আপনার কোটটা আমার জুতা আনতে গেছে

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
ছবি: সংগৃহীত

সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় যেমন বড় পণ্ডিত ছিলেন, তেমনি ছিলেন সাহসী। কাউকে পরোয়া করতেন না। একবার ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কামরায় করে মধুপুর থেকে কলকাতায় ফিরছিলেন। তখনকার দিনে ফার্স্ট ক্লাস কামরায় সাধারণত সাহেবরাই চড়তেন, খুব অল্পসংখ্যক বাঙালি ওই কামরায় উঠতেন। তাই বাঙাল আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে দেখে পাশের আসনের ইংরেজ বেজায় বিরক্ত হলেন।

কিন্তু সাদা ইংরেজের বিরক্তিতে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের কী! এসবে তিনি অতটা গা করলেন না। উপরন্তু জুতা জোড়া খুলে ইংরেজ সাহেবের সামনে রেখে নিজের ডেকে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। তবে ঘুম ভাঙার পর তো তিনি আর নিজের জুতা খুঁজে পান না। একটু পরই যা বোঝার তা বুঝে গেলেন আশুতোষ। বুঝলেন, তাঁর জুতা ওই সাহেবই হাপিস করে দিয়েছেন।

সাহেব তখন ঘুমাচ্ছিলেন। তাই দেরি না করে হুক থেকে খুলে ইংরেজ সাহেবের কোটটি জানালা দিয়ে ফেলে দিলেন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

ঘুম ভাঙার পর ইংরেজ সাহেব কোটটি খুঁজে না পেয়ে রেগেমেগে অস্থির। আশুতোষ বাবুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার কোট কোথায়?’ আশুতোষও কম যান না, খানিকটা মুচকি হেসে ইংরেজ সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তার আগে বলুন, আমার জুতা জোড়া কোথায়?’ সাহেব বললেন, ‘ওহে নেটিভ, তোমার জুতা বাইরে হাওয়া খেতে গেছে।’

আশুতোষও এবার মোক্ষম সুযোগ পেলেন। হেসে হেসে বললেন, ‘তোমার কোট আমার জুতা আনতে গেছে, বুঝলে হে সাহেব!’

সূত্র: অংশুমান চক্রবর্তীর বঙ্গ মনীষীদের রঙ্গ রসিকতা

গ্রন্থনা: বাশিরুল আমিন