আমি সেই দেশের কবি

আমি সেই সবুজ দেশের কবি। স্বপ্নের শবদেহ বহন করা ছাড়া

কোনো কাজ আমাকে দেয়নি কেউ।

মুহূর্তের জন্মক্ষণ কার দ্যুতি ধরে, কোন তিমিরের কথা বলে

লিখতে পারিনি আজও।

সামান্য কাজও খুঁজেছি। কবর থেকে কঙ্কাল চুরি, বিশৃঙ্খলার

উৎসব সাজানো, হিংসার বীজ বোনা আর শিশুকে অন্ধ করে

ভিখারি করার কাজ দিয়েছিল বহুবর্ণের মুখোশ। না, করিনি।

শুধু আমি আমি বলা এই দেশে তোমার ভালোবাসা পেয়ে

আমরা হব বলে তুমি যখন যেখানে যেতে বলো, একটি গোলাপ

হাতে নিয়ে যাই। অপেক্ষার শীতে, বৃষ্টিতে, ঝঞ্ঝায় আমি

নিঃস্বতার চিহ্ন হয়ে তুমি আসবে—ঢেউবোধে আশামানতার মুখ দেখি।

আমি এই দেশের বর্ণমালা শেখা এক কবি।

আমার পাঠ্যসূচি কী হবে আদেশ করে ধর্মান্ধের দল।

আমার কবিতার খাতায় কাঁদছে ‘ক’-তে কলম।

অদূরে, সত্যের অন্ধ দেবী সুন্দর পাথর-বসনে অপমানে অবকর!

আমার কলম ও দেবীর জন্য বঙ্গবন্ধু কী করতেন?

আমি যেন জন্ম থেকে মূক ও বধির স্কুলের ছাত্র। চোখের গহনে

হত্যাছবি, লুণ্ঠন-আনন্দ আর পরশ্রীকাতরতা জমতে জমতে চোখ

ভুলে গেছে, কীভাবে অন্ধ হবে, অশ্রু নেই, এ জন্মে কাঁদবে কখন।

আমি নদীভাঙনের ওপর দাঁড়িয়ে ওপারে আলোকস্তম্ভ দেখা কবি,

অন্য দূরে সুন্দরবনের সৌন্দর্যে কয়লার ধুলোবৃষ্টি দেখি,

কোনো এক ঋতুর ভবিষ্যতে হয়তো আমার মতো কেউ

বালির উঠোনে বসে বলবে, রূপসা নদীর রূপকথা।

তারপরও কবিতার মতো হৃদিক্ষত শব্দে আঁকি বলে

আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন।