কী লিখেছেন প্রিন্স হ্যারি, কী আছে তাঁর স্মৃতিকথায়

ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা স্পেয়ার এখন সুপার–ডুপার হিট। ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর এ কদিনেই বইটি ছুঁয়ে ফেলেছে বিক্রির অনেক রের্কড। সেই স্মৃতিকথা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন খবরাখবর ঘেঁটে বইটির আদ্যোপান্ত জানাচ্ছেন মারুফ ইসলাম

স্ত্রী মেগান মার্কেলের সঙ্গে প্রিন্স হ্যারি। স্ত্রীর সঙ্গে রূঢ় আচরণের কারণে বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারির বিরোধ বাধে—স্মৃতিকথায় এমনই লিখেছেন তিনি।ছবি: রয়টার্স

প্রিন্স হ্যারিকে নিয়ে মানুষের কৌতূহল ডালপালা মেলতে শুরু করে স্ত্রী মেগান মার্কেলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যখন রাজপরিবার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তখন থেকে।

পরে এই রাজপুত্রের স্মৃতিকথা স্পেয়ার–এর সূত্রে সেই কৌতূহল আবার নতুনভাবে হাওয়া পেয়েছে। খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন র​্যানডম হাউস থেকে ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর ইতিমধ্যেই এ স্মৃতিকথা পৃথিবীর ১৬টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। গত দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রি-অর্ডার হওয়া বইয়ের তালিকায়ও নাম লিখিয়েছে বইটি।

স্পেয়ার নিয়ে তাই পাঠকমনে কৌতূহলের অন্ত নেই। বহুল আলোচিত স্পেয়ার প্রকাশিত হয়েছে এ মাসের ১০ তারিখে। প্রকাশ করেছে খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন র​্যানডম হাউস। এ বই প্রকাশের দিন লন্ডনের বইয়ের দোকানগুলোর দৃশ্য কেমন ছিল, তা বর্ণনা করেছে ব্রিটিশ পত্রিকাগুলো। যেমন একটি পত্রিকার ভাষ্য এমন: ‘প্রায় মধ্যরাত। শীত ঘন হয়ে এসেছে লন্ডনের রাস্তায়। তবু অসংখ্য মানুষ শীতে কাঁপতে কাঁপতে বইয়ের দোকানগুলোর সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণ, তাঁরা প্রিন্স হ্যারির বইটি কিনতে চান। শুধু পাঠক আর ভক্তদের চাপ সামলাতেই সেদিন মধ্যরাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন লন্ডনের দোকানদারেরা।’

যা নিয়ে এই বই

প্রিন্স হ্যারির যে বই নিয়ে মানুষের এত কৌতূহল, কী আছে সেই স্মৃতিকথায়, সবাই এখন জানতে চান সে বিষয়ে।

রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ছেলে হ্যারির জন্মশহর লন্ডন। এখানে তাঁর ভক্তের সংখ্যাও বেশি। তিনি যদিও এখন স্ত্রী অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ছিন্ন করেছেন রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক। বর্জন করেছেন রাজা উপাধি এবং তা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবদ্দশায়ই।

সে–ও এক গল্প বটে! সেসব গল্পও অবলীলায় এ স্মৃতিকথায় লিখেছেন হ্যারি। আরও লিখেছেন রাজপরিবারের অন্দরমহলের অজানা অনেক কাহিনি, যা পাঠককে চমকিত করবে।

বড় ভাই উইলিয়াম কলার ধরে ফেলে দিয়েছিলেন হ্যারিকে

নিজের স্মৃতিকথায় অগ্রজ প্রিন্স উইলিয়ামের বিরুদ্ধে গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেছেন হ্যারি। তিনি লিখেছেন, তাঁর স্ত্রী মেগানকে প্রিন্স উইলিয়াম ‘অভদ্র’, ‘রূঢ়’, ‘বেয়াদব’ বলেছিলেন। এ নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে তিনি বাগ্​যুদ্ধে জড়ান। একপর্যায়ে হ্যারির কলার চেপে ধরেন উইলিয়াম।

এরপরের ঘটনা উইলিয়াম লিখেছেন এভাবে: ‘ঘটনা খুবই দ্রুত ঘটল। তিনি আমার কলার চেপে ধরে ঝাঁকাতে থাকলেন। আমার গলার নেকলেস ছিঁড়ে গেল। এরপর তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিলেন। আমি ছিটকে কুকুরের খাবার রাখা পাত্রের ওপর পড়ে গেলাম। পাত্রটি ভেঙে আমার পিঠ কেটে গেল। আমি হতবাক হয়ে ওখানেই শুয়ে থাকলাম। তিনি আমার পায়ের কাছে এসে দাঁড়ালেন এবং ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললেন।’

প্রিন্স হ্যারি যে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন, তার পেছনে এটি অন্যতম কারণ। মেগানকে বিয়ের পরই তাঁদের দুই ভাইয়ের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত। হ্যারি তাঁর বইয়ে এ বিষয়ে সবিস্তার লিখেছেন।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে মারা গেছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর মৃত্যুর পর রাজার সিংহাসনে আরোহণ করেন প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারির বাবা ৭৪ বছর বয়সী চার্লস। তার পর থেকেই মূলত দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনগুলো প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।

২০২০ সালে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে গেছেন হ্যারি। এর পর থেকে রাজপরিবার ও ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে।

আতঙ্ক কাটাতে মাদক সেবন

সাধারণ জনগণের উদ্দেশে কিছু বলতে গেলে প্রিন্স হ্যারি ভীষণ ভয় পেতেন। প্রচণ্ড চাপ অনুভব করতেন। আর সে সময় তিনি মাদক গ্রহণসহ নানা উপায়ে কাটানোর চেষ্টা করতেন আতঙ্কজনক সব পরিস্থিতি। স্পেয়ার-এ তাঁর ভাষ্য, ‘সে সময় সাইকেডেলিক ওষুধও আমাকে আতঙ্ক কাটাতে সাহায্য করেছিল। আমি সাধারণ আনন্দের জন্য সারা বছর ধরে এটা খেতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু এখন আমি এটা ওষুধ হিসেবে, থেরাপির জন্য খাই।’

স্মৃতিকথায় হ্যারি লিখেছেন, এসব ওষুধ তাঁকে ‘খুব সীমিত সংবেদনশীল উপলব্ধির বাইরে অন্য একটি জগৎ’ দেখতে দিয়েছে। দার্শনিকেরা যে অবস্থান থেকে বলতেন ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবন একটি বিভ্রম’, তেমন একধরনের উপলব্ধি সে সময় তাঁর হতো। বইয়ে হ্যারি স্বীকার করেছেন, এমন পরিস্থিতিতে ‘অন্য রকম অনুভব করতে’ মাঝেমধ্যে তিনি কোকেন সেবন করতেন।

প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু, হ্যারির কান্না ও অন্যান্য

লন্ডনের হাইড পার্কে মা প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে কিশোর হ্যারি, ৭ মে ১৯৯৫
ছবি: রয়টার্স

হ্যারির মা প্রিন্সেস ডায়ানা ১৯৯৭ সালে প্যারিসে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। মায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে হ্যারি তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘আমি মাকে সমাহিত করার স্থানে মাত্র একবার কেঁদেছিলাম। তার আগে কেনসিংটন প্যালেসের বাইরে হাঁটার সময় আমার অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল এবং অপরাধবোধ হচ্ছিল। আমার ধারণা, উইলিয়ামেরও সে সময় একই অনুভূতি হচ্ছিল। আমরা সেখানে মানুষের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলাম। হাসছিলাম। যাঁদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলাম, তাঁদের হাত ভেজা ছিল। আসলে চোখের পানিতে তাঁদের হাত ভিজে গিয়েছিল। সবাই আমার মায়ের কাছের মানুষ ছিলেন। তবে আমার মায়ের সবচেয়ে কাছের দুজন, সবচেয়ে ভালোবাসার দুজন সেই মুহূর্তে কোনো আবেগ প্রকাশ করতে পারেননি। কারণ, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের জনসমক্ষে শোক প্রকাশের সুযোগ নেই। তাই যখন মাকে সমাহিত করা হয়, তখন ওই একবারই কাঁদতে পেরেছিলাম।’

হ্যারি আরও লিখেছেন, ‘মা যখন মারা যান, তখন আমার বয়স ছিল ১২ বছর। সেদিন মায়ের মৃত্যুর সংবাদ দেওয়ার সময় বাবা একবারের জন্যও আমাকে জড়িয়ে ধরেননি। বরং আমাকে ঘরে একা রেখে বাইরে চলে গিয়েছিলেন।’

স্মৃতিকথায় হ্যারির কলমে এসেছে তাঁর বাবার দ্বিতীয় বিয়ের প্রসঙ্গও। তিনি লিখেছেন, ডায়ানার মৃত্যুর পর ক্যামিলাকে বিয়ে না করতে বাবা চার্লসকে অনুরোধ করেছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম ও তিনি। সে সময় বাবাকে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা আপনাকে অনুরোধ করে বলছি, আর বিয়ে করবেন না। আমরা আপনাকে সমর্থন করি। ক্যামিলাকেও সমর্থন করি। শুধু দয়া করে তাঁকে বিয়ে করবেন না।’

এসব ছাড়া স্পেয়ার–এ রাজপরিবার নিয়ে উঠে এসেছে আরও অনেক কথা। মূলত রাজপরিবারের অন্দরমহলের এসব অজানা তথ্য জানার জন্যই এই বই নিয়ে এত শোরগোল।

স্পেয়ার–এর বিভিন্ন স্থানে রাজপরিবার নিয়ে অনেক আক্ষেপের কথা বলেছেন হ্যারি। একই সঙ্গে মায়ের মৃত্যুতে তাঁর ট্রমা, নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সংগ্রাম, মেগানের সঙ্গে দেখা করার আগের বিচ্ছিন্ন জীবন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কথাও এসেছে অবলীলায়। যদিও কেনসিংটন প্রাসাদ ও বাকিংহাম প্রাসাদ জানিয়েছে, এই বইয়ের তথ্য নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয়।

২৫ তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার স্বীকারোক্তি

প্রিন্স হ্যারি তাঁর আত্মজীবনীতে আফগানিস্তানে সৈনিক হিসেবে কাজ করার সময় ‘২৫ তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করা’র কথা স্বীকার করেছেন।

বলা দরকার, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে কাজ করতেন হ্যারি। ওই সময় ২০১২-১৩ সালে কিছুদিনের জন্য আফগানিস্তানে ফরোয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার এবং পরে হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন তিনি।

স্পেয়ার–এ তিনি জানিয়েছেন, ওই সময় তিনি ছয়টি মিশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং প্রতিটি মিশনেই শত্রুপক্ষে নিহতের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এ নিয়ে তিনি দুঃখিত নন। তাঁর বইয়ে হ্যারির কথা, ‘এটা এমন কোনো পরিসংখ্যান নয় যা আমার মনকে গর্বে ভরিয়ে দেয়। তবে তা আমাকে লজ্জিতও করেনি। যুদ্ধের উত্তাপ ও বিভ্রান্তির মধ্যে আমি ওই ২৫ জনকে মানুষ বলে মনে করিনি। তাঁরা ছিলেন দাবার বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া গুটির মতো, কিছু খারাপ লোককে সরিয়ে দেওয়া—যাতে তাঁরা ভালো লোকেদের হত্যা করতে না পারেন।’

এবং হ্যারির সাক্ষাৎকার

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, ভাই প্রিন্স উইলিয়াম ও বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আরেকটি বই লেখার মতো যথেষ্ট তথ্য তাঁর কাছে আছে। স্পেয়ার–এর প্রথম খসড়াটি ছিল ৮০০ পৃষ্ঠার। সেখান থেকে ৪০০ পৃষ্ঠায় বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বাকি অংশ দিয়ে আরেকটি বই লেখা যেত।

হ্যারি কিছুটা বিষণ্ন গলায় বলেন, ‘আমার এবং আমার ভাই ও বাবার মধ্যে কিছু ঘটনা আছে। আমি চাই না সেসব ঘটনা সারা দুনিয়া জানুক। কারণ, আমি জানি, এ রকম হলে তাঁরা আমাকে ক্ষমা করবেন না।’

এ সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাননি বলেও দাবি করেছেন হ্যারি। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, রাজপরিবারের সংস্কার ও প্রিন্স উইলিয়ামের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার জন্যই তিনি বইটি লিখেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভি, নিউইয়র্ক টাইমস ও প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা স্পেয়ার।

যেভাবে লেখা হলো প্রিন্স হ্যারির বইটি

জে আর মোররিঙ্গার, নেপথ্যে থেকে যিনি লিখেছেন হ্যারির স্মৃতিকথা
ছবি: সংগৃহীত

প্রিন্স হ্যারির বইটি তিনি নিজে লেখেননি। হ্যারির মুখ থেকে বৃত্তান্ত শুনে এটি লিখেছেন পুলিৎজারজয়ী এক মার্কিন সাংবাদিক। তাঁর নাম জে আর মোররিঙ্গার। বিশ্বে একজনের মুখ থেকে শুনে শুনে লেখার এ রীতিকে ‘গোস্ট রাইটিং’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। সেই হিসেবে জে আর মোররিঙ্গার ছিলেন হ্যারির ‘গোস্ট রাইটার’। তিনি একজন ঔপন্যাসিকও।

স্পেয়ার লেখার জন্য হ্যারির সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন মোররিঙ্গার। শুধু এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হ্যারির সঙ্গে তিনি উড়ে গিয়েছেন লাস ভেগাসে। কাটিয়েছেন অন্তত ২৫০ ঘণ্টা! এ বই লেখার জন্য তিনি ১০ লাখ ডলার সম্মানী নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে ‘গোস্ট রাইটার’ হিসেবে এটাই মোররিঙ্গারের প্রথম কাজ নয়। এর আগেও তিনি লিখেছেন বিশ্বের সাবেক এক নম্বর টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসির স্মৃতিকথা ওপেন। বিশ্বখ্যাত কোম্পানি নাইকির সহপ্রতিষ্ঠাতা ফিল নাইটের আত্মজীবনী শু ডগ লিখতেও সাহায্য করেছিলেন মোররিঙ্গার।

পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন ‘গোস্ট রাইটিং’ একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু তাঁরা সব সময়ই থাকেন পাদপ্রদীপের বাইরে। এক সাক্ষাৎকারে যেন এ কথারই প্রতিধ্বনি করেছিলেন জে আর মোররিঙ্গার, ‘ধাত্রী তো আর নবজাতকের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে বাসায় যায় না।’

সূত্র: বিবিসি

প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা স্পেয়ার। প্রকাশের পরপর বইটি ছুঁয়েছে সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড

সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড

প্রিন্স হ্যারির বহুল আলোচিত স্মৃতিকথা স্পেয়ার প্রকাশের প্রথম দিনই রেকর্ড গড়েছে। ছাপানো বই, ই-বুক ও অডিও ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথম দিনেই বিক্রি হয়েছে চার লাখ কপি। ফলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে একে ‘প্রকাশের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ বিক্রীত নন-ফিকশন বই’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া ১০ জানুয়ারি প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যেই বিক্রির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে এই বই। কেবল যুক্তরাজ্যেই এক সপ্তাহে বইটি বিক্রি হয়েছে পাঁচ লাখ কপি, যা কোনো নন-ফিকশন বইয়ের ক্ষেত্রে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। একই সময়ে এ বইয়ের ই-বুক এবং অডিও বুক সংস্করণ বাজারজাত করেছে প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন র​্যানডম হাউস। সব ধরনের সংস্করণের বিকিকিনি আমলে নিলে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে স্মৃতিকথাটির বিক্রির পরিমাণ সাত লাখ পঞ্চাশ হাজার কপি। আর ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান–এর হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাজুড়ে প্রথম দিনে স্পেয়ার বিক্রি হয় ১৪ লাখ ৩০ হাজার কপি। ভবিষ্যতে এ স্মৃতিকথা আর কোন কোন রেকর্ড ভেঙে ফেলে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। পেঙ্গুইন র​্যানডম হাউসের লন্ডন শাখা ট্রান্সওয়ার্ল্ড পাবলিশার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ল্যারি ফিনলে বলেছেন, ‘বইটি দারুণ চলবে, এটা আমরা আগেই জানতাম। তবে এটি আমাদের সর্বোচ্চ প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। যত দূর জানি, ব্রিটেনে এর আগে শুধু আরেক হ্যারির (হ্যারি পটার) ওপর লেখা বই-ই প্রথম দিনে এর চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিল।’ ● গ্রন্থনা: নাফিস সাদিক