বাংলাদেশের বইমেলার অঙ্কুরকথন

পূর্ববঙ্গের প্রথম বইমেলার উদ্বোধন করছেন তৎকালীন  বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। পাশে মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি ড. মুহম্মদ এনামুল হক, ১৯৬৪। ছবি: সংগৃহীত
পূর্ববঙ্গের প্রথম বইমেলার উদ্বোধন করছেন তৎকালীন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। পাশে মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি ড. মুহম্মদ এনামুল হক, ১৯৬৪। ছবি: সংগৃহীত

আর এক দিন পরই ফেব্রুয়ারি মাস। বইমেলা আসন্ন। তাই বই বই গন্ধও চারদিকে। ফলে বাংলাদেশের বইমেলার অঙ্কুরকথন বলার এটাই ভালো সময়ও বটে। 

১৯৬৪ সালে সরদার জয়েনউদ্দীনের উদ্যোগে পূর্ববঙ্গের প্রথম বইমেলা আয়োজিত হয়। ১৯৬৪ সালের ১৮-২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত এ বইমেলার স্থান ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ভবনের নিচতলায়। সে সময় এ ভবনের নিচতলা ব্যবহৃত হতো পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে। সরদার জয়েনউদ্দীনের নেতৃত্বে সাত দিনব্যাপী আয়োজিত এ মেলায় প্রতিদিন বইবিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনার অনুষ্ঠান ছিল। ওই সময় জয়েনউদ্দীন ন্যাশনাল বুক সেন্টার অব পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের রিসার্চ অফিসার ও বইমেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আয়োজক কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. মুহম্মদ এনামুল হক। বইমেলাটি উদ্বোধন করেছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। বইমেলা উপলক্ষে অয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবন্ধকার ও আলোচকদের মধ্যে ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আবদুল কাদির, মোহাম্মদ নাসির আলী, জুলফিকার আলী, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুহম্মদ সিদ্দিক খান, সৈয়দ আলী আহসান, মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ, মোহাম্মদ মুর্তজা, ফজলে রাব্বী, জিয়া হায়দার, হুমায়ুন খান প্রমুখ। পঠিত প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘মুদ্রণ ও প্রকাশন: প্রতিবন্ধক ও প্রতিকার’ (মুহম্মদ সফিয়ুল্লাহ), ‘বইয়ের বাজার’ (মোহাম্মদ নাসির আলী), ‘গ্রন্থাগার সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির উপায়’ (মোহাম্মদ সিদ্দিক খান), ‘জীবনরস আস্বাদনে গ্রন্থের ভূমিকা’ (জুলফিকার আলী)।

পূর্ববঙ্গের প্রথম এই বইমেলায় আলাদা করে শিশু বিভাগে নানা বর্ণের আকাশের গল্প-কাহিনি, ছড়া ও ছবির বই ছিল বইমেলার উল্লেখযোগ্য দিক। কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে বেশ কিছু নারী পাঠক বই কিনেছিলেন। এই বইমেলা সম্পর্কে শেষ দিনে গ্রন্থমেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘গ্রন্থমেলার জনপ্রিয়তা ও সাফল্য লক্ষ করে আমরা অভিভূত হয়েছি। এ কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে গ্রন্থমেলা আয়োজনের সময় আমরা এর জনপ্রিয়তা ও সাফল্য সম্পর্কে দ্বিধামুক্ত ছিলাম না। আমাদের ধারণা ছিল যে হয়তো এ–জাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জনসমাজের মনোরঞ্জনে সমর্থ হবে না। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে গ্রন্থমেলায় যে বিপুলসংখ্যক দর্শক সমবেত হয়েছেন এবং নিজেদের দেশের গ্রন্থ ও প্রকাশনাশিল্প সম্পর্কে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন, তাতে আমরা বিস্ময়াভিভূত হয়েছি। আমাদের দেশের সংস্কৃতিসেবীদের এই আগ্রহ আমাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী করে তুলেছে’ (পূর্বালী ৫ম বর্ষ ২য় সংখ্যা, কার্তিক ১৩৭১ বাং)। 

গ্রন্থচিন্তক সরদার জয়েনউদ্দীনের বইমেলার উদ্যোগ ১৯৬৪ সালের আগেও ছিল। ১৯৬৪ সালের প্রারম্ভেও একটি বইমেলা ঢাকার টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আয়োজন করা হয়েছিল। ওই বইমেলার উদ্বোধন করেন তৎকালীন ডিপিআই শামসুল হক। তবে টিচার্স কলেজের বইমেলা সম্পর্কে বিস্তৃত জানা যায়নি। পূর্ববঙ্গে বইমেলার সূত্রপাত ঘটিয়ে  প্রাণিত হন সরদার জয়েনউদ্দীন।

সরদার জয়েনউদ্দীনের উদ্যোগে ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জেও একটি বইমেলার আয়োজন করা হয়। এই বইমেলার আলোচনা পর্বে অংশ নেন অধ্যাপক আবদুল হাই, মুনীর চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম প্রমুখ। বাংলাদেশে বইমেলা নিয়ে সাংগঠনিক কর্মের চিন্তন ও কর্মপ্রয়াস সরদার জয়েনউদ্দীনের মস্তিষ্কপ্রসূত।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১ জুলাই স্বাধীন দেশের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সরদার জয়েনউদ্দীন স্বাধীন ও সার্বভৌম দৃষ্টিতে বই আন্দোলনকে এগিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে সরদার বলেন, ‘আমরা পুরো পরিকল্পনাটিকে একটি আন্দোলন বলছি, কারণ সবাই যেন এতে আন্দোলিত হয়, সবাই যেন জাগ্রত হয়। বইয়ের জন্য, জ্ঞানের জন্য আরও উৎসাহী হয়। দেশের বিভিন্ন স্তরের লোকের মধ্যে শিক্ষার আলোক যদি স্পর্শ করাতে হয়, তবে সবাইকে বই পড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। বাংলাদেশের  টিপিক্যাল প্যারাডক্স হচ্ছে যে যাদের বই কেনার পয়সা আছে, তাদের বই পড়ার ইচ্ছে নেই। যাদের বই পড়ার চাহিদা আছে, তাদের বই কেনার ক্ষমতা নেই।’ (সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ১ম বর্ষ, ১৫ সংখ্যা ১৯৭২)

গত শতকের আশির দশকে বইমেলায় মানুষের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত
গত শতকের আশির দশকে বইমেলায় মানুষের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীন দেশের এমন বইবান্ধব চিন্তক মানুষটি ইউনেসকো ঘোষিত আন্তর্জাতিক গ্রন্থবর্ষ হিসেবে ১৯৭২ সালকে সামনে পেয়ে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে বাংলা একাডেমিতে একটি আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজন করেন। ১৯৭২ সালের ২০-২৬ ডিসেম্বর সপ্তাহব্যাপী এই বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। বইমেলার স্লোগান ছিল ‘বই সবার জন্য’। এই বইমেলায় ইউনসকোসহ ভারত, জাপান, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন, বুলগেরিয়া অংশ নেয়। এ অনুষ্ঠানের সময় বাংলা একাডেমির দেয়ালের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড পাবলিশার্সের রুহুল আমিন নিজামী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রগতি প্রকাশনীর কিছু বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেন। তাঁর দেখাদেখি  পরদিন যুক্ত হন মুক্তধারা প্রকাশনীর প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহা ও বর্ণমিছিলের কর্ণধার তাজুল ইসলাম। তাঁদের বিছানো বইয়ের পসরাই নানা অনুষঙ্গের মিছিলে আজকের অমর একুশে গ্রন্থমেলার মহিরুহে পরিণত হয়েছে। যে চট বিছিয়ে বইমেলা আয়োজনের প্রেক্ষাপট ও পরিবেশ সৃজন করেছিলেন সরদার জয়েনউদ্দীন, তা যেমন ঐতিহাসিকভাবে সত্য, তেমনি এটিই গড়ে দিয়েছে আমাদের আজকের সুপরিসর বইমেলার ভিত্তমূল। চিত্তরঞ্জন সাহা ছাড়া পরবর্তীকালে অন্য দুজনের প্রকাশনার ক্ষেত্রে কর্মতৎপরতা প্রণিধানযোগ্য না হওয়ায় এবং চিত্তরঞ্জন সাহার স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে প্রকাশনার জগতে ব্যাপক তৎপরতার ফলে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আঁতুড়ঘরের আলোচনায় তিনিই সবচেয়ে স্মরণযোগ্য। চিত্তরঞ্জন সাহা প্রকাশনাকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে রূপ দিতে এশিয়ান কালচার ফর ইউনেসকোর বুক ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। তিনি তাঁর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মুক্তধারা থেকে বইয়ের খবর নামের একটি পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করেন। বই প্রকাশনার জন্য একটি রিভিউয়ার প্যানেল তৈরি করেন। এই প্যানেলে ছিলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সুব্রত বড়ুয়া, শামসুজ্জামান খান, হাশেম খান, আবুল হাসনাত প্রমুখ। সারা দেশে বইমেলা সেমিনার সিম্পোজিয়ামসহ নানামুখী বইবান্ধব কর্মপ্রয়াস চালিয়ে বাংলাদেশের প্রকাশনার প্রতিষ্ঠানিকতায় কিছুটা ভিত তৈরি করে সৃজনশীল প্রকাশনাকে লোকপ্রিয় করেন তিনি। আজ গ্রন্থমেলা ও বাংলাদেশের প্রকাশনার জগতের আলোচনায় প্রসাদগুণেই চিত্তরঞ্জন সাহা স্মরণযোগ্য।

১৯৭২ সালের আন্তর্জাতিক বইমেলার উৎসব লোগো এবং বইমেলা উপলক্ষে পাঠকের উচ্চারণ নামে ছোট একটি নান্দনিক পুস্তিকা প্রকাশ করেছিলেন সরদার জয়েনউদ্দীন। বইমেলার দাওয়াত কার্ড ও খামের ডিজাইনেও নান্দনিকতা ছিল। বইমেলার পুস্তিকা ২৪ পৃষ্ঠার ও মোহাম্মদ মহসীনের আঁকা প্রচ্ছদপট ছিল। পুস্তিকাটিতে বই নিয়ে বিভিন্ন মনীষীর বাণী ও বইসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যের সন্নিবেশ ছিল।

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের বইমেলার অব্যবহিত পর ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে এপ্রিল মাসে (বাংলা বৈশাখ মাসে) সরদার জয়েনউদ্দীন বর্তমান শিল্পকলা একডেমিতে একটি জাতীয় গ্রন্থমেলার আয়োজন করেন। (দৈনিক সমকাল, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪) জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে জেলায় জেলায় বইমেলার আয়োজনের প্রসার ঘটান। এসব মেলায় শুধু বইয়ের পসরা নয়, আলোচনা, আড্ডা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সহযোগ থাকত। অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী গোলাম মুস্তাফা, হাসান ইমাম, হাসান আজিজুল হকসহ শিল্পী–সাহিত্যিক ও বহু বুদ্ধিজীবী এতে অংশ নেন।

সরদার জয়েনউদ্দীন অনুধাবন করতেন, তৃণমূলের বইমেলা হচ্ছে সমাজ জাগরণের বাতিঘর। তাই তিনি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, বরিশাল, বগুড়া শহরে বাৎসরিক মেলার আয়োজন করেন। এর মধ্যে আঞ্চলিক মেলার আয়োজন করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র যশোর ও মাদারীপুরে। তিনি জেলায় জেলায় বইমেলা করেই থামতে চাননি, তাঁর চিন্তার ক্যানভাসে ছিল থানাগুলোতে বইমেলার আয়োজন করা। কিন্তু তাঁর সে উদ্যোগ তিনি নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাস্তব রূপদান করতে পারেননি।

ঢাকার বাইরের বইমেলার বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন কবি শামসুর রাহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অভিনেতা গোলাম মুস্তাফা, হাসান আজিজুল হক প্রমুখ। সরদার জয়েনউদ্দীনের তৃণমূলের বইমেলার মাধ্যমে পাঠাভ্যাস বৃদ্ধির আন্দোলনে উজ্জীবিত হয়ে ঢাকার বাইরে সেই সময় কয়েকজন গ্রন্থকর্মী সৃজন হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে যশোরের অধ্যাপক শহীদ হোসেন ও আমীর উল ইসলাম খান, মাদারীপুরের কামাল উজ্জামান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। (বই পত্রিকা মার্চ-২০০৮ সংখ্যা, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ঢাকা)

সরদার জয়েনউদ্দীনের কর্মপ্রয়াসে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র নব-আঙ্গিকে ভিন্ন মাত্রা পায়। বইমেলা আয়োজনের পাশাপাশি বই পড়ার আয়োজনও করেন তিনি। বই পড়ার হার ও মান নির্ণয়ের জন্য সারা দেশে জরিপকাজ চালান। বাংলাদেশের লেখকদের গ্রন্থপঞ্জিও প্রকাশ করেছিল জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের গ্রন্থপাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে স্কুলে স্কুলে বক্তৃতামালার আয়োজন করা হয়েছিল। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে জয়েনউদ্দীন ভারত, শ্রীলঙ্কা, জার্মানি প্রভৃতি দেশে অনুষ্ঠিত বইমেলায় অংশগ্রহণ করেন। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে বইমেলায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্টল রৌপ্যপদক পায়। জয়েনউদ্দীন ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ব্যক্তিগতভাবে একটি পদকও লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে রাশিয়াতে যাওয়া স্থির হয়েছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই সরকার এই প্রাগ্রসর চিন্তার মানুষটিকে অযাচিতভাবে অব্যাহতি দেয় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব থেকে। তৎকালীন সরকারের তাদের চিন্তা ও পরিকল্পনার সঙ্গে জয়েনউদ্দীনের সাযুজ্য মনঃপুত হয়নি বিধায় অসময়ে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ছাড়তে হয় তাঁকে। ফলে গ্রন্থকেন্দ্র বঞ্চিত হয় তাঁর কর্মকুশলতার সুফল থেকে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন বাঙালি সংস্কৃতি লালনের এক তীর্থভূমি। ফেব্রুয়ারি মাসে মেগাসিটি ঢাকার সমস্ত চলার পথের মোহনা যেন বইমেলার মাঠ। বইমেলার প্রারম্ভে এর আঁতুড়ঘরে যে সব কুশীলব শ্রম নিবেদন করেছেন, তাঁদের সম্মান জানানো জরুরি। বইমেলার দীর্ঘদিনের চলার পথ পরিক্রমণে বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, বিশেষ করে অমর একুশে গ্রন্থমেলার নামে ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি বইমেলা পরিচালনার মূল কান্ডারি হিসেবে ধন্যবাদের দাবিদার। বইমেলায় যেমন নতুন নতুন সুযোগ–সুবিধার সংযোগ ঘটছে, তেমনি সমস্যারও নবমাত্রিকতা নিয়ে হাজির হচ্ছে। বইমেলার অংশীজনদের আন্তরিক উদ্যোগই পারে মেলা আরও লোকপ্রিয় ও পাঠকবান্ধব করতে।