কাইয়ুম স্যার

আমাদের নান্দনিক রুচির অসাধারণ নির্মাতা শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তাঁর চিত্রকলা মানেই এক টুকরো সুরেলা বাংলাদেশ। ৩০ নভেম্বর এই খ্যাতিমান চিত্রকরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর লেখা ও তাঁকে নিয়ে লেখা নিয়ে এ আয়োজন
কাইয়ুম চৌধুরীর তেলরং–চিত্র: ‘কাঁথা সেলাই’
কাইয়ুম চৌধুরীর তেলরং–চিত্র: ‘কাঁথা সেলাই’

অস্তিত্ব ও অনস্তিত্বের মাঝখানে ফাঁকটুকু যে এত অকিঞ্চিৎকর, তার এমন প্রত্যক্ষ পরিচয় আগে কখনো পাইনি। এক বছর আগে এমন অভিজ্ঞতার নির্মম পরিচয়টি এল আমার সবচেয়ে প্রিয় একজন মানুষের মুহূর্তে অন্তর্হিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। কাইয়ুম চৌধুরী—বরেণ্য চিত্রশিল্পী, এ দেশে রুচিশীল মুদ্রণ-সংশ্লিষ্ট শিল্পের পথিকৃৎ, কবি ও ছড়াকার, সংগীত ও চলচ্চিত্র অনুরাগী, সব প্রগতিশীল আন্দোলনে, প্রতিবাদে সর্বদা সম্মুখসারির যোদ্ধা, সর্বজনশ্রদ্ধেয় এক ব্যক্তিত্ব। আমার কেবলই কাইয়ুম স্যার।
তাঁর কথা কোন জায়গা থেকে শুরু করতে পারি? ১৯৬৬ সালে আমি ঢাকায় তৎকালীন আর্ট কলেজে ভর্তি হই, প্রথমে তিনি আমার শিক্ষক, পাস করে বেরোনোর পর চারুশিল্প ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রে রুচির ঐক্যসূত্রে কাছের জন, ক্রমেই আরও কাছের হয়ে উঠলেন বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয়তার কারণেও। হিসাব করে দেখলে আমার জীবনের দু-তৃতীয়াংশ কাল তাঁর সাহচর্যে না হলেও যোগাযোগে কেটেছে। ৩০ নভেম্বর ১৯১৪, যেদিন তিনি চলে গেলেন, দিনের বেশির ভাগ সময়ও কেটেছে তাঁর সঙ্গে। ভারতীয় শিল্পী যোগেন চৌধুরী এসেছিলেন ঢাকায়, তাঁকে নিয়ে কাইয়ুম স্যারসহ আমরা জনা আটেক মধ্যাহ্নভোজ সেরেছি একসঙ্গে, আড্ডাসহযোগে। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব চলছে, সবচেয়ে উৎসাহী শ্রোতাটির নাম কাইয়ুম চৌধুরী। আমিও সস্ত্রীক এ অনুষ্ঠানমালার শ্রোতা, তবে যেতে যেতে একটু দেরি হয়েছে। দেখি স্যার পুত্র-পুত্রবধূ-শ্যালক পরিবৃত হয়ে সমাসীন, উজ্জ্বল হাসিখুশি। আমাদের দেখে হাত তুলে ডেকে নিয়ে বসালেন কাছাকাছি। বললাম, স্যার, আজকে আপনার বক্তৃতা আছে। ইদানীং আপনি খুব ভালো বলেন। স্যার একটু লাজুক হেসে বললেন, ধুর, বক্তৃতার কথা শুনলে এখনো টেনশনে পড়ে যাই।

কাইয়ুম চৌধুরী (৯ মার্চ ১৯৩২-৩০ নভেম্বর ২০১৪), প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল
কাইয়ুম চৌধুরী (৯ মার্চ ১৯৩২-৩০ নভেম্বর ২০১৪), প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল

এরপরের ঘটনা সবারই জানা। হাজার হাজার হতবাক মানুষের সামনে, সংগীতের বিশাল আয়োজনকে স্তব্ধ করে দিয়ে তিনি বিদায় জানালেন ৮২ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনকে। আবার যখন অনুষ্ঠান শুরু হলো ৪০-৫০ হাজার মানুষ নীরবে দাঁড়িয়ে সম্মান জানালেন দেশের অগ্রগণ্য এই বরেণ্য মানুষটিকে। এই চকিতে চলে যাওয়া, কোনো দীর্ঘ কষ্ট না পেয়ে, কাউকে কষ্ট না দিয়ে, হাজার হাজার মানুষের হৃদয়-নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে—এর চেয়ে ভালো বিদায় আর কী হতে পারে! আমরা অনেকেই এমনটি বলাবলি করছি বটে, তবে যার হারায় সে-ই বোঝে আকস্মিক হারানোর বেদনা। তার কাছে কোনটি কতখানি বেদনার তা কে বলতে পারে?
একটি দিনের মাত্র আধটি ঘণ্টার মধ্যে সারা দিন স্বাভাবিক হাসিখুশি মানুষটির সঙ্গে দীর্ঘ ৪৮ বছরের সম্পর্কের চিরবিচ্ছেদ রচিত হয়ে গেল। যৌবনের সে-কোন স্ফুটনকালে মফস্বল শহর থেকে ঢাকায় এসেছিলাম চারুকলায় পড়ে একটা কিছু হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। বাবার সঙ্গে শিল্পাচার্যের বন্ধুতার দাক্ষিণ্যে ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েক মাস পরেও ভর্তির সুযোগ জুটেছিল। তবে অন্যদের তুলনায় আগে থেকেই খানিকটা লায়েক হয়ে এসেছিলাম—জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান ছাড়াও আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, হামিদুর রহমানের নাম জানতাম। কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবীকে চিনতাম বইয়ের প্রচ্ছদ ও অলংকরণের মাধ্যমে। তখনকার আর্ট কলেজে ঢুকে আরও অনেককে চিনলাম, বড় বড় বিখ্যাত সব নাম। ক্রমেই ঢাকার নব্য আঁতেলদের আড্ডায় জায়গা করে নিয়ে আটঘাটের আরও খবরাদি জানলাম। জানলাম ঢাকায় ভারতীয় রাগসংগীত আর পুরোনো দিনের গানের সবচেয়ে ভালো সংগ্রহ আছে আমাদের দুই শিক্ষকের কাছে—সফিউদ্দিন আহমেদ আর কাইয়ুম চৌধুরী। সফিউদ্দিন স্যারের কাছে ধার চাওয়ার বুকের পাটা কারও নেই—এক ধমকে ভাগিয়ে দেবেন। কাইয়ুম স্যারও ভারিক্কি প্রকৃতির মানুষ। তিনিও দিতে রাজি হলেন না, তবে বাসায় যেতে বললেন। সেই থেকে তাঁর বাসায় মাঝেমধ্যে ঢুঁ মারার সুযোগটা আশকারা পেতে লাগল আর ক্রমে ক্রমে দূরবর্তী গুরুগম্ভীর এক শিক্ষক থেকে কেমন করে যেন তিনি হয়ে উঠলেন বন্ধুর মতো, বয়সের বিরাট ব্যবধান সত্ত্বেও। ঢাকায় এলে অন্তত এক সন্ধ্যা তাঁর সঙ্গে আড্ডা ছিল বাধ্যতামূলক এবং আকর্ষণের বিন্দু, খবর না দিয়ে চলে গেলে ক্ষুণ্ন হতেন। যেকোনো জমায়েতে তিনি খুব ব্যস্ত থাকলেও দেখতে পেলেই ডেকে আলাপ করে নিতেন।
তাঁর বাসার পরিবেশ শিল্পচর্চার খুব অনুকূল ছিল বলে কখনো মনে হয়নি। মুদ্রণকাজের জন্য যেসব আঁকাআঁকি, লেটারিং-ট্রেসিং-কাটিং ইত্যাদি তাঁকে করতে হতো, তার সবটাই চলত তাঁর ডাইনিং টেবিলের এক কোনায়—স্বল্প পরিসরে, ম্লান আলোয়। এর জন্য আলাদা কোনো টেবিল বা স্টুডিও দেখিনি। যদিও নয়াপল্টনে ফ্ল্যাট কেনার পর শেষ বয়সে ছবি আঁকার একটি পরিসর তিনি পেয়েছিলেন, তাঁর অসামান্য সব প্রচ্ছদ-অলংকরণ-পোস্টার-লোগো-আমন্ত্রণপত্র, বিশেষ করে পত্রপত্রিকার জন্য জলরঙে করা অসামান্য সব প্রতিকৃতি এই অকিঞ্চিৎকর সুবিধার কোণটিতেই রচিত হয়েছে।

পঞ্চাশের দশকের অনেক শিল্পীই সাংস্কৃতিক জগতে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। এঁদের মধ্যে মোহাম্মদ কিবরিয়া তাঁর পেলব সংবেদনশীল কাজ দিয়ে, আমিনুল ইসলাম তাঁর বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব ও সাহসী নিরীক্ষার কারণে, মুর্তজা বশীর রাজনৈতিক ভূমিকায় ও বিচিত্রমুখী প্রতিভার প্রকাশে, রশিদ চৌধুরী বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও দেশজ উৎসের বিকল্প রূপ নির্মাণে নিজেদের স্বতন্ত্র চরিত্র নির্মাণ করেছিলেন। কাইয়ুম চৌধুরী জ্যামিতিক রূপবন্ধে দেশজ মোটিফের ব্যবহারে গড়ে তুলেছিলেন সমকালীন চিত্রজগতে নিজস্ব পরিচয়, জিতেছিলেন সর্বপাকিস্তান জাতীয় প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। তবুও তাঁর মূল পরিচয় ছিল মুদ্রণকলায়, বিশেষ করে পুস্তকের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে এ দেশে রুচি নির্মাণের অগ্রপথিক হিসেবে। আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী বা দেবদাস চক্রবর্তীর ব্যক্তিচরিত্রের বর্ণাঢ্যতা তাঁর মধ্যে ছিল না, তিনি ছিলেন কিছুটা লাজুক, স্বল্পবাক, অনেকটাই নিয়ম-মানা পারিবারিক মানুষ। এই একদল প্রতিভা-উজ্জ্বল প্রাণোচ্ছল শিল্পীর মধ্যে তিনি বরং ছিলেন কিছুটা মৃদু ও অন্তর্মুখী স্বভাবের। অনেকের একজন থেকে সেই কাইয়ুম স্যারই অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে সব মহলের কাছে শ্রদ্ধেয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব আর শেষ পর্যন্ত বাঙালি ও বাংলাদেশের চেতনার এক মহিরুহ-প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
কাইয়ুম চৌধুরীর কর্মের প্রধান দুটি এলাকা ছিল খুব কাছাকাছি, বলা যেতে পারে যে প্রায় পরস্পরসংলগ্ন। তাঁর চিত্রকর জীবনের প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই তিনি মুদ্রণকলার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন নানাভাবে। গ্রাফিক ডিজাইন বলতে যা বোঝায় সে বিষয়ে নৈপুণ্য অর্জন করতে হলে যান্ত্রিক মুদ্রণের কারিগরি দিকগুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক। লেটার প্রেস মুদ্রণের কালে ব্লক-নির্মাণের মাধ্যমে প্রচ্ছদ এবং অলংকরণের যুগে কম্পিউটার-চালিত ডিজাইন প্রণয়নের কালে এসেও তিনি ছিলেন কারিগরি জানাশোনায় সর্বদা আগ্রহী আর মুদ্রণসংশ্লিষ্ট শিল্পের সব ধরনে আমৃত্যু তিনিই ছিলেন আমাদের দেশে অবিসংবাদীরূপে সবার সেরা।

কাইয়ুম চৌধুরীর তেলরং–চিত্র: ‘বেদেনী’
কাইয়ুম চৌধুরীর তেলরং–চিত্র: ‘বেদেনী’

আর একটি কথা উল্লেখ না করলেই নয়। বাংলা হস্তলিপিতে আধুনিকতা ও ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য সঞ্চার করেছিলেন সত্যজিৎ রায়, তাঁর প্রেরণার শিকড় ছিল প্রাচীন বাংলার পুঁথিলিপি। কাইয়ুম স্যার ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের সব ধরনের গ্রাফিক কাজের মুগ্ধ ভক্ত। তাঁর নিজের হস্তলিপিতে সত্যজিৎ রায়ের প্রভাবের ছায়া শেষ পর্যন্তও কিছুটা ছিল, যদিও ক্রমেই তিনি অর্জন করেছিলেন তাঁর নিজস্বতার স্বতন্ত্র মাত্রাও। তবে পুস্তকের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে সত্যজিতের প্রভাব তেমনভাবে পড়তে দেননি তিনি। সে এলাকায় কাইয়ুম চৌধুরী একদম স্বতন্ত্র। যদিও সত্যজিতের প্রচ্ছদ-ভাবনায় লোককলার অসামান্য প্রয়োগ মাঝেমধ্যে দেখা গেছে, যেমন অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ গ্রন্থে নামাবলির ব্যবহার কিংবা বিষ্ণু দের কাব্যগ্রন্থ নাম রেখেছি কোমলগান্ধার-এ কালীঘাটের পটচিত্রের প্রয়োগ, তবু তাঁর প্রচ্ছদশিল্প মূলত তাঁর লিপি-লিখনের স্বকীয়তা-নির্ভর। কাইয়ুম চৌধুরীর প্রচ্ছদশিল্পের ক্ষেত্রেও লোককলা একটি প্রধান আকর্ষণ এবং লোকশিল্পের নানা মোটিফকে জ্যামিতিক সরলতায় জারিত করে তিনি গড়ে নিয়েছিলেন তাঁর প্রচ্ছদ-রূপের মূল আঙ্গিক, লিপি সেখানে অনুষঙ্গ মাত্র।
আমরা তাঁর অন্বেষণের সূত্রটি ধরে যেতেই পারি তাঁর চিত্রচর্চার ভুবনটিতে, তবে তাঁর চিত্রকর্মের বৃহৎ এলাকাটির আলোচনা এ সীমিত পরিসরে সম্ভব নয়, এটি তোলা থাক পৃথক কোনো আয়োজনের জন্য। তবে এটুকু বলতে পারি, মুক্তিযুদ্ধ তাঁর আবেগকে সমকালীনদের তুলনায় বিশেষভাবে তাড়িত করেছে, এ নিয়ে তাঁর চিত্রের সংখ্যাও কম নয়। একটি মৃদু ও কোমল কণ্ঠের প্রকৃতিপ্রেমিক চিত্রকর থেকে ক্রমেই কাইয়ুম চৌধুরী হয়ে উঠেছিলেন পল্লিবাংলার আবহমান জীবনের এক অক্লান্ত রূপকার, আর চলমান ঘটনাপ্রবাহের একই সঙ্গে ভাষ্যকার ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।
আকৃতির কিছুটা সরলায়িত জ্যামিতিক রূপের যে আদলটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন, সে নারী, মুক্তিযোদ্ধা, পাখি, বৃক্ষ, নৌকা বা গ্রামীণ বাড়িঘর যেটিই হোক, বাংলাদেশে সেসব বস্তুর একটি নির্বিশেষ প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বিশেষভাবে বলতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের গ্রামীণ কিশোর মুক্তিযোদ্ধার যে রূপটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন তার কথা। আমরা জানি, মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষিত বাহিনীরা যেমন যুদ্ধ করেছে, তেমনি শহরের ছাত্র-যুবক-কিশোর-কর্মজীবীরাও যুক্ত হয়েছিল। হয়তো একটু কম জানি যে মুক্তিযুদ্ধে গ্রামের—অজপাড়াগাঁয়ের কৃষক-তরুণ এমনকি কিশোররাও, অনেকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল। কাইয়ুম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সর্বজনীন প্রতীকের পরিকল্পনায় বেছে নিলেন গ্রামের প্রায়-কিশোর এক তরুণের অবয়ব। পরনে গেঞ্জি-লুঙ্গি, মাথায় বাঁধা লাল ফেট্টি, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আগুয়ান এই মুক্তিযোদ্ধার মূর্তিটি আজ বাঙালির প্রতিরোধ ও মুক্তিসংগ্রামের একক আইকনে পরিণত হয়েছে।
কেবল আমার কাইয়ুম স্যারে তিনি আবদ্ধ থাকেননি, সর্বজনগ্রাহ্যতায় ক্রমে ক্রমে নিজেকে বিস্তৃত করেছিলেন, ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন শুধু দৃশ্যকলা জগতের নয়, সংস্কৃতি জগতের প্রায় সবাইকে। আশি-ঊর্ধ্ব বয়সেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন সর্বত্রগামী, সর্বজনশ্রদ্ধেয়, অনেকখানিই জাতির অভিভাবক। হয়ে উঠেছিলেন জাতির ‘প্যাট্রিয়ার্ক’ বা কুলপতি, ভরসার জায়গা। তাঁর তিরোধান আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি বটে, তবে জাতির অপূরণীয় অভাবটি পূরণ করবেন কে—সে প্রশ্ন জেগে রইল।