দেশ-বিদেশের ডিস্টোপিয়া

সমসাময়িককালে তরুণ পাঠকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ডিস্টোপিয়ান সাহিত্যের ধারা। কেন সাহিত্যের এই ঘরানা ইদানীং পাঠকপ্রিয়তা পাচ্ছে, এ ধারার বৈশিষ্ট্যই বা কী?

ধরা যাক, অদূর ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদিন হঠাৎ অভ্যুত্থানে বদলে গেল ‘গিলিয়াড’ নামের কোনো প্রজাতন্ত্রে। তারপর সামরিক জান্তা সেই প্রজাতন্ত্রকে ক্রমেই বদলে দিল চূড়ান্ত কর্তৃত্ববাদী আর পুরুষতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রে। গিলিয়াড রাষ্ট্রে সবচেয়ে নাজুক অবস্থান হলো নারীর, কেড়ে নেওয়া হলো তার সন্তান জন্মদানের অধিকার। দুঃস্বপ্নের এখানেই শেষ নয়, নারীদের এবার কাজে লাগানো হলো কেবল শাসকশ্রেণির জন্য সন্তান উৎপাদনের কাজে...!

মার্গারেট অ্যাটউডের পৃথিবী–বিখ্যাত ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস দ্য হ্যান্ডমেইডস টেল–এর কাহিনি এগিয়েছে এভাবেই, পাঠককে ক্রমাগত অস্বস্তি দিয়ে। কুঁচকানো ভ্রু আর মৃদু আতঙ্ক নিয়েও পাঠক কিন্তু ঠিকই পড়ে গেছেন কাল্পনিক রাষ্ট্র গিলিয়াডের গল্প এবং একরকম উপভোগও করেছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, ভবিষ্যতের বিকৃত একটা রূপ দেখানো এ ধরনের কল্পসাহিত্য তথা উপন্যাস পড়তে কেন ভালো লাগে পাঠকের? স্বস্তির চেয়ে অনেক বেশি অস্বস্তির সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হলেও কেন ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসগুলো আমাদের আনন্দ দেয়?

কারণ, সম্ভবত এই ঘরানার রচনায় একটা সতর্কবাণী থাকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে। ডিস্টোপিয়ান রচনা পড়তে গিয়ে মনোজগতে থাপ্পড় খাওয়া পাঠক অনুভব করেন, চারপাশের বর্তমান যেন ওই ভবিষ্যতের পথে না যায়, সে জন্য এখনো কিছু করণীয় আছে তাঁর। আজকের সমাজ-সভ্যতা-রাষ্ট্রের অমুক ত্রুটি নিয়ে কাজ করা গেলে, ভবিষ্যতের পৃথিবীতে তমুক ব্যাপারটা ডিস্টোপিয়ার জন্ম দেবে না—এমন একটা ভাবনা পাঠককে স্বস্তি দেয়, তিনি আনন্দ পান। পাশাপাশি নিজেদের বসবাসের পৃথিবীর কোনো অরাজক ব্যবস্থার সঙ্গে এসব উপন্যাসের ঘটনাক্রমের মিলও হয়তো খুঁজে পান তাঁরা। শেষ পর্যন্ত এসব উপন্যাসের মাধ্যমে তাঁরা কি একঝলক নিজেদেরও দেখতে পান না?

আর যেহেতু গাছে গাছে কোকিলের ‘কোকেইন! কোকেইন!’ বলে চিৎকার করার এই মোহময় পৃথিবী ইদানীং অজস্র সমস্যায় টইটম্বুর, দেশে-বিদেশে পাঠকের কাছে তাই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসের আবেদন।

আলাপে আরও ভেতরে যাওয়ার আগে পরিষ্কার করা দরকার ‘ডিস্টোপিয়ান’ ব্যাপারটা আদতে কী!

স্বর্গরাজ্য কিংবা রামরাজত্বের মতো আদর্শ কোনো রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন, সেই ব্যাপারকে যেমন ‘ইউটোপিয়া’ বলে ডাকা হয়, তেমনই তার বিপরীত ধারণাটাই ‘ডিস্টোপিয়া’ (নরকরাজ্য?)। আরেকটু ভেঙে বললে, সক্রেটিস যখন তার আদর্শ রাষ্ট্র ধারণার (অর্থাৎ ইউটোপিয়া) কথা বলেছিলেন, সেটার ভিত্তি হিসেবে তিনি রেখেছিলেন ন্যায়বিচারকে। ইউটোপিয়ান রাষ্ট্র মানেই সেখানে সর্বাবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। ইউটোপিয়ার বিপরীত ধারণা হিসেবে ডিস্টোপিয়া তাই এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলে, যেখানে গোটা বিচারব্যবস্থাটাই ন্যায়ের বদলে অন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত, বিচার যেখানে প্রহসন।

ডিস্টোপিয়ান রচনায় আমরা তেমনটাই দেখি। কল্পসাহিত্যের এই ধারায় সমাজের প্রত্যেক মানুষকে অবিরাম তটস্থ থাকতে হয় অদ্ভুত সব নিয়ন্ত্রণবাদী আইনের ভয়ে। অনবরত তাদের ঠেলে দেওয়া হয় প্রহসনের বিচারের মুখোমুখি। পাঠক দেখেন, ডিস্টোপিয়ান সমাজে ক্ষমতার কাঠামো কিংবা সর্বশক্তিমান কর্তৃপক্ষের হাতে ক্রমাগত বলি হতে থাকে ব্যক্তি মানুষ ও ন্যায়বিচারের ধারণা।

কী বৈশিষ্ট্য থাকলে কোনো রচনাকে ডাকা যাবে ‘ডিস্টোপিয়ান’ বলে?

মোটা দাগে বলতে গেলে, ডিস্টোপিয়ান রচনাগুলো দাঁড়িয়ে থাকে মোটামুটি একটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে—সেখানে গল্পের অন্তর্গত সমাজটি প্রতিষ্ঠিত থাকে ন্যায়ের বদলে অন্যায়ের ওপর, সেখানে শক্তিমান কেউ বল প্রয়োগ করে নির্মূল করতে চায় মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা। আর যদি ভেঙে বলতে হয়, তাহলে খেয়াল করা করা যেতে পারে ডিস্টোপিয়ান কল্পসাহিত্যের এই সব বৈশিষ্ট্য:

ক. আলাপের শুরুতে বলা গিলিয়াড রাষ্ট্রের কথাই ধরা যাক। সামরিক জান্তা সেখানে শাসন শুরু করেছিল ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত আইনের আলোকে। কিন্তু ক্রমেই ওল্ড টেস্টামেন্ট–এর এমন বিকৃত ব্যাখ্যা দেওয়া হতে থাকল সেখানে, যে মানুষের জীবন হয়ে উঠল নারকীয়।

সব ডিস্টোপিয়ান ফিকশনে ঠিক এই ব্যাপারই ঘটে। অর্থাৎ এসব উপন্যাসে বর্ণিত যে জগৎ; সেগুলোর সূচনায় একটা ইউটোপিয়ান সমাজের স্বপ্ন প্রোথিত থাকে। নাগরিকদের ওপর আরোপ করা হয় একটা সুখী, সমৃদ্ধ জীবনের ধারণা। অথচ ক্রমবিবর্তনে এমন এক সমাজকাঠামো তৈরি হয়, যাতে সমাজের কেন্দ্রীয় ভাবাদর্শটাই ক্রমাগত চুরমার করতে থাকে মানুষকে।

খ. ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসে তুচ্ছ কারণে বিচারের মুখোমুখি হয় মানুষ। সমাজের আইন ভঙ্গ করায় মানুষকে সেখানে কাঠগড়ায় তোলে মহাশক্তিমান কর্তৃপক্ষ। অথচ পাঠক টের পান, আদালতের বিচারটিই স্বয়ং অবিচার।

গ. মানুষমাত্রই যে একধরনের গল্পের শক্তিতে বিশ্বাস করে জীবন চালায়, জ্যারেড ডায়মন্ড বা ইউভাল নোয়া হারারিরা সম্প্রতি তাঁদের রচনার মাধ্যমে এই ধারণা বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছেন। অথচ ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসের রচয়িতারা ব্যাপারটা স্পষ্ট করেছেন ঢের আগে। খেয়াল করা যাবে, ডিস্টোপিয়ান জগৎগুলোয় একটা সর্ববিস্তারী ‘রাষ্ট্রধর্ম’ থাকে (যা প্রকৃতপক্ষে কর্তৃপক্ষের তৈরি একটা গল্পমাত্র) এবং বলপ্রয়োগে সেটা চাপিয়ে দেওয়া হয় মানুষের ওপর। ডিস্টোপিয়ান সমাজে সবচেয়ে বড় অপরাধ বলে বিবেচিত হয় কর্তৃপক্ষের আরোপ করা ওই গল্পকে অবিশ্বাস বা সন্দেহ করা।

ঘ. ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসের আরেকটা বৈশিষ্ট্য, শক্তিমান কর্তৃপক্ষ সেখানে গণমানুষের কাছ থেকে ইতিহাস গোপন করে।

এ ঘরানার উপন্যাসে নায়কেরা বারবার ইতিহাস খুঁজতে চায়, বুঝতে চায় যে কী করে সমাজটা এই নারকীয় অবস্থায় এসে পৌঁছল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এমন সব প্রতিবন্ধকতার জাল ছড়িয়ে রাখে যে অতীত জানাটা ওই সমাজে নাগরিকদের জন্য খুব সহজ হয় না। অতীতের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্নতা সামষ্টিকভাবেই বিষণ্ন করে তোলে নাগরিকদের। পাঠকেরা তাই ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসের নায়কদের কখনো সুখী অবস্থায় পান না।

ঙ. ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য আর গোপনীয়তার কোনো জায়গা থাকে না। কর্তৃপক্ষ চায়, স্বাতন্ত্র্য মুছে দিয়ে সব মানুষকে এক রকম করে তুলতে (হয়তো নামের বদলে তাদের চিহ্নিত করা হয় নম্বর দিয়ে), তাদের গোটা জীবনটা আড়ালহীন করে তুলতে (হয়তো প্রতিমুহূর্তে সর্বশক্তিমান কর্তৃপক্ষের নজরদারির আওতায় থাকে মানুষ)।

পৃথিবীর সর্বপ্রথম ডিস্টোপিয়ান রচনা ও রচয়িতা কে ছিলেন?

গবেষক এরিকা গটিলেব এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি দাবি করা যায় যে “সব রুশ উপন্যাসই বেরিয়েছে গোগলের ওভারকোটের পকেট থেকে,” তবে একই রকম দৃঢ়তা নিয়ে এ কথাও বলা যায়, বিংশ শতাব্দীর সব ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসের জন্ম হয়েছে দস্তয়েভস্কির দ্য ব্রাদার্স কারামাজভ উপন্যাসের “দ্য গ্র্যান্ড ইনকুইজিটর” অধ্যায় থেকে।’

ভেবে দেখলে কথাটা তো সত্যিই! কারণ, পৃথিবীর বিখ্যাত সব ডিস্টোপিয়ান রচনায় ব্যবহৃত ছক তো একটাই—কর্তৃপক্ষের আরোপ করা কোনো আদর্শের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নায়ক, একদল স্বাতন্ত্র্যহীন লোকের সামনে একটা প্রহসনের বিচার এবং শেষে নায়কের কর্মফল ভোগ। আর ধ্রুপদি উপন্যাসের পাঠকমাত্রই জানেন, ‘দ্য গ্র্যান্ড ইনকুইজিটর’ অধ্যায়ে ইভান কারামাজভের মুখ দিয়ে দস্তয়েভস্কি তেমন একটা গল্পই আমাদের শুনিয়েছেন।

আলোচিত ডিস্টোপিয়ান রচনা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পেতে প্রাথমিক পাঠ হিসেবে সহায়ক হতে পারে এরিকা গটিলেবের একটা বই—ডিস্টোপিয়ান ফিকশন: ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট (ইউনিভার্স অব টেরর অ্যান্ড ট্রায়াল)। বলে রাখা ভালো, শিরোনামে প্রাচ্য থাকলেও সাহেবদের বদভ্যাস মোতাবেক এরিকা নিজের জগৎকে করে তুলেছেন ছোট। উদ্দিষ্ট বইতে তিনি তাই কেবল ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ডিস্টোপিয়া রচনা ধারাটির ক্রমবিবর্তন নিয়েই আলাপ জুড়েছেন।

উই উপন্যাস লিখে ইয়েভগেনি জামিয়াতিন আধুনিক ডিস্টোপিয়ান উপন্যাসকে রাস্তা দেখাচ্ছেন, প্রায় শতবর্ষ হয়ে গেল সেই ঘটনার। গত ১০০ বছরে এই ঘরানায় যেমন জন্ম হয়েছে স্মরণীয় কিছু ধ্রুপদি উপন্যাসের, তেমনই জনরা সাহিত্যেও লেখা হয়েছে অজস্র ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস।

জর্জ অরওয়েলের ১৯৮৪ কিংবা রে ব্র্যাডবেরির ফারেনহাইট ৪৫১ স্বার্থক ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস। আর দ্য হ্যান্ডমেইডস টেল-এর কথা তো আগেই বলেছি।

উত্তরাধুনিককালে অন্য সবকিছুর মতোই ডিস্টোপিয়ান সমাজের ধারণা নিয়েও প্রচুর ভাঙচুর হয়েছে। চেনা ছকের বাইরেও উদ্ভব ঘটেছে নতুন রকম সব ডিস্টোপিয়ার। করম্যাক ম্যাকার্থি, ডন ডি লিলো, কাজুও ইশিগুরো—তাঁরা সবাই নিজের মতো করে তৈরি করে নিয়েছেন ডিস্টোপিয়াকে।

তবে খেয়াল রাখা দরকার, এই পোস্টট্রুথের যুগে লেখকেরা আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিব্যবহারও করছেন ডিস্টোপিয়া ধারণাটিকে। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধেও জোরালো হয়ে উঠছে একটা অভিযোগ—বিন্দুমাত্র বিচ্যুতি দেখলেই যেকোনো সমাজকে তাঁরা অতিরঞ্জন করে ‘ডিস্টোপিয়া’র তকমা দিয়ে দেন, এটাই তো নরকরাজ্যের সংজ্ঞার সঙ্গে সাংঘর্ষিক! তা এই অভিযোগের সত্যতা কতটুকু, তা বিচারের সামর্থ্য অবশ্য সময় ছাড়া আর কারও নেই।

বাংলাদেশের ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস

বাংলাদেশে ডিস্টোপিয়ান কল্পসাহিত্য রচনার ইতিহাস খুব দীর্ঘ নয়। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর অনেক সাই-ফাই উপন্যাসে ডিস্টোপিয়ান সমাজের নানা মাত্রা উপস্থাপন করেছেন। তবে সেগুলো একদিকে যেমন ঠিক ‘বাংলাদেশ’কেন্দ্রিক ডিস্টোপিয়া নয়, অন্যদিকে তাঁর উপন্যাসে কাহিনি এগিয়ে যায় কিশোরদের জনরা সাহিত্যের ছক মেনে, বড় ধরনের কোনো সংকট আবিষ্কারের চেষ্টা সেখানে থাকে না। সত্যি বলতে, বাংলাদেশে ডিস্টোপিয়ান লেখালেখির প্রায় সবটুকুই জনরা সাহিত্যের আওতায় সৃষ্ট, ধ্রুপদি ধারার লেখকেরা এদিকে তেমন পা রাখেননি বললেই চলে।

ধ্রুপদি ধারায় কাজের উদাহরণ বলতে গেলে চট করে মনে আসে আনিসুল হকের অন্ধকারের একশ বছর উপন্যাসের কথা, ডিস্টোপিয়ার মূল বৈশিষ্ট্য ভালোই অক্ষুণ্ণ থেকেছে ছোট আকারের এই উপন্যাসে। খানিক ভেবে আরও কিছু উপন্যাসের নামও যোগ করা যায়, মশিউল আলমের ঔপন্যাসিকা প্রিসিলা বা মাসউদুল হকের তৃতীয় নারী। তবে তাঁদের কোনোটাই যেন ঠিক ডিস্টোপিয়ার অস্বস্তি দেয় না, ঘরানাটার সীমানা ঘেঁষে সেগুলো বরং চলে যায় অন্য কোনো দিকে।

কৌতূহল জাগানো ব্যাপার হচ্ছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের তরুণ লেখক এবং পাঠকদের মধ্যে ‘ডিস্টোপিয়া’ শব্দটি নানা জায়গায় ব্যবহারের একটা প্রবণতা খেয়াল করা যাচ্ছে। একদিকে যেমন তরুণদের লেখা কিছু উপন্যাসে কর্তৃত্ববাদী কারও অধীনে ভবিষ্যতের একটা ক্রূর, খল, অন্ধকারাচ্ছন্ন রূপ উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ পাঠকদের একাংশও অন্ধকার কোনো ভবিষ্যতের আভাস পেলেই সেই লেখাকে ‘ডিস্টোপিয়ান’ আখ্যা দিয়ে অতিরঞ্জন করছেন।

তবে আমরা যেহেতু এটা জানি যে লেখকেরা উপাদান নিয়ে থাকেন মূলত সমকাল থেকেই, উপরোক্ত পর্যবেক্ষণ তাই অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে আরেকটা প্রশ্ন—কেন হঠাৎ আমাদের লেখকেরা আশ্রয় করতে চাইছেন ডিস্টোপিয়ার ছক? তাঁরা কি দেখতে পাচ্ছেন কোনো ইউটোপিয়ান আদর্শের সর্বগ্রাসী হয়ে ওঠা? তাঁরা কি টের পাচ্ছেন আরোপিত কোনো সত্যের ভার? তাঁরা কি অনুভব করছেন অতীতের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা?