একটি পেরেক

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

ঠান্ডা তেলে ডিম ভাজা, আমার একদম অপছন্দ! কিন্তু আমার স্ত্রী এই কাজটি হরহামেশাই করে। রাগটা চেপে রাখি। বলেছিলাম, তেলটা গরম হলে ডিম দেওয়া যায় না। জবাবে স্ত্রী অগ্নিচোখে কটমট করে তাকিয়েছে। বলেছে, যা করতেছ, ওইটাই করো। সব জায়গায় মাস্টারি ভালো না। আমার আরেকটা অপছন্দের কাজ, পানি না ফুটতেই তাতে চা-পাতা দেওয়া। কিন্তু আমার স্ত্রী এ দুটো কাজ সব সময় করে। আর করে তো করে, আমার সামনেই করে। যখন আমার এই কাজগুলো চোখে পড়ে, মাথাটা গরম হয়ে ওঠে। ভাবি, আমার ওপর তেজ দেখাতেই বুঝি এসব করে। আমি তখন জীবনবাবুর কবিতা আওড়াই—
এইসব ভালোবাসি—জীবনের পথে ঘুরে
এইসব ভালোবাসে আমার হৃদয়
ঘরে আলো, বৃষ্টি ক্ষান্ত হ’ল সন্ধ্যায়
ঘরের নরম দীপ জ্বলে ওঠে,
ধীরে ধীরে বৃষ্টি ক্ষান্ত হয়
ভিজে চালে কদমের পাতা ঝরে।
উইলিয়ামের সঙ্গে এসব নিয়ে আমার কথা হয়। ও ভালো পরামর্শ দিতে পারে। ওর পরিচয়টা একটু পরে দিই। শুরুতেই দিয়ে দিলে আপনারা ভ্যাবাচেকা খেয়ে যেতে পারেন। এ গল্পে উইলিয়ামের ভূমিকাই প্রধান। ওকে নিয়ে আপনাদেরও কৌতূহল হবে। ও থাকে একটা কফিনে। আপাতত আমার অবস্থানটা আপনাদের কাছে দিয়ে নিই।
আমি এই শহরের এক কোনায় থাকি। রেললাইনের ধারে। বিবিরহাট, বশর মার্কেটের গলি। রেললাইন ধরে সোজা গেলে একটা খ্রিস্টান কবরস্থান। কবরস্থানের পাশেই বিল্ডিংটা। ফিরোজ ম্যানশন। পাঁচতলা। এর দোতলায় আমার বাসা। বাসার বেডরুমটি ঘেঁষে বড় একটা জানালা। এই জানালাটা টেনে দিলে কবরস্থানটি বহু দূর পর্যন্ত দেখা যায়। অবশ্য রেললাইনটি পার হলেই একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়বে আপনার। তাতে ওয়েস্টার্ন একটা নাম জ্বলজ্বল করছে। সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী। সেখানে লেখা আছে, ‘সামারভিউ আবাসিক এলাকা’। কবরস্থানটা বহু পুরোনো। ফটকের গায়ে সাল লাগানো আছে—১৭০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত। অনেক কবর, ক্রুশচিহ্ন দেওয়া আছে। সাদা সাদা মঠ। ভেতরে অনেক গাছগাছালি। দিনের বেলা যেমন তেমন, রাতে গা ছমছম করে। আমার মনে পড়ে যায় বিখ্যাত রাইটার ব্রামস্টোকারের অ্যামিট্যাভিলের আতঙ্ক কিংবা ড্রাকুলার কাহিনি বইগুলোর কথা। এসব বই পড়ে কৈশোরে খুব ভয় পেতাম আমি। প্রতি রাতে মনে হতো, কোনো পিশাচ উঠে আসছে কফিন থেকে আর এক্ষুনি সে চুষে খেয়ে নেবে আমার রক্ত। ওই বইগুলোর মধ্যে এ ধরনের কবরস্থানের কথা ছিল। কথাটি বারবার মনে হতে থাকে আমার। এবং এই ধরনের কবরের মধ্যে বাস করে পিশাচগুলো। আমি ফটক পেরিয়ে একদিন ভেতরে উঁকি দিয়েছিলাম, সবুজ গাছগাছালি আর সাদা চুনকাম করা কবরের চিহ্নগুলো আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে বলে মনে হয়েছিল। অবশ্য এটা আমার মনের বিভ্রমও হতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত কোন দিন থেকে, ঠিক মনে নেই। একদিন আমার স্ত্রী বলল, তাড়াতাড়ি বসাটা পাল্টাতে হবে। আমি বললাম, কেন? সে ভীত গলায় বলল, সারা দিন কেমন গা ভারী হয়ে থাকে। আর তা ছাড়া দিনের বেলা পশ্চিমের এই জানালাটা খোলা যায় না। খুললেই চোখ পড়ে কবরগুলো।
আমি জানতে চাই, তাতে কী? চোখ তো পড়তেই পারে। সে ইনিয়ে-বিনিয়ে কিছু একটা বলল, যা আমার কাছে যুক্তিসংগত মনে হলো না। এক কথায় দুই কথায় এরপর থেকে অশান্তি শুরু। ওকে দেখলে আমার মেজাজ বিগড়ে যায়; আর আমাকে দেখলেই ও তেড়ে আসে। কিছুদিন ঘরের হান্ডি-পাতিলগুলোর ওপর অত্যাচার চলল। এভাবে বুঝি আর চলে না। তাই একদিন সন্ধ্যার আগেই দেখলাম, ব্যাগ গুছিয়ে সে ইতস্তত করছে।
আমি বললাম, রিকশা ভাড়া নেই। দিয়ে দেব? সে কটমট করে চাইল। টেবিল থেকে একটা গ্লাস নিয়ে আমার পায়ের কাছে কাচের নূপুর বানিয়ে দিল। বাহ্, কী চমৎকার! কাচের টুকরোগুলো নূপুর হয়ে গেল। এসো কাচের নূপুর পরে কিছুক্ষণ নাচি। সে ব্যাগ টেনে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল। ভাবছি, আর মাস দুয়েক জ্বালাবে না।
এই ফাঁকে ইচ্ছেমতো পড়তে পারব। যখন মন যা চায়, লিখতে পারব। লিখতে বসলে আর কেউ বলবে না, ওঠো, আজকে বাজারবার, বাজারে যাও। না হয়, ময়লাটা ফেলে দিয়ে আসো তো! কিংবা বলবে না, সারাক্ষণ কি ছাইপাঁশ লেখো? বিয়ের পর একটু ভালো করে কথাও তো বললে না। খালি বিজি, বিজি।
যাক, আগে দরজাটা লাগিয়ে দিই। পুবের জানালা দিয়ে রাস্তার মোড়টা একটু চোখে পড়ে, সেদিকে তাকিয়ে দেখলাম। না, কোথাও দেখা যাচ্ছে না ওকে।
মনটা বিষিয়ে আছে। কেন? বুঝতে পারছি না। মাথায় একটা চাপ। অসহ্য নয়! তাই এসে পশ্চিমের জানালাটা খুলে দিই। যেটি আমার স্ত্রী কোনো দিন খুলত না। সন্ধ্যা নামছে। গাছপালার কারণে একটু মায়াময় অন্ধকার পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। একটা বই টেনে নিলাম। পড়তে পড়তে চোখটা কেমন বুজে এল।
উইলিয়াম আসবে রাত বারোটার পর। ওর সঙ্গে পরিচয় বেশি দিন নয়। সব মিলিয়ে কথা হয়েছে পাঁচ-ছয় দিন। উইলিয়াম অনেক মজার মজার কথা বলে। ও অনুরোধ করেছে, ওকে নিয়ে যেন একটা কাহিনি লিখি। এ পর্যন্ত ও যা গল্প করেছে, তা সাদামাটা কথা। কিন্তু গত রাতে ও যখন চুপি চুপি আমাকে ডাকছিল, আমি ভড়কে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, তুমি এলে কীভাবে?
সে বলল, আমার ঘরের জানালা দিয়ে। অনায়াসে টপকে উঠে যেতে পারে। একটা মিনজিরিগাছ জানালা ছুঁয়ে ওপরে উঠেছে। রোদে-বৃষ্টিতে ভিজে গাছটাও কেমন দেখার মতো হয়ে উঠেছে। গা-খানি কেমন তেল-চকচকে কালো। ওটা বেয়ে উইলিয়াম জানালা দিয়ে ঢুকেছে। কিন্তু ওই রুমে তো মিমি ঘুমায়। ওর ঘুম যে পাতলা, যদি একবার জেগে যেত! কী দশা হতো তবে। উইলিয়াম আশ্বস্ত করেছিল আমাকে, আরে জাগবে না।
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম, জাগবে না! তুমি বাহাত্তর কেজি একজন মানুষ জানালা দিয়ে প্রবেশ করবে আর সে জাগবে না? বললেই হলো!
সে হেসে বলল, বাদ দাও না। পরে বুঝিয়ে বলব। এই পরে বুঝিয়ে দেওয়ার মধ্যেই কি রহস্যটা লুকিয়ে আছে? আজকে তো কোনো সমস্যা নেই। ও অনায়াসে ঢুকে যেতে পারে। চাইলে সদর দরজা দিয়েও আসতে পারে।
আমি আমার নতুন উপন্যাসের কথা ভাবছি। সেদিন বাতিঘরে হঠাৎ হরিশংকর স্যার বললেন, ‘কী লিখছ?’
আমি বললাম, একটা গল্প। তিনি হঠাৎ এই কবরস্থানের কথা তুললেন। বললেন, ‘কী করো তুমি, ওটা নিয়েও তো একটা কাহিনি দাঁড় করাতে পারো! আর তা ছাড়া তোমার বাসার পাশেই তো রেললাইন। গল্পে আসে না কেন এটা?’
স্যারকে বললাম, কাহিনি আমি শুরু করেছি। তবে বুঝতে পারছি না কীভাবে এগোব।
কলিংবেলটা বেজে উঠল। ধড়মড়িয়ে জেগে উঠলাম আমি।
কে এল? মিমি কি আবার ফিরে এল? এত তাড়াতাড়ি তো ফেরার কথা না! না তো, তা হওয়ার কথা নয়!
ঘড়ির দিকে চোখ পড়ল। রাত বারোটা। তার মানে, এসে গেছে উইলিয়াম ডি কস্টা! ওর জন্য সিগারেট এনে রেখেছি। যা দাম বেড়েছে। জোগাড় করাটাও ঝক্কি! ব্যাটা টানেও। ঘরটা অন্ধকারে ভরে যায়। আর তখন আমাকে ভিন জগতের প্রাণী বলে মনে হয়। দরজা খুলতেই এক ঝটকা ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেল। উইলিয়াম এসে বসল ডাইনিং টেবিলে। আমি বসলাম মুখোমুখি। হাত বাড়িয়ে সিগারেট চাইল। দিলাম।
সালটা ছিল ১৭৬৮। আমি কান উৎকর্ণ করলাম। উইলিয়াম কী বলে। ১৭৬৮ সালের কথা। রেবার সঙ্গে আমার খুব ভাব। প্রায় বিকেলে আমরা ঘুরে বেড়াই। সেদিন বিকেলেও আমরা ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। সুনসান ছিল শহর। একটা ঘোড়ার গাড়িতে আমরা শহর চক্কর দিলাম। কিন্তু কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল, বুঝলাম না। একটা যুবক চিলের মতো ছোঁ দিয়ে রেবার গলার হারটা নিয়ে দৌড় দিল। আমিও দৌড়ালাম পিছে। ধরে ফেলালাম। ওর ছুরি দিয়ে ওকেই টুকরা টুকরা করে দিলাম।
উইলি সিগারেটের রিং বানাচ্ছে। ওর ওয়েস্টার্ন হ্যাটের নিচে একটা চোখ ঢাকা পড়েছে। ওই চোখটা নষ্ট। ওকে এখন বেশ হিংস্র দেখাচ্ছে।
ওদের সরদারকে খুঁজে বের করলাম রাতের মধ্যেই। ভাগাড়ে ফেলা রাখা গরুর মতো চামড়া ছিলে ফেললাম। কিন্তু ওর কয়েকজন সাঙ্গাত আমার চোখে আঘাত করে। তারপর পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে চোখটা।
প্রথম আমি উইলিকে আবিষ্কার করি রাত একটার পর। সে রাতে আমি কবরের মূল ফটকের পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। আসলে রাত বারোটার পর স্ত্রীর কথা-কাটাকাটি নিয়ে ঘরে আর টিকতে পারছিলাম না। কাজেই শান্তি বজায় রাখার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। তখনই উইলিয়ামের সঙ্গে ধাক্কাটা খাই। ভেবেছিলাম, ও বুঝি এই কবরস্থানের নতুন গার্ড। আমার হাতের সিগারেটের দিকে লোভাতুর ভঙ্গিতে তাকিয়ে ছিল সে। আমি জিজ্ঞেস করতেই সে হাসিমুখে সিগারেটের ওপর দখল নিয়ে নিল। যেভাবে সে আয়েশ করে সিগারেট ফুঁকছিল, সে দৃশ্য না দেখলে কাউকে বোঝানো যাবে না। সিগারেটের জন্য কী পরিমাণ তৃষ্ণার্ত উইলিয়াম!
আস্তে আস্তে তার সঙ্গে আলাপ জমতে থাকে। এক দিন দুই দিন তিন দিন। ওর ভেতরের কথা আমি বের করে আনি। বিনিময়ে ওকে সিগারেট দিতে হয়। যখন ওর খুনি পরিচয়টা পাই, তখন ওকে একটু অন্য রকম লাগে। কিন্তু আমার স্ত্রীর ওপর ও এতটা খেপেছে কেন, তা কিছুতেই বলে না। আমিও খুব একটা পাত্তা দিই না। একটা কবর থেকে উঠে আসা আত্মার বিরাগভাজন হয়েছে আমার স্ত্রী, যে কিনা আমার ঘরে এখন নেই। এতে আমার কী আসে যায়। আর ওরই কীই-বা ক্ষতি। কিন্তু আমার টনক নড়ে, যখন উইলিয়াম আমার ঘর থেকে মাংসের চপ বানানোর ছুরিটা হস্তগত করে বলে, ‘পূর্ণিমার পরে যখন জাগব, তখন তোমার জীবন ঝামেলামুক্ত করে দেব।’ আমি বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। মাথায় কিছু ঢোকেনি। কিন্তু সে শেষ কথাটা শেষ করল এভাবে, ‘যদি কেউ আমার কফিনে একটা পেরেক ঠুকে না দেয়, তবে পূর্ণশক্তি নিয়ে আবার জেগে উঠব আমি। ভালোয় ভালোয় পূর্ণিমাটা যেতে দাও। তবে তোমার প্রতি আমার অনুরোধ, কোনো কারণে যদি দেখো রাত বারোটার পরেও আমি আর আসছি না, তবে বুঝবে কেউ অকাজটা করেছে।’
অকাজটা কী?
‘আমার কফিনে একটা পেরেক ঠুকে দিয়েছে। তোমার কাজ হলো যেভাবেই হোক আমার কফিন থেকে পেরেকটা তুলে ফেলা। তাহলে আমি আবার তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারব। আর তোমার জীবনের ঝামেলা সব মুক্ত করে দেব।’ খসখসে গলায় হিম-ধরানো কণ্ঠে সে বলে গেল কথাগুলো। তারপর জামার আস্তিনের নিচে ছুরিটা নিয়ে চলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে গা ঝাড়া দিয়ে উঠল আমার। পরে কথাটা আর মনেই ছিল না। কীভাবে যে সপ্তাহ গেল। কাজের ঘোরে কিছুই মনে পড়েনি।
আজকে পূর্ণ তিথি। আমার উইলির কথা মনে পড়ল। বিছানার পাশে রাখা ফোনটি তখন বেজে ওঠে। আমি অবাক হই। এটা আমার স্ত্রীর নাম্বার। ওর কি রাগ পড়তে শুরু করেছে? যাওয়ার পর আমি আর কোনো খোঁজখবর নিইনি। ও-ই আজ প্রথম কলব্যাক করল। ফোন ধরতেই আমার চার বছরের মেয়েটা কাঁদো কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘ও বাবাটা, তুমি খেয়েছ? তুমি কি আমার জন্য কান্না করেছ? আমি তো প্রতিদিন তোমার জন্য কান্না করি। ও বাবাটা, আমি কাল রাতে কিছুই খায়নি। মাম আমাকে মাইর দিয়েছে। ও বাবা, আমি তোমার কাছে চলে আসব। তুমি কান্না করো না, বাবা। আমি তোমার কাছে চলে আসব, বাবা...।’
তারপর মনে হলো কেউ মোবাইলটা ওর হাত থেকে কেড়ে নিল। ইমার কান্নার ধ্বনি প্রতিধ্বনি তোলে আমার প্রতিটি রক্তবিন্দুতে।
আমি আর ওর কথা শুনতে পাই না। মেয়েটির মিষ্টি মুখ আমার ভাবনাকে এলোমেলো করে দেয়। আজ রাতেই উইলি জেগে উঠবে। তারপর মিমিকে খুন করবে। না, আমি আর কিছুই ভাবতে পারছি না। রাত এগারোটা বেজে গেছে। আমাকে এখনই কিছু একটা করতে হবে। আমি খুঁজে খুঁজে হাতুড়িটা বের করি। আর সঙ্গে নিই একটা পেরেক। জানালা দিয়ে নেমে যেতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে উইলিয়ামের কবরটা। যেভাবে হোক ওর কফিনে একটা পেরেক ঠুকে দিতেই হবে। ও বলেছে, কেউ যদি ওর কফিনে পেরেক ঠুকে দেয়, তবে আর কোনো দিনই ওকে দেখা যাবে না। উইলিয়াম এ-ও বলেছে, কফিনের দরজা না খুললে মিমি আবার ফিরে আসবে। তাহলে এত দিন যে মিমি বাসায় নেই, সেটাতেও কি উইলিয়ামের হাত আছে? মাথাটা আস্তে আস্তে যেন পরিষ্কার হতে থাকে। তার মানে উইলিয়াম হিংস্র। ও যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। আমি জানালা দিয়ে নেমে আসি। মিনজিরিগাছটাকে আঁকড়ে ধরি। ও হ্যাঁ, উইলি বলেছিল, শেষ দিকের সারির সাত নাম্বার কবরটার কাছে যেতে হবে। হাতুড়িটা শক্ত করে ধরেছি। আরেক হাতে একটি পেরেক। উইলির কফিনটা যে করেই হোক আমাকে খুঁজে পেতে হবে।