বিশেষ দ্রষ্টব্য এই বসন্তে

অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী
অলংকরণ: কাইয়ুম চৌধুরী

প্রেম, পর্দায় একরকম, কবিতায় আরেকরকম।

গল্পের কঙ্কাল চিত্রনাট্য। নট-নটীকে বুঝিয়ে দিই, ক্যামেরার সামনে কীভাবে তাকাবে, উঠে দাঁড়াবে, কীভাবে ঘুরে হাঁটতে হাঁটতে ফ্রেমআউট হয়ে যাবে। প্রথমবার তাদের তাকানো ঠিক ছিল, উঠে দাঁড়ানো ঠিক ছিল না। দ্বিতীয়বার ঘুরে হাঁটাহাঁটি আমার মনের চাওয়া-মতো হয়নি। তৃতীয়বার, শট ওকে। ব্রহ্মপুত্র আর মধুমতীর সম্পর্কটা ফুটে উঠল। একদিন, দর্শক এই লাভস্টোরি দেখে আহ্-উহ্ করবে।
প্রেম যখন কবিতায়, শব্দই মারণাস্ত্র। ফাঁকা একটা মাঠের মধ্যে চাষি হব, শব্দের পরে শব্দ বসাব, নৈঃশব্দ্য খসাব, বাক্য গড়ে তুলব। প্রকৃত শব্দের নেশায় ছিপ ফেলে বসে থাকব, একা, চুপচাপ। যদি মিলে যায় মাছ, বড়শি টানলেই শব্দ হবে, এটি একটি প্রেমের কবিতার জন্মমুহূর্ত। মাছ যদি বড়শিতে না-ও ঠোকরায়, একটি বিরহের কবিতা পেয়ে যাব। প্রতিবেশীরা টের পাবে, এ লোকের লেখায় মধু আর বিষ একাকার হয়ে যাচ্ছে। পাঠমাত্রই পার্পল হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী, পাঠকের মিশ্র অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ছে আগানে-বাগানে। ভ্রমণ-সংকেতে, সমুদ্রের রূপকল্পে এক মরুভূমির বালি-বিস্তৃতি দৃশ্যমান হচ্ছে।

প্রেম, পর্দায়-কবিতায় যাই হোক, বাস্তবে কাহাঁতক?
চিত্রনাট্যহীন, ক্যামেরা নেই, রি-টেক নেই। একবারই। কবিতার মতো শব্দ-কাটাকুটি নেই। অনির্ধারিত। তোমার মনের মধ্যে আঙুরবাগান, না ধরলা নদী আমি জানি না। আমার দুচোখে তারকাঁটা, না শর্ষেফুল, তুমি জানো না। আমরা হয়তো ভিসা চেয়ে মুখোমুখি, পরস্পরের দেশে যেতে চাই, সীমান্ত-ধারণা তুলে নিতে চাই। চাই, চিত্রনাট্য নিজেই আসুক, দেখুক, আমরা কেমন করে চলি-বলি, মধু-বিষে মিশি, আকর্ষিত দিবানিশি! চাই, কবিতা এসে পাঠোদ্ধার করুক—কোন বর্ণমালায় লেখা আমাদের মন!


বিশেষ দ্রষ্টব্য হচ্ছে, চাইলেই কি আর বালিতে তরমুজ ফোটে, মেটে রসময় প্রয়োজন?