প্রবেশ করতেন এবং আলোকচিত্র ধারণ করতেন।
প্রতিটি ছবির সঙ্গে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও পরিসংখ্যান টুকে নিতে হাইন ছিলেন অত্যন্ত যত্নবান। সঠিক বর্ণনা সংগ্রহের জন্য তিনি বিভিন্ন কৌশলে শিশুদের সঙ্গে কথা বলতেন এবং লুকিয়ে দ্রুত নোট লিখে ফেলতেন। যেহেতু ছবিগুলো গোপনে তোলা, ফলে হাইন মনে করতেন—তাঁর ছবির প্রতিটি তথ্য শতভাগ সত্য এবং নিখুঁত হতে হবে।
নিজের ছবিগুলো যে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নয়, বরং ফটোগ্রাফারের দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ বহন করে—তা উপলব্ধি করে হাইন তাঁর কাজকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘ফটো-ইন্টারপ্রিটেশন’। এটি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে আলোকচিত্রকে নিছক বাস্তবতার যান্ত্রিক অনুলিপি হিসেবে নয়, বরং ফটোগ্রাফারের ব্যক্তিগত অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, ব্যাখ্যাসহ উপস্থাপন করা হয়।
নিজের ছবিগুলো ফটোগ্রাফারের দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ বহন করে—তা উপলব্ধি করে হাইন তাঁর কাজকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘ফটো-ইন্টারপ্রিটেশন’। হাইন বিশ্বাস করতেন, একটি আলোকচিত্র শিল্পীর চোখে দেখা মানসিক ও সামাজিক সত্যের অনুবাদ।
হাইন বিশ্বাস করতেন, একটি ভালো ছবি ফটোগ্রাফারের মনে যে ছাপ সৃষ্টি করে, তিনি তা অন্যদের কাছে পুনরায় উপস্থাপন করতে চান। একটি আলোকচিত্র কেবল দৃশ্যগত তথ্য নয়, বরং শিল্পীর চোখে দেখা মানসিক ও সামাজিক সত্যের অনুবাদ, যা দর্শকের কাছে একটি ব্যাখ্যামূলক ধারণা পৌঁছে দেয়।
লুইস হাইনের ১৯১১ সালের ‘ব্রেকার বয়েজ’ আলোকচিত্রটি কেবল একটি ছবি নয়, বরং এটি এমন এক দৃশ্যমান দলিল, যা আমেরিকার শ্রমনীতি ও জননৈতিক বোধকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। পেনসিলভানিয়ার এক কয়লা-পরিষ্কারের কারখানার বিপজ্জনক পরিবেশে ধারণ করা এই আলোকচিত্র হাইনের বিস্তৃত আলোকচিত্রকর্মের সঙ্গে মিলিত হয়ে চলমান শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে এক অপ্রতিরোধ্য অভিযোগপত্র হয়ে ওঠে। আলোকচিত্রটি আমেরিকান জনসাধারণের চোখের সামনে সামাজিক বাস্তবতাকে এক নির্মম সত্যরূপে হাজির করে।
ছবিটিতে প্রায় আড়াই ডজন কিশোরকে দেখতে পাওয়া যায়, যাদের প্রায় সবার বয়স ন্যূনতম বৈধ কর্মবয়সের নিচে। তাদের গায়ে কয়লা-ধুলায় কালো হয়ে যাওয়া পোশাক। তবে ছবিটি শিশুদের কঠোর শ্রমদৃশ্য নয়, বরং ইওয়েন ব্রেকারের ধোঁয়াটে অন্ধকারের বাইরে দাঁড়ানো অবস্থায় হাইন তাদের আলোকচিত্রে ধারণ করেছেন। কেউ সন্দেহমিশ্রিত ক্লান্ত দৃষ্টিতে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে, কেউবা রক্ষণাত্মক দৃঢ়তায় চোখ মেলেছে। ‘ব্রেকার বয়’ নামের মূল অর্থই জানিয়ে দেয়, তাদের কাজের প্রকৃতি কেমন ছিল। এক টানা শব্দমুখর, শ্বাসরুদ্ধ পরিবেশে বসে প্রবাহিত কাঁচা কয়লার ভেতর থেকে হাত দিয়ে শিলা ও অশুদ্ধ পদার্থ আলাদা করা। এ কাজ ছিল শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কয়লা–ধুলায় শিশুদের শ্বাসযন্ত্র নষ্ট হওয়া কিংবা আঙুলের, হাতের ক্ষত হওয়া ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। মাত্র ছয় বছর থেকে শুরু করে সাধারণত ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা প্রতিদিন ১০ কিংবা তারও বেশি ঘণ্টা সামান্য মজুরির বিনিময়ে এই শ্রম দিত।
লুইস হাইন ছিলেন প্রশিক্ষিত সমাজবিজ্ঞানী ও সমাজ সংস্কারক। তিনি ‘ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটি’র হয়ে কাজ শুরু করার পর থেকে সংস্থাটি বুঝেছিল, কেবল লিখিত প্রতিবেদন দিয়ে জনগণের বিবেককে জাগানো সম্ভব নয়।
লুইস হাইন কেবল একজন আলোকচিত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন প্রশিক্ষিত সমাজবিজ্ঞানী ও সমাজ সংস্কারক। ১৯০৮ সাল থেকে তিনি ‘ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটি’র হয়ে কাজ শুরু করার পর থেকে সংস্থাটি বুঝেছিল, কেবল লিখিত প্রতিবেদন দিয়ে জনগণের বিবেককে জাগানো সম্ভব নয়। এ কাজ সহজ করতে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করে হাইনের আলোকচিত্র। ফলে প্রায়ই তাঁকে গোপন পরিচয় ধারণ করতে হতো। কখনো তিনি আগুন-নিরাপত্তা পরিদর্শক, বাইবেল বিক্রেতা কিংবা শিল্পকারখানার আলোকচিত্রী সেজে বিভিন্ন কলকারখানা ও খনিতে প্রবেশ করতেন এবং আলোকচিত্র ধারণ করতেন।
‘ব্রেকার বয়েজ’ ছবিটির শক্তি নিহিত এর মানবিক উপস্থাপনে। হাইনের আলোকচিত্র বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়, স্লাইড প্রদর্শনীতে দেখানো হয় এবং দেশের নানা প্রদর্শনীতে স্থান পায়। ফলে এগুলো রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টিতে সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম হয়ে ওঠে। হাইনের বিশ্বাস ছিল, ফটোগ্রাফ সত্যকে এমনভাবে উদ্ঘাটন করে, যা কোনো ছাপা শব্দে সম্ভব নয়।
হাইনের ধারণ করা ছবি, বিশেষত খনিশ্রমিক শিশুদের প্রতিচিত্র প্রগতিশীল যুগের সংস্কারকর্মীদের একত্র করে এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের পথ সুগম করে। যদিও অঙ্গরাজ্যভিত্তিক আইন প্রয়োগ কঠিন ছিল। তবু শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে জনরোষ ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৩৮ সালে ফেয়ার লেবার স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্ট পাস হয়, যাতে ন্যূনতম মজুরি, সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘অত্যাচারমূলক শিশুশ্রম’ নিষিদ্ধ করা হয়। মূলত ও কার্যত যুক্তরাষ্ট্রে ব্রেকার বয়দের যুগ সমাপ্ত হয় এবং এক নৈতিক সাক্ষী হিসেবে আলোকচিত্রীর ভূমিকা স্থায়ী করে।