বার্বির জয়যাত্রা: নারীর অবমাননা নাকি ক্ষমতায়নের পক্ষে

গ্রাফিকস: প্রথম আলো

গ্রেটা গারউইগ পরিচালিত ‘বার্বি’ আর ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমা দুটি প্রায় একই সময়ে মুক্তি পায়। দেখা গেল, হাইপের দিক থেকে ‘বার্বি’ পেছনে ফেলে দিয়েছে ‘ওপেনহেইমার’কেও। অ্যাটম বোমার ‘জনক’ ওপেনহেইমারের বায়োফিকশন তলিয়ে গেল খেলনা পুতুলের কাছে! পারমাণবিক ধ্বংসলীলার চেয়েও মানবিক পুতুলের বেশি মনোযোগপ্রাপ্তি সম্ভবত পৃথিবীর জন্যও আনন্দের ব্যাপার! তবে ব্যাপারটা এত সরল নয় মোটেও।

১.

ছোট্ট মেয়ে বারবারা। পুতুল খেলতে পছন্দ করে খুব। আর কী সৌভাগ্য, তার মা–বাবাই কিনা খেলনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাটেলের অন্যতম সহ-উদ্যোক্তা। মা রুথ হ্যান্ডলার লক্ষ করলেন, বাচ্চা-পুতুলের চেয়ে পরিণত বয়সী কমিকস-কার্টুন তথা পুতুলের প্রতিচ্ছবিই মেয়ে যেন বেশি পছন্দ করছে। এমনকি বাচ্চা–পুতুলগুলোকেও সে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো করে সাজায়, সেভাবেই তাদের চরিত্রায়িত করে।

রুথের মনে এল ভিন্ন ভাবনা। চাহিদা আছে অনুমান করে তিনি তাঁর স্বামী (ম্যাটেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা) এলিয়টকে প্রাপ্তবয়স্ক পুতুল নির্মাণ ও বাজারজাতকরণের প্রস্তাব দেন। শুরুতে ম্যাটেলের ক্রিয়েটিভ টিম প্রস্তাবটিকে খুব একটা আমলে নেয়নি।

বছরখানেক পরেই, ১৯৫৬ সালে সপরিবার সুইজারল্যান্ড ভ্রমণের সময় রুথ হ্যান্ডলার ‘বিল্ড লিলি’ নামে একটি এডাল্ট জার্মান পুতুল দেখতে পান। মনে মনে যেমন ভেবেছিলেন, পুতুলটি যেন ঠিক তা–ই। তিনটি কিনে নিলেন। মেয়ে ও স্বামীকে দিলেন একটা করে, আরেকটি ম্যাটেলের ক্রিয়েটিভ টিমকে। এক বছর খাটুনির পর সেটিরই অনুসরণে ম্যাটেল বানিয়ে ফেলল বার্বি—পৃথিবীর প্রথম জনপ্রিয় প্রাপ্তবয়স্ক পুতুল। বার্বি নামটি নেওয়া হলো মেয়ে বারবারার নামানুসারে।

ট্রিবিউট টু স্পেস ওডিসি: বার্বি (২০২৩) সিনেমার প্রথম দৃশ্যে মার্গট রবি
ছবি: সংগৃহীত
গ্রেটা গারউইগ পরিচালিত ‘বার্বি’ আর ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমা দুটি প্রায় একই সময়ে মুক্তি পায়। দেখা গেল, হাইপের দিক থেকে ‘বার্বি’ পেছনে ফেলে দিয়েছে ‘ওপেনহেইমার’কেও। অ্যাটম বোমার ‘জনক’ ওপেনহেইমারের বায়োফিকশন তলিয়ে গেল খেলনা পুতুলের কাছে!

ম্যাটেলের মতো বড় প্রতিষ্ঠান যাদের আইডিয়া কপি করে বার্বি বাজারজাত করল, লিলিডলের নির্মাতারাও বসে রইল না। মামলা করে দিল ম্যাটেলের বিরুদ্ধে। ম্যাটেল অবশ্য আদালতের বাইরেই মীমাংসা করে নিল। লিলিডলের স্বত্ব কিনে নেয় মালিকপক্ষের কাছে থেকে।

১৯৫৯ সালের ৯ মার্চ আবির্ভূত হয়ে প্রথম বছরেই বাজিমাত করে বার্বি। তিন বছরের মধ্যে ম্যাটেলের উৎপাদন ক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে গেল বার্বির চাহিদা, দ্রুত সম্প্রসারিত হতে থাকে ব্যবসা। শুরু হলো বার্বির জয়যাত্রা।

২.

কিন্তু পুতুল হলেও মেয়েমানুষ, রক্ষে কী আর আছে!

তার রুচি, ইচ্ছা ও স্বাধীনতার স্পৃহা—সবই যে মোরাল পুলিশিংয়ের শিকার হবে, এতে আশ্চর্য কী! একই প্রোডাক্ট লাইন হওয়া সত্ত্বেও বার্বির ফ্রেন্ড (কখনো বয়ফ্রেন্ড) কেন্‌কে নিয়ে কিন্তু তেমন কোনো কথা নেই, হয়তো সে ছেলে–পুতুল বলেই।

বার্বির অনুপ্রেরণা লিলিডল
ছবি: সংগৃহীত

বার্বি-পূর্ব যুগের পুতুল মানেই ছিল শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী। পুতুল খেলার ছলে মেয়েরা মাতৃত্ব ও ঘর–সংসারের ধারণা পাবে, ভবিষ্যতের একজন আদর্শ গৃহিণী হিসেবে বেড়ে উঠবে, এসবই ছিল মূল লক্ষ্য। পুতুলের এমন প্রথাসিদ্ধ ভূমিকা ভেঙে দিল বার্বি। শিশু নয়, মাতৃমূর্তি নয়, নয় গার্হস্থ্য জীবনের পাঠশালা—বরং বার্বি যেন একজন স্বাধীনচেতা নারী। যাকে দেখে মেয়েরা পাবে সৌন্দর্যচেতনা ও আত্মমর্যাদার ধারণা। শুধু মা–ই নয়, সে যেন হয়ে উঠতে পারে যে কেউ—মডেল, অভিনেত্রী, অ্যাথলেট, ডাক্তার, বৈমানিক বা রাষ্ট্রপ্রধান; যেকোনো পেশা ও সামাজিক অবস্থানে সঞ্চরণশীল এক সত্তা।

অমিত সম্ভাবনার ইউটোপিয়ায় যাদের বসবাস, তারাই যেন বার্বি। তাহলে কেন এত আলোচনা–সমালোচনার ঝড়? প্রাথমিকভাবে তো বার্বিকে ফেমিনিস্ট ক্যারেক্টারই মনে হয়। যদিও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাটেল সচেতনভাবে বিশেষ কোনো ট্যাগিংয়ে সীমিত করতে চায়নি বার্বিকে।

অন্যদিকে বার্বি সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে নারীবাদীদের দ্বারাই। প্রথমে আলোচনার লক্ষ্যবস্তু হয় শারীরিক গঠনের কারণে। উন্নত বক্ষ ও প্রায় অসম্ভব রকমের সরু কোমরের মাধ্যমে বার্বির শরীর—নারীদের যৌনবস্তু ভাবা ভোগবাদী প্রবণতাকে পুঁজি করতে চেয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

কিন্তু পুতুল হলেও মেয়েমানুষ, রক্ষে কী আর আছে! তার রুচি, ইচ্ছা ও স্বাধীনতার স্পৃহা—সবই যে মোরাল পুলিশিংয়ের শিকার হবে, এতে আশ্চর্য কী! একই প্রোডাক্ট লাইন হওয়া সত্ত্বেও বার্বির ফ্রেন্ড (কখনো বয়ফ্রেন্ড) কেন্‌কে নিয়ে কিন্তু তেমন কোনো কথা নেই, হয়তো সে ছেলে–পুতুল বলেই।

এ অভিযোগকে একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যায় না। যে জার্মান পুতুলকে সামনে রেখে বার্বির শারীরিক কাঠামোর প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিলেন হ্যান্ডলার—সেটি ছিল মূলত একটি সেক্স অবজেক্ট। প্রাপ্তবয়স্কদের ম্যাগাজিন ‘বিল্ড’–এর যৌন–উদ্দীপক এক কার্টুন ক্যারেক্টার। গঠন ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ীই লিলিডল নামে পুতুলটিকে তারা বাজারজাত করেছিল। প্রথম দিকে যা আবার পাওয়া যেত শুধু সেক্স শপগুলোতেই। পরবর্তী সময়ে যখন দেখা গেল বাচ্চারাও এ পুতুল নিয়ে খেলতে পছন্দ করে, তখন ধীরে ধীরে তা সুলভ হতে থাকে অন্য সুপারশপগুলোতে। এ রকম এক দোকানেই রুথ হ্যান্ডলার খুঁজে পেয়েছিলেন বার্বি–পূর্ব লিলিডলকে।

৩.

নিশ্চয়ই লিলির এই অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নিয়েছিল বার্বির ডিজাইনাররা। তাই একেবারে প্রাপ্তবয়স্করূপে না বানিয়ে বার্বিকে বানানো হলো বয়ঃসন্ধিকালীন এক চরিত্র হিসেবে। শুরুর দিকের এই মানিয়ে নেওয়ার বৈশিষ্ট্য বার্বি প্রায় সারা জীবনই চর্চা করে গেছে। সময়ের প্রয়োজনে, বারবার পাল্টে নিয়েছে নিজেকে।

২০২৫-এ বাজারে আসা ডায়াবেটিক বার্বি
ছবি: সংগৃহীত

ফিকশনাল বায়োগ্রাফির দিকে তাকালে দেখতে পাব জর্জ ও মার্গারেট রবার্টস দম্পতির কন্যা বার্বির পুরো নাম বারবারা মিলিসেন্ট রবার্টস। ১৯৬০–এর দশকে র‍্যান্ডম হাউস প্রকাশিত উপন্যাসগুলোতে দেখা যায়, উইসকনসিনের কাল্পনিক শহর উইলোস থেকে এসেছে তারা। বার্বি পড়াশোনাও করেছে উইলোস হাইস্কুলে। তবে নব্বইয়ের দশকে গোল্ডেন বুকস কর্তৃক প্রকাশিত ‘জেনারেশন গার্ল’ বইগুলোতে তাকে আবার পড়তে দেখা যায় নিউইয়র্ক সিটির পটভূমিতে কল্পিত ম্যানহাটান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে।

বন্ধু কেনের সঙ্গে তার সম্পর্ক আপাত-জটিল । প্রেম হয়, আবার ভেঙে যায়, জোড়াও লাগে সময়ের প্রয়োজনে, তবে বন্ধুত্ব থেকে যায় চিরদিনই। ১৯৬১ সালে বাজারে আসা কেন্ বয়সের দিক দিয়ে বার্বির সমবয়সীই। ২০০৪ সালে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ম্যাটেল জানায়, কেনের সঙ্গে প্রেম ভেঙে গেছে বার্বির। ২০০৬–এ কেন্ নতুন লুকে বাজারে আসার পর ম্যাটেল আশা করতে থাকে, পুনর্মিলন ঘটতে পারে উভয়ের। ব্যাপারটাকে নিয়তির হাতে ছেড়ে না দিয়ে কেনের প্রতি বার্বির হারানো প্রেম ফিরে পেতে ২০১১ সালে রীতিমতো একটা ক্যাম্পেইনও চালু করে তারা। এ প্রয়াস বৃথা যায়নি। ২০১১ সালের ভ্যালেন্টাইনস ডে–তে জোড়া লেগে যায় তাদের সম্পর্ক। এরপরও আবার বিভিন্ন সময়ে ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ কিংবা নেহাত ভালো প্রতিবেশী হিসেবেও চিত্রায়িত হতে দেখা গেছে তাদের। কেন্ ও তিন বোন ছাড়াও আরও কিছু বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন রয়েছে বার্বির। এ ছাড়া আছে বিড়াল, কুকুর, পান্ডা, সিংহশাবকসহ প্রায় ৪০টি পোষা প্রাণী।

অমিত সম্ভাবনার ইউটোপিয়ায় যাদের বসবাস, তারাই যেন বার্বি। তাহলে কেন এত আলোচনা–সমালোচনার ঝড়? প্রাথমিকভাবে তো বার্বিকে ফেমিনিস্ট ক্যারেক্টারই মনে হয়। যদিও অন্যদিকে বার্বি সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে নারীবাদীদের দ্বারাই।

দেখা যাচ্ছে, বার্বির জীবন খুব বেশি উপন্যাসসুলভ ফিকশনাল নয়। গল্পের অত ঘনঘটা নেই তার চরিত্রে। তবে কল্পিত জীবনী থেকে বোঝা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বারবার পরিবর্তিত হয়েছে সে। চেহারায় তো বটেই, এমনকি চরিত্রেও।

৪.

জাস্ট বিউটি ডল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা বার্বি সমাজের সব প্রতিক্রিয়া গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে এবং সে মোতাবেক অভিযোজন ঘটিয়ে নিজেকে পরিণত করেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক এক কালচারাল আইকনে।

প্রি অর্ডার চলছে ভ্যান ঘগ বার্বির
ছবি: সংগৃহীত

শুরুর দিকে তার বিরুদ্ধে প্রথম সমালোচনা ছিল অবাস্তব শারীরিক গঠন। বিশেষ করে অনানুপাতিক কোমর। একজন শ্বেতাঙ্গ, ব্লন্ড, যৌন উদ্দীপক চরিত্রেই যেন তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এরূপ গঠন একজন নারীকে শুধু আবেদনময়ী হিসেবেই তুলে ধরে না, কিছু বাস্তব সমস্যারও অবতারণা ঘটায়। সরু কোমরকে আদর্শ মেনে উঠতি বয়সী মেয়েরা অমন ফিগার বানাতে চেয়ে অপুষ্টির শিকার হতে পারে। এসব সমালোচনাকে পাশ কাটাতে সে ষাটের দশকেই তারা নিয়ে আসে কৃষ্ণাঙ্গ বার্বি। ধীরে ধীরে তার শারীরিক গঠনেও নিয়ে আসা হয় জুতসই পরিবর্তন। এমনকি তারা প্লাস সাইজ বার্বিও বাজারে আনে ২০১৬ সালে।

নারীদের খেলনা পুতুলের মতো নির্জীব, বোধবুদ্ধিহীন হিসেবে চিত্রায়ণের অভিযোগও আছে বার্বির বিরুদ্ধে। এর পেছনেও নারীদের প্রতি সমাজের প্রথাগত দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা দায়ী। নব্বইয়ের দশকে বাজারজাত করা কথা-বলা বার্বি বলেছিল, ‘ম্যাথ ইজ টাফ’। সবাই একযোগে বলা শুরু করল, মেয়েরা গণিতে ভালো না—সমাজের এ প্রথাগত ধারণাকেই উসকে দিচ্ছে বার্বি। অথচ এ কথাই তার বন্ধু কেন্ বললে আলোচনাটা আর ওদিকে ধাবিতই হতো না। প্রবল সমালোচনার মুখে শেষ অবধি বার্বির মুখ থেকে ওই বাক্য সরিয়ে নেয় ম্যাটেল।

আসলে বার্বিকে কখনোই বিপ্লবী চরিত্র বা ফেমিনিজমের প্রতীক করে তুলতে চায়নি ম্যাটেল। বরং সব সময়ই চেয়েছে সমাজের প্রতিক্রিয়া অনুসারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ঘটাতে।

বার্বির স্রষ্টা রুথ হ্যান্ডলার (১৯১৬-২০০২)
ছবি: সংগৃহীত

যেমনটি দেখা গেছে বিখ্যাত ব্যান্ড দল আকুয়া গাওয়া ‘আই অ্যাম আ বার্বি গার্ল’ গানটির ক্ষেত্রেও। সমাজে বার্বির নেতিবাচক ভূমিকা ও তার সেক্স আপিলকে ব্যঙ্গ করে তৈরি হওয়া গানটির বিরুদ্ধে প্রথমে তারা মামলা করে দিয়েছিল। ২০০২ সালে কোর্ট তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে ২০০৯ সালে দেখা যায়, সে গানটারই একটা পরিবর্তিত ভার্সনকে তারা কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের বিপণন কৌশল হিসেবে।

বার্বির বিরুদ্ধে আরেকটি বড় অভিযোগ, বৈষম্যবাদী লৈঙ্গিক রাজনীতির পালে হাওয়া দেওয়া। সমাজ যে প্রথাগত ভূমিকায় নারীকে দেখতে চায়, সেটাকেই তুলে ধরে বার্বি। একজন নারী মানে আর্থসামাজিক সব ক্ষেত্রে ভূমিকাহীন একজন রং করা পুতুলমাত্র, এটাই যেন বলতে চায় বার্বি।

সমাজের প্রথাসিদ্ধ মাতৃমূর্তিকে ভেঙেই বার্বির জন্ম। মা নয় শুধু, যেকোনো প্রফেশন ও সামাজিক অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নিজেকে—এ ব্রত নিয়েই তো যাত্রা শুরু করেছিল সে। শুধু মেয়েদের কাজ হিসেবে প্রথাসিদ্ধ বেবিসিটার, মডেল বা কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক নয়; নভোযাত্রী, অ্যাথলেট, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, বৈমানিক বা অগ্নিনির্বাপক—কত তথাকথিত পুরুষালি পেশাতেও না নিজেকে নিয়োজিত করেছে সে। এদিক দিয়ে নারীদের প্রথাগত সামাজিক ভূমিকা ভেঙে দেওয়ার কাজই করেছে বলা যায়।

আরও পড়ুন

কখনো কখনো সেটা তো, এমনকি বাস্তবতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। মুক্তচিন্তার রাজধানী, গণতন্ত্রের রোল মডেল যুক্তরাষ্ট্র এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট দেখেনি। অথচ হিলারি যুগের কত আগে, সেই ১৯৯২ সালেই বার্বি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট বার্বিকেও তো আমরা দেখেছি পরবর্তী সময়ে।

এভাবেই সময়ের প্রয়োজনে, ক্রম অভিযোজনের মাধ্যমে জন্মের পর থেকে এখন অবধি নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পেরেছে বার্বি। শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, ক্রমান্বয়েই বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা। ২০০৮ সালের এক হিসাবে দেখা গেছে, গড়ে প্রতি সেকেন্ডে তিনটি বার্বি ডল বিক্রি হয় দুনিয়াব্যাপী। ইতি বা নেতি যেভাবেই হোক, দুনিয়াজুড়ে ছড়ানো পপ কালচারের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বার্বি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে নিজেকে।