হাওয়ারুন বেওয়ার মে ডে
হাওয়ারুন বেওয়াকে বললাম, হাওয়ারুন,
আজ যে মে ডে সে খবর রাখো? আজও
দেখছি তুমি সেই সাতসকালে এসে আঙুলে
রবার জড়িয়ে দুনিয়াটাকে লাথি দেখানোর
ভঙ্গিতে পা ছড়িয়ে বসে ইট ভাঙতে লেগে গেলে।
জানো না আজ মে ডে? আজ কাজকর্ম সব বন্ধ।
যাও, বাড়ি যাও, বাড়ি গিয়ে আজ একটু শরীরটাকে
বিশ্রাম দাও, একটু ঘুমাও। আর যদি পারো, ওবেলা
ময়দানে এসো, ওখানে মিটিং হবে। লালসালুর
পট্টি মাথায় বেঁধে এসো, মিটিংয়ে
সবাই মিলে আওয়াজ তোলো: ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’।
আমার মুখের দিকে কিছুক্ষণ হাঁ করে তাকিয়ে
থেকে হাওয়ারুন বেওয়া বলল, ভাইজান, আপনে
মে ডে না কিসের কতা জানি কইলেন, হেইডা
আবার কী? আপনে কি আমার মেয়েডার
খবর নিতাছেন? আমি তো হারা দিন ওই
লেংড়া-লুলা মাইয়াডার খবর লইতে পারি না।
হেরে তার দাদির কাছে রাইখা আসি রোজ,
আল্লার হাওলায়। আমি চইলা আহি
তয় আমার মনডা হারা দিন পইড়া থাহে হের কাছে।
হের খবর জানুম ক্যামনে কন? তাও বালো
আজ যে আপনে মাইয়াডার খবর জিগাইলেন।
মাতবরের গুণ্ডা পোলাডার ডরে তো আমি
হের কতা কাউরে হুনাইতে চাই না। আর আইজ
কাম না কইরা বাড়ি চইলা গেলে খামু কী, ভাইজান?
আপনে আমারে কাম ফালাইয়া যাইতে কন, এইটা
কেমুন কতা? আর যা-ই কন, কাম ছাইড়া যাইতে
কইয়েন না, গরিবের প্যাটে লাত্তিডা মাইরেন না,
আপনার আল্লার দোহাই।
ইট ভাঙতে কি আর
মনে চায়, ভাইজান, সাধে কি আর ইট ভাঙ্গি,
এই পুড়া প্যাটের লাইগাই তো ইট ভাঙ্গি।
আপনার মে ডে নাকি কইলেন, হে কি আমারে
আর আমার মেয়েডারে খাওয়াইব? না পিন্দাইব?
আর ময়দানে গিয়া কী হইব? ময়দানে তো খালি চিক্কর
পাড়ে, কামের কাম তো কিসসু অয় না কুনুদিন।