কেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা পছন্দ করেন পাঠকেরা

আজ ২ নভেম্বর কলকাতার ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন। ওপার বাংলায় তো বটেই, বাংলাদেশেও রয়েছে তাঁর অসংখ্য পাঠক। কেন শীর্ষেন্দুর লেখা পছন্দ করেন পাঠকেরা, লেখকের জন্মদিনে দুরবিন দিয়ে তা-ই দেখার চেষ্টা।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ছবি: প্রথম আলো

ছোটবেলা থেকেই বই ভালো লাগত। এমনকি স্কুলের বইও। বছরের শুরুতে ক্লাসের জন্য বই কিনতে যাওয়াটা একটা অ্যাডভেঞ্চারের মতন লাগত। আব্বা-আম্মা নিয়ে যেত নিউমার্কেটের বইয়ের দোকানে, সেখানে কাগজ আর ধুলায় মিলেমিশে অদ্ভুত একটা গন্ধ। বাড়ি ফিরতাম একসঙ্গে আট-নয়টা বইয়ের মালিক হয়ে খুশিতে বাকবাকুম করতে করতে। বারবার মলাটগুলো ছুঁয়ে দেখতাম, খুললেই পৃষ্ঠাজুড়ে ছোট ছোট ছাপা অক্ষর, নাক ডুবিয়ে বইয়ের ঘ্রাণ টেনে টেনে নিজের ভেতরে নিতাম। আর প্রতিবছর নিজের কাছে নিজেই প্রতিজ্ঞা করতাম, সব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলতে হবে। এত লাফালাফির পরও স্কুল শুরু হওয়ার আগে পড়া হতো শুধু বাংলা গল্পের বই আর ‘চয়নিকা’ নামের ছড়ার বইটা।

ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টার্সে আমাদের তিনতলার ফ্ল্যাটের সামনের বারান্দায় আম্মা একটা লাইব্রেরি করে দিয়েছিল তিন বোনের জন্য। লাইব্রেরি বলতে একটা বইয়ের তাক, তাতে ছোটদের কিছু বই। প্রতি মাসে একটা করে বই পেতাম আম্মার কাছ থেকে, আর ছিল কিছু উপহার জন্মদিনে বা অন্য কোনো সময়। ছোটদের বই সব—বিভিন্ন দেশের রূপকথা, বিখ্যাতদের জীবনী, ‘রহস্যপত্রিকা’ এসব। টিফিনের টাকা জমিয়ে সেবা প্রকাশনীর কিশোর থ্রিলার কিনতাম। সেই সময় পড়া নিয়ে বাছবিচারের বিলাসিতার উপায় ছিল না, যা হাতে পেতাম তা-ই পড়তাম, বুঝি আর না–বুঝি। ছাপা হয়েছে, বই হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে পড়ার জন্যই তো, নাকি?

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

আমাদের বাসার ভেতরের দিকের টানা বারান্দাটা গ্রিল দিয়ে ঘেরা ছিল। সেখানে আমরা তিন বোন দৌড়াদৌড়ি করে ‘ইরাক-ইরান যুদ্ধ’ খেলতাম আর দোতলার চাচির দুপুরবেলার ঘুম হারাম করতাম। একটা ছোট করিডর চলে গেছে বারান্দা থেকে ইংরেজি এল অক্ষরের মতো বাঁক নিয়ে রান্নাঘরের দিকে। গ্রিলের সঙ্গে বাঁধা টবে আম্মার গোলাপবাগান আর একটা মেহেদিগাছ, যার গোড়ায় আমরা পানি ঢালতাম আর পাতা ছিঁড়তে হলে যেতে হতো চারতলায় সালমা আপাদের বাসায়।

তখন ক্লাস ফাইভ বা সিক্সে পড়ি। সালমা আপা কলেজে পড়ে। এক গরমের দুপুরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। ছুটির দিন, বাসা একদম নীরব, রবীন্দ্রনাথের ‘রৌদ্রময়ী রাতি’র মতন। ওপরতলার বারান্দা থেকে হাত বাড়িয়ে একটা বই দেখাল সালমা আপা। ভারী বই, নতুন মলাটের, নাম—‘দূরবীন’, কিন্তু লেখকের নাম অত দূর থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। সালমা আপা জানান, আমি চাইলে একবেলার জন্য বইটা ধার নিতে পারি। তাঁর বান্ধবীর বই। কিন্তু ধার নেওয়ার একটাই শর্ত, পড়া শেষ হোক আর না–হোক, বিকেলের মধ্যে ফেরত দিতেই হবে। লাফাতে লাফাতে চারতলায় গিয়ে বই নিয়ে এলাম।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

সেই প্রথম নাম দেখলাম ‘শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়’। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে এমনকি ঢাকার রাস্তাও মাঝেমধ্যে চুপচাপ হয়ে যেত। সেই গ্রীষ্মের দুপুরে, বাইরের রাস্তায় রিকশা চলার শব্দের সঙ্গে মিশছিল ফুটপাতের ওপরে সাইকেল সারাতে থাকা ছেলেটার যন্ত্রপাতির শব্দ, কয়েকটা কাকের ডাক আর দু–একটা গাড়ির হুসহাস। বইয়ের প্রথম লাইনে পড়ছিলাম—

‘১৯২৯ সালের শীতকালের এক ভোরে হেমকান্ত চৌধুরীর হাত থেকে দড়িসমেত কুয়োর বালতি জলে পড়ে গেল। অসহনীয় শীতের সেই নির্জন ব্রাহ্মমুহূর্তের অন্ধকারে হেমকান্ত অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে শুনলেন জলে দড়ি ও বালতির পড়া ও ডুবে যাওয়ার শব্দ। তাঁর জীবনে এ রকম ঘটনা এই প্রথম।’

মনে হচ্ছিল, আগে কোনো দিন এ রকম কিছু পড়িনি। সেই বয়সেও টের পাচ্ছিলাম, এই বালতি পড়ে যাওয়া সাধারণ কোনো ঘটনা না, আরও ভাবার কিছু আছে এর ভেতরে। আর সব মিলিয়ে যে দৃশ্যটা ভেসে উঠল চোখের ওপরে, তা দিয়ে আমি কী করব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমার পরিচিত জগৎ থেকে সবকিছুই খুব আলাদা। চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে ফুটছিল, উঠানের থেকে কিছুটা দূরে বারান্দায় রাখা হারিকেন, তার আবছা আলোয় হেমকান্ত, জমিদারবাড়ি, বাগান, এককোণের নির্জন শেওলা জমা জায়গাটুকু, ব্রুহাম গাড়ির পাদানি, যেখানে হেমকান্ত একা বসে বসে ভাবতেন, রঙ্গময়ী, মৃত্যুশয্যায় কোকাবাবু আর তার বাড়ির সামনে বাঁধা হরিণ...বালিহাঁস শিকার করে আনা কোকাকাবুর নাতি...যেন শুধু আমার জন্যই অন্য একটা পৃথিবীর দরজা আস্তে আস্তে খুলে যাচ্ছিল। যে পৃথিবীর খুব অল্পই বুঝতে পারছিলাম তখন, তবু ১৯৮৬–৮৭ সালের গ্রীষ্মে বসে আমি ১৯২৯ সালের শীতকাল অনুভব করছিলাম।

শীর্ষেন্দুর উপন্যাসের চরিত্ররা যে কত রকম! খুনি থেকে শুরু করে সাধু। কেউ সংসারে বাস করেও সন্ন্যাসী। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, লেখক হিসেবে নিজেকে তিনি কোনো চরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেন না, তাঁর বইয়ের চরিত্ররা নিজেদের মতোই চলেফিরে বেড়ায়, যেন এই পৃথিবীর মতন একটা প্যারালাল দুনিয়ায় থাকে তারা, যেন লেখক নিজেও আগের মুহূর্তে জানে না ঠিক পরের মিনিটে তারা কী করবে।

পরের অধ্যায়েই চমক। দুজন মাতাল দৌড়াচ্ছে। অদ্ভুত ভাষায় কথা বলছে। তারা কারা? মাতাল হলে তো ভালো লোক হওয়ার কথা নয়। অথচ যত পড়ছিলাম, ধ্রুবর উল্টাপাল্টা ব্যবহার খুব টানছিল। সমান্তরালভাবে বলা দুই প্রজন্মের গল্প আগে পড়িনি। তখন বুঝতে না পারলেও এখন বুঝি, এ রকম আলগোছে পাঠককে এক সময় থেকে আরেক সময়ে আনা-নেওয়া করা খুব সহজ কাজ না। যখন পড়ছিলাম, হেমকান্তর সময় থেকে ধ্রুবর সময়ে যাওয়া–আসা করতে কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না, অথচ দুই যুগের ব্যবধানও টের পাচ্ছিলাম। আর এই দুই সময় মিলে যেন একটা ক্যানভাস, যেখানে সমস্ত পারিপার্শ্বিক, ইতিহাস, আঙ্গিকসহ কৃষ্ণকান্ত মূর্ত হয়ে উঠছিলেন।

বইটা ৬২০ পৃষ্ঠার। আমি ২০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পৌঁছেছিলাম দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত একটানা পড়ে। এর মধ্যে সালমা আপা কয়েকবার তাড়া দিলেও সময় নিচ্ছিলাম, চাইছিলাম যতটুকু পড়ে নেওয়া যায়। হলো না। বিকেলে ফেরত দিতেই হলো বইটা। কত দিন যে সবকিছু থেমে ছিল! মনে মনে বাকিটা ভাবতাম। ধ্রুবর সঙ্গে রেমির ভাব করে দিতে চাইতাম। বিশাখা আর শশীভূষণকে নিয়ে অনেক কিছু কল্পনা করতাম। রঙ্গময়ীকে সেই সময়েও খুব ভালো লেগেছিল। মনে মনে ১০ বছর বয়সের কৃষ্ণকান্তকে ভাবতাম, আমারও বয়স তখন কাছাকাছি। ক্লাসে একঘেয়ে লাগলে ১৯২৯ সাল থেকে কৃষ্ণকান্তকে টেনে এনে পাশের বেঞ্চে বসিয়ে দিতাম মনে মনে। আর ভাবতাম, জীবনে কখনো কি আরেকবার ‘দূরবীন’ বইটা হাতে নেওয়ার সুযোগ হবে? বাকি গল্পটা জানতে পারব কোনো দিন? এমন একটা বই যে দোকানে গিয়ে কিনে আনার মতন সহজলভ্য হতে পারে, সে রকম কল্পনাও মনে আসেনি তখন।

এর কিছুদিন পর একবার কুমিল্লায় আমার ফুফুর বাসায় বেড়াতে গেলাম। শুধু এক রাত থাকা হবে। সারা দিন খেলতে খেলতেই গেল। রাতে দেখি ফুফুর বুকশেলফে ‘দূরবীন’। ছেড়ে যাওয়া প্রেমিক ফিরে এলেও মানুষ বোধ হয় এত খুশি হয় না! কিছুক্ষণ অবাক হয়ে অন্য বইগুলোর মাঝখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা বইটা দেখলাম। কী নীরবে দাঁড়ানো, অথচ এর ভেতরে কী ধুন্ধুমার কাণ্ড হচ্ছে, কজন তার খবর রাখে? এবার বইটা নিয়েই প্রথমে পেছনের মলাটে লেখকের ছবি দেখলাম। তত দিনে আমার কল্পনার শীর্ষেন্দু একটু একটু ধ্রুব আর একটু একটু কৃষ্ণকান্তর মতন দেখতে। যাঁকে দেখলাম, তিনি তাঁদের কারও মতোই নন। তবে তাঁকেও খুব পছন্দ হলো। চশমা পরা এক তরুণের ছবি। হাতের ওপরে থুতনি রাখা, বোধ হয় পড়ার টেবিলে, মৃদু হাসি, চোখের দৃষ্টি ক্যামেরা থেকে দূরে। যেন অন্যমনস্ক, কল্পনায় বিভোর। খুব সুন্দর চোখ। জানলাম তাঁর জন্ম ২ নভেম্বর। আরে বৃশ্চিক রাশি! আমিও তো! এ রকম আরও কত মিল, তিনি ময়মনসিংহে ছিলেন ছোটবেলায়, আমার আম্মা তো টাঙ্গাইলের। পাঠক হিসেবে নাকি সর্বগ্রাসী, আমিও তো তা–ই। এই ছবি পরে আরও কত বইয়ের মলাটে দেখে দেখে জীবনের অংশ হয়ে গেছে! সেদিন মনে না হলেও পরে ওই ছবি তোলার মুহূর্ত নিয়েও ভেবেছি। এই অন্যমনস্কতা নিশ্চয়ই ছবি তোলার জন্যই। কে তুলেছিল ছবিটা, কোনো বন্ধু কি? এ রকম বসে থাকার ভঙ্গি আর হাসি কি আয়নার সামনে প্র্যাকটিস করা?

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

সেদিনও ‘দূরবীন’ পড়ে শেষ করতে পারিনি। তার আগেই আমাদের ঢাকা ফেরার সময় হয়ে গেল। আরও বেশ কিছু বছর পার হয়েছে তারপর। আমরা অস্ট্রেলিয়ায় চলে এসেছি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বেশ কিছু বই তত দিনে পড়া হয়েছে। ক্লাস টেনে যখন পড়ি, স্কুলের প্রজেক্ট হিসেবে ‘ভেলা’ নামের একটা গল্প অনুবাদ করেছিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে লেখা, এমন এক সময় যখন সবকিছুই কৃত্রিম। ফাইবার গ্লাসের গাছ, সাজানো আকাশ। বাড়ির ধুলাবালু পরিষ্কার করা হয় লেজার রশ্মি দিয়ে। মানুষের কিছু পড়তে হয় না, কানের কাছে একটা ইনফরমেশন পিন গুঁজে দিলেই সব তথ্য মস্তিষ্কে জমা থাকে। সে সময় বিয়ে নিষিদ্ধ, কোনো সম্পর্ক তৈরি হয় না কারও সঙ্গে, বিজ্ঞান এতটা এগিয়ে গেছে যে মৃত্যু প্রায় ‘নাই’ হয়ে গেছে। শরীর, মস্তিষ্ক—সবকিছু বদলে বদলে মানুষ টিকতে থাকে বছরের পর বছর। ক্লান্তিকর টিকে থাকা। ভয়াবহ গল্প। তাঁর আরও কিছু গল্প ও উপন্যাসে এ রকম আশঙ্কা ঘুরেফিরে এসেছে।

একসঙ্গে কত কিছু মনে আসছে! এত কম সময়ে কী করে বলি? শুধু জানি, সেই আশির দশক থেকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, তাঁর গল্প আর গল্পের মানুষগুলোর মধ্য দিয়ে আমার জীবনের অংশ হয়ে গেছেন। কত প্রিয় বই সব আমার—‘মানবজমিন’, ‘পার্থিব’, ‘পারাপার’...নিজে তো পড়িই আব্বা-আম্মাকেও পড়ে শোনাই। কী তাঁর অদ্ভুত চরিত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে দুষ্টামি করার সময় ‘যাও পাখি’র সোমেন আর অনিমার মতো বলতাম—‘যেদিন চাঁদ উঠবে, যেদিন ফুল ফুটবে’। বোধ হয় ‘লাল নীল মানুষ’ উপন্যাসে একটা চরিত্র বিড়ালের চোখে পৃথিবী দেখত, বহু আগের পড়া আবছা মনে পড়ে। ‘চক্র’ উপন্যাসে আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ধীরেন কাষ্ঠ, কী অবাক করা মানুষ একজন।

শীর্ষেন্দুর উপন্যাসের চরিত্ররা যে কত রকম! খুনি থেকে শুরু করে সাধু। কেউ সংসারে বাস করেও সন্ন্যাসী। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, লেখক হিসেবে নিজেকে তিনি কোনো চরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেন না, তাঁর বইয়ের চরিত্ররা নিজেদের মতোই ঘুরেফিরে বেড়ায়, যেন এই পৃথিবীর মতো একটা প্যারালাল দুনিয়ায় থাকে তারা, যেন লেখক নিজেও আগের মুহূর্তে জানে না ঠিক পরের মিনিটে তারা কী করবে।

‘দূরবীন’ পড়া হয়েছে শেষ পর্যন্ত। কয়েকবার, ভাবছি আরও একবার পড়ার সময় হলো। সেই ১০ বছর বয়সে ৪৫ বছরের হেমকান্তকে কত বয়স্ক মনে হয়েছিল। বন্ধু সচ্চিনানন্দকে লেখা তাঁর চিঠিগুলোর মর্ম সেদিন বুঝিনি। এখন হয়তো অন্য রকম লাগবে। অফিস শেষে বেশ রাত করে একদিন ফিরছিলাম সেন্ট কিল্ডা রোডে গাড়ি নিয়ে। দুই পাশের মেপলগাছগুলো থেকে এই শীতকালে পাতা ঝরে গেছে, শূন্য গাছের ডালের ওপরে চাঁদের আলো পড়ে সব অচেনা লাগছিল, আর মাথার ভেতরে যেন হেমকান্ত কথা বলছিল, ‘বাঁ হাতের শক্ত মুঠিতে ছিল দড়ির লাছি এবং শেষ গিঁট। ডান হাতও সতর্ক ছিল। তবু কেন তাঁর দুটি হাতের কোনোটাই ধরে রাখল না দড়িটাকে? অসতর্কতা নয়, অন্যমনস্কতা নয়। হেমকান্তর মনে হলো, তাঁর দুটি হাত ছেড়ে দিতে চেয়েছিল দড়িটাকে, তাই দিল। হেমকান্তর কিছু করার ছিল না...’