খোয়ানো ঠিকানা: ২৩/১ ওয়্যার স্ট্রিট, ওয়ারী, ঢাকা
একটি বাড়ি। তার পেছনে লুকিয়ে থাকে কত–না গল্প, কত–না স্মৃতি, কত–না আবেগ। ওয়ারীর তেমনই একটি বাড়ি তুলে দেওয়া হবে ‘ডেভেলপার’-এর হাতে। এ লেখায় সেই বাড়ির গল্প বলেছেন লেখক।
অনেক অপেক্ষার পর মদন মোহন বসাক রোড থেকে চাবিওয়ালা আনানো হলো। ২৭ বছর পর খোলা হলো আমার বাবা আবদুস সাত্তার চৌধুরীর স্টিলের আলমারি। বাবা চলে গেছেন ১৯৯৪ সালে। ছোট বোন লুবনা তাঁর মৃত্যুর দিন কয়েক পর বাবার জিনিসপত্র জড়ো করে ওই আলমারিতে রেখেছিল। ভাইবোনেরা টেবিলে স্তূপ করে রাখা হরেক রকমের জিনিসপত্র ছবি-চিঠি-অ্যালবাম উৎসুক হয়ে বুকে কিছুটা ব্যথা নিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছিলাম। এতে যেন প্রয়াত বাবা-মায়ের পরশ মাখানো আছে তখনো।
টুকরো টুকরো স্মৃতি চোখের সামনে ভাসছে। বাবা সকালবেলা বারান্দার ডিভানে বসে চতুষ্কোণ আয়না সামনে রেখে শেভ করছেন। পাশে সাদা আর সবুজ রঙের চলটে ওঠা একটি মগে রেজারটি চুবিয়ে নিচ্ছেন। পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে ছড়ি হাতে বাবা সন্ধ্যার নামাজ পড়তে যাচ্ছেন ওয়ারী মসজিদে। শুক্রবার বারান্দাভরা ছেলেমেয়ে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে গল্প করছেন তাঁর ইজিচেয়ারে বসে। চা খাওয়ার সময় অসীম ধৈর্য নিয়ে এক দঙ্গল নাতিনাতনিকে এক চামচ এক চামচ করে চা পান করিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় বিপাকে পড়তেন স্যাকারিনের দুটো বড়ি সেই চায়ের কাপে দেওয়ার জন্য কাকে সুযোগ দেবেন, তাই ভেবে। বাবা চলে যাওয়ার বছর তিনেক আগে প্রয়াত হওয়া মা–ও যেন হাজির হলেন সেই ক্ষণে। বিরতিহীনভাবে বুনে চলেছেন কোনো এক নাতির জন্য উলের সোয়েটার।
তাঁরা আমাদের ছেড়ে অন্যলোকে যাওয়ার পরে দশকের পর দশক পার হয়েছে। ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে গভীর ভালোবাসার মানুষ দুটোকে স্মরণ করার ফুরসত কমই পাই। আজ তাঁদের কথা বিশেষভাবে মনে হচ্ছে। কারণ, আজ আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটছে। জন্ম থেকে যে বাড়িতে আমি বড় হয়েছি, যে বাড়ির প্রতিটি কোণ আমার অস্তিত্বে জড়িয়ে আছে, যে বাড়িতে আমার সন্তানদের নাড়ি পোঁতা রয়েছে, সে বাড়িতে আজ আমার শেষ আসা। সে বাড়ি তুলে দেওয়া হয়েছে উন্নয়নকারী অর্থাৎ ‘ডেভেলপার’-এর হাতে। আমরা ভাই–বোনেরা তাই এসেছি বাড়িটিকে বিদায় জানাতে। আমরা সবাই এখন ‘নতুন’ ঢাকার বাসিন্দা। কাজেই একসময়ের শানশওকতের বিশাল বারান্দা আর উঠোনসহ ১৩০ বছরের পুরোনো এ বাড়ির আজ জরাজীর্ণ অবস্থা।
খুব কষ্ট হচ্ছিল দোতলার বারান্দায় গিয়ে। কত সময় কাটিয়েছি সেখানে। গরমের দিনে কেউ খালি গায়ে কেউ বা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে গল্প-গুজব করেছি। আমার প্রথম সন্তান বুনো ওই বারান্দাতেই তার কচি পায়ে হাঁটা শিখেছে। আমার ছোট্ট মেয়ে ত্বিষা এখানে ঝোলানো দোলনায় দোল খেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়েছে। শবে বরাতের সন্ধ্যায় মা এই বারান্দার রেলিং মোমবাতি দিয়ে সাজাতেন। আমরা ভাইবোনেরা সন্তর্পণে একটা একটা করে সেগুলো জ্বালাতাম। কোনো এক শবে বরাতে মা যখন পাড়া–প্রতিবেশীর জন্য হালুয়া পাত্রে বাড়ছিলেন, হঠাৎ তিনি শুনতে পান, ‘কত দাও?’ বিস্ময়ের সীমা রইল না যখন দেখলেন মুখে বোল না ফোটা তাঁর ছোট্ট মেয়ে লুবনা তাঁকে সেই প্রশ্ন করছে। মায়ের অভিব্যক্তি অনুধাবন করে বিজ্ঞের মতো সে বলে, ‘আচ্ছা, দাও দাও’। এটা পরিবারের এক অবাক করা কাণ্ড হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আজও বিবেচিত।
নিচে দেখি বড় উঠোনে পাড়ার বন্ধুবান্ধব নিয়ে বড় ভাইয়েরা ক্রিকেট খেলছেন।
খুব কষ্ট হচ্ছিল দোতলার বারান্দায় গিয়ে। কত সময় কাটিয়েছি সেখানে। গরমের দিনে কেউ খালি গায়ে কেউ বা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে গল্প-গুজব করেছি। আমার প্রথম সন্তান বুনো ওই বারান্দাতেই তার কচি পায়ে হাঁটা শিখেছে। আমার ছোট্ট মেয়ে ত্বিষা এখানে ঝোলানো দোলনায় দোল খেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়েছে। শবে বরাতের সন্ধ্যায় মা এই বারান্দার রেলিং মোমবাতি দিয়ে সাজাতেন। আমরা ভাইবোনেরা সন্তর্পণে একটা একটা করে সেগুলো জ্বালাতাম। কোনো এক শবে বরাতে মা যখন পাড়া–প্রতিবেশীর জন্য হালুয়া পাত্রে বাড়ছিলেন, হঠাৎ তিনি শুনতে পান, ‘কত দাও?’
ছোটবেলায় এর এক কোনাতে পাড়ার ছেলে ও মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে চড়ুইভাতি করেছি। উঠোনের দুধারে দুটি বিশাল বেলগাছ ছিল। ফরসা ক্ষীণ কায়ার খালি গায়ে পইতা পরা এক ব্রাহ্মণ পূজারি একধরনের অধিকারবোধ থেকেই জবা ফুল ও কয়েকটি বেলপাতা কিছুদিন পর পর এসে নিয়ে যেতেন। লাঠি হাতে তালি লাগানো পাঞ্জাবি পরা শ্বেতশ্মশ্রুমণ্ডিত সুদর্শন আর এক বৃদ্ধ প্রতি শুক্রবার সামান্য সাহায্যের জন্য নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকতেন বাড়ির সদর দরজায়। এই উঠোনেই ১৯৮০ সালে হাতে রং করা জলচৌকির ওপর বসে আমার গায়েহলুদ হয়েছিল।
ছাদে গিয়ে বাঁধভাঙা স্মৃতির তোড়ে মনে হলো মায়ের বড় প্রিয় আমাদের দোলারা মামা স্যানিও কোম্পানির সদ্য কেনা রেকর্ড প্লেয়ার বাজিয়ে শোনাচ্ছেন। পূর্ব দিকে বলধা বাগানের জয় কটেজ, যেখানে রবীন্দ্রনাথ সময় কাটিয়েছেন, আর কাচের টুকরো দিয়ে বাধানো পুকুরের সিঁড়ি। ‘আবার বনবাসে রূপবান’সহ অনেক ছায়াছবির শুটিংয়ের পছন্দের স্থান ছিল সেটা। আজিম-সুজাতার মান-অভিমানের সাক্ষী সে সিঁড়ি। ছায়ানটের অনেক গানের অনুষ্ঠানের ভেন্যুও ছিল সেই স্থান। বাড়ির ছাদে বসেই আমরা উপভোগ করতাম এসব অনুষ্ঠান। মা যখন বাবার ওপর রাগ করতেন তখন ওই ছাদ ছিল তাঁর আশ্রয়স্থল। দেখতে পাই, হাজার কাজে ব্যস্ত আমার ব্যবসায়ী বাবা তাঁর অভিমানী স্ত্রীর মান ভাঙানোর চেষ্টা করছেন সন্ধ্যাবেলায় ওই ছাদেই।
বাড়ির দক্ষিণে ২২ ওয়্যার স্ট্রিট এখন বিশাল যন্ত্রপাতি দিয়ে ছাওয়া বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন স্টেশন। আগে সেটা ছিল বন্ধ হয়ে যাওয়া হরদেও গ্লাস ফ্যাক্টরির হিন্দু কর্মচারীদের থাকার জায়গা। কয়েক ডজন পরিবার সেখানে থাকত। সূর্য ওঠার আগে থেকেই কর্মচাঞ্চল্যে ভরে উঠত সে বাড়ি। এতগুলো পরিবারের পানির একমাত্র উৎস একটি চাপকলকে ঘিরে বচসা ছিল সেখানকার নৈমিত্তিক ব্যাপার। ওই ছাদ থেকে দেখতে পেতাম হিন্দু বিয়ের আচার অনুষ্ঠান। পূজার সময় উৎসাহের সঙ্গে বন্ধুদের নিয়ে প্রতিমা দর্শনে যেতাম। পাশের বাড়ির ছেলে হিসেবে প্রসাদের ভাগটা একটু বেশিই পেতাম। উপভোগ করতাম পূজার সপ্তাহজুড়ে গানবাজনা।
আমরা যদিও পাঁচ ভাই–বোন, একটা বয়সের পরে হয়ে গেলাম আটজন। আমার ভালোবাসার বড় কাকা মঈনউদ্দিন চৌধুরী মারা যাওয়ার পর আমার বাবা-মা পিতৃমাতৃহীন তাঁর তিন সন্তানের দায়িত্ব নেন। একই স্কুলে যাওয়া, পাড়ার একই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খেলাধুলা করা, সব মিলিয়ে জমজমাট সময় পার করেছি আমরা। লাট্টু, মার্বেল, ডাংগুলি, ক্যারম ও লুডুতে কেটেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বড় হওয়ার পর সমবয়সী জামালদার নিয়মিত সঙ্গী ছিলাম নারিন্দার মোড়ে অবস্থিত বিখ্যাত ঝুনুর মোরগ–পোলাও ভোজনে।
পারিবারিক ব্যবসার ম্যানেজার অনিল কাকার সন্তান সমীর, সুকুমার ও মিনতি। ষাট দশকের কোনো এক দাঙ্গার সময় আমাদের বাসায় কিছুদিন ছিল। নিরাপত্তার জন্য তাদের মুসলমান নাম দেওয়া হয়েছিল। সমবয়সের স্বল্পকালীন অতিথিদের সেই সান্নিধ্য ভীষণ উপভোগ করেছিলাম। খেলাধুলা ছাড়া বরইগাছে ঝাঁকি দিয়ে ফল পাড়ার আনন্দ মিশে আছে আজও স্মৃতিতে।
লিলি ফুলশোভিত বাড়ির ঢোকার রাস্তায় দেখলাম নড়বড়ে পুরোনো সাইকেলের দুপাশে দুটো বড় ক্যান নিয়ে দুধওয়ালা ঢুকছে। দুধের মধ্যে কচুরিপানা কেন রাখা হতো, তা আজও আমার অজানা। মাথায় সাদা কাপড় মোড়া গাটরি নিয়ে রবি ধোপা ঢুকছে। এত খরিদ্দারের মধ্যে প্রতিটি কাপড় কালো ছোট চিহ্ন দিয়ে কীভাবে নির্দিষ্ট কাপড়ের মালিকের হিসাব সে রাখত, তা বিস্ময়কর। বাবার সুতি পাঞ্জাবির হাতা গিলা করা আর মায়ের শাড়িতে আভ দেওয়া নিয়ে ধোপাকে মায়ের ভর্ৎসনার কথা মনে পড়ল।
এই বিরাট একান্নবর্তী পরিবার চালাতে বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ঝাঁকড়া চুলের গফুর, সদা হাস্য বারেক, সুঠামদেহী সিরাজ, শান্ত প্রকৃতির সেকেন্দার ও চরম দুষ্টু গনি। অপদার্থ মাদকসেবী স্বামীকে বাড়ি থেকে বিতাড়নকারী তেজস্বিনী ঢাকাইয়া ছুটা কর্মী সালমার কথা মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে যাত্রাবাড়ী-পোস্তগোলায় কোথায় কীভাবে মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালাচ্ছে, সেই খবর আমাদের কাছে নিয়মিত পৌঁছে দিত। তার নাম আমরা দিয়েছিলাম ‘রয়টার’। এ বাড়িতে জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়ে যাওয়া মকবুল ড্রাইভারের আক্ষেপের কথা মনে পড়ল, ‘অন্যেরা পড়ালেখা শেষ কইরা চাকরি-বাকরি করে, না হয় বিদেশ যায়। আর আমাগো হেরা খালি পইড়াই চলছে।’
মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলো একলহমায় ফিরে এল। এর মধ্যে ছিল এয়ার রেইডের জন্য জানালার কাচে কাগজ লাগানো, এয়ার রেইডের ভয়ে সাধারণভাবে আলসে চাচাতো ভাই জামাল ভাইয়ের কোদাল দিয়ে ট্রেঞ্চ খোঁড়ায় অতি উৎসাহ, রাতের বেলায় জিপের শব্দে শঙ্কিত হওয়া, তাঁর মালিকানাধীন লঞ্চ চলাচল চালু করার জন্য সামরিক কর্তৃপক্ষের বাবার ওপর চাপ প্রয়োগে দুশ্চিন্তা, যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে গভর্নর হাউসে এয়ার বোম্বিং নিয়ে বাবার সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী এবং সন্ধ্যার পর সবাই মিলে বাড়ির আড়াই তলায় গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার ও বিবিসি শোনা। মাত্র ১২–১৩ বছর বয়সের চাচাতো বোন রচি ‘চরমপত্র’ শোনার জন্য প্রতি রাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। মুক্তিযুদ্ধ ওই ছোট্ট একটি মানুষের মনেও অনুরণন তুলেছিল।
এ বাড়ি অন্য একটি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭১-এর মার্চের শেষ সপ্তাহে এখানে অবস্থান করেন বেগম মুজিব, শেখ রেহানা, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। ওই সময় জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর বাল্যবন্ধু আবদুস সাত্তার চৌধুরীর ওই বাড়িকেই নিরাপদ স্থল হিসেবে বিবেচনা করে বেগম মুজিব জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ‘আমি সাত্তার ভাইয়ের বাসায় যেতে চাই’ (মমিনুল হক, ‘অস্তরাগে স্মৃতি সমুজ্জ্বল: বঙ্গবন্ধু তাঁর পরিবার ও আমি’, পৃ. ১৪৫)। এ বাড়ির লাগোয়া ৬ নম্বর নবাব স্ট্রিট ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে মমিনুল হক খোকার শ্বশুরবাড়ি। যাতায়াতের সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্য মাঝখানের দেয়াল ভাঙা হয়। সেই পড়ন্ত বিকেলে আলাদাভাবে পলেস্তারা করা ওই জায়গাটি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল এত বছর পরেও।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরব আমরা। আবেগে বুক ভারী হয়েছিল। হঠাৎ মনে পড়ল বাহাত্তর বা তিহাত্তর সালের কোনো এক ছুটির দিন সকালে অপরিচিত এক পরিবার এ বাড়িতে আসেন। প্রৌঢ় এক ভদ্রলোক জানালেন, তাঁরা এ বাড়ির পুরোনো বাসিন্দা। ১৯৪৮ সালে তাঁর পিতামহ এটি বিক্রি করে কলকাতায় চলে যান। এই প্রথমবার তিনি এসেছেন তাঁর আদি নিবাসে। উৎসাহের সঙ্গে ঘরগুলো দেখলেন। খুব অবাক হলেন যে কড়িকাঠগুলো এখনো একতলার ছাদটাকে আগলে রেখেছে। বসার ঘরের দেয়ালের ওপর দিকটাতে সুনিপুণ কারুকাজ তখনো শোভা পাচ্ছে। তিনি জানালেন, এসব তাঁর মনে ছিল না। এগুলো তাঁর ঠাকুরমার কাছ থেকে শোনা। ঘটনাটি মনে প্রবোধ জোগাল। এ বাড়ি তো তাঁদেরও ছিল, এখন নেই। আদতে আমরা সবাই ট্রানজিটেই থাকি, যদিও মনে করি এই আমার স্থায়ী ঠিকানা।
বাসায় ফিরে বিদেশে থাকা পুত্র বুনোকে সেদিনের অনুভূতি জানালাম। সে বলল, ‘বাবা, তুমি তোমার ঠিকানা হারাচ্ছ ঠিকই, আরও চব্বিশটা পরিবার কিন্তু নতুন এক ঠিকানা পাবে এই ২৩/১ ওয়্যার স্ট্রিট, ওয়ারীতে’। কষ্টটা একটু প্রশমিত হলো।