বাংলা বনাম ইংরেজি

.
.

লক্ষণবিচারে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজির চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠা ঘটেছে। ইংরেজি-মাধ্যম শিক্ষা আগেও বেশ জোরদার ছিল। বিশেষত উচ্চশ্রেণির মধ্যে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর চলটা মধ্যবিত্ত শ্রেণিও বেশ রপ্ত করে নিয়েছে। চিকিৎসাবিদ্যা, প্রকৌশলবিদ্যা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ বিভাগ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির মাধ্যম অনেক দিন ধরেই কার্যত ইংরেজি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ২০০৬ সালে বিশ বছর মেয়াদি ‘উচ্চশিক্ষার কৌশলপত্র’ প্রচার করেছে। তাতে ইংরেজির অবিকল্প প্রতিষ্ঠা এতটাই জোরদার যে তারা প্রশ্নটি উত্থাপন করার প্রয়োজনই বোধ করেনি। বাকি ছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের মূলধারার শিক্ষা। ‘ইংলিশ ভার্শন’ নামের এক বস্তু সেখানে প্রবল প্রতাপে আসীন হওয়ায় ইংরেজির রাজত্ব চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
অভিভাবকের দিক থেকে সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর কারণটা খুব সরল আর জোরালো। যুক্তিযুক্তও বটে। একদিকে এর সঙ্গে আভিজাত্যের ব্যাপার জড়িত। অন্যদিকে সন্তানকে বাজারের উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা। রাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী প্রপাগান্ডাকে শেষ পর্যন্ত আলংকারিক বাগাড়ম্বরেই সীমিত করে রেখেছে; নিজের কতৃর্ত্বে চালানো ‘মূলধারা’র শিক্ষাব্যবস্থায় কোনো ধরনের আভিজাত্য কায়েম করতে পারেনি; আন্তর্জাতিক না হোক, দেশীয় চাকরির বাজার ব্যবস্থাপনায়ও গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা পেশ করতে পারেনি। এর কোনোটির জন্যই অভিভাবক বা নাগরিক সমাজকে দায়ী করা যায় না। কিন্তু রাষ্ট্রের জন্য অবস্থাটা শোচনীয়। অধীন জনগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রধান অবলম্বন শিক্ষা। অপরাপর নিয়ন্ত্রক ও নিপীড়ক হাতিয়ারের তুলনায় এ ব্যাপারে শিক্ষাব্যবস্থা অনেক বেশি কার্যকর। সেই ব্যবস্থার ওপর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ না থাকা রাষ্ট্রের লাবণ্যের ইঙ্গিত দেয় না। তার চেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলার বিপরীতে ইংরেজি কিংবা ইংরেজির বিপরীতে বাংলা—এ ধরনের একটা ছক আমাদের চিন্তাজগতে খুব অমোচনীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এবং সেটা রাষ্ট্রের সম্মতি-অসম্মতির তোয়াক্কা না করেই। অথচ বাংলা আর ইংরেজিকে খুব সহজে আর যুক্তিগ্রাহ্যভাবেই পাশাপাশি রেখে বিবেচনা করা যেত। এ দুটো প্রতিযোগী না হয়ে সহযোগী হতে পারত। তেমনটা হলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য অধিকতর কল্যাণকর হতো।
ইংরেজির প্রতি আমাদের দুর্বার আকর্ষণের প্রধান কারণ আসলে চাকরির বাজার নয়, বরং ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকারজনিত ছদ্ম আভিজাত্যের বোধ। এ ব্যাপারে কোনো সংশয় না রাখাই ভালো। ইউরোপ বা এশিয়ার ‘উন্নত’ দেশগুলোর একটাও এ চোরাগোপ্তা পন্থায় চাকরির বাজার দখল করেনি। ইউরোপের দেশগুলো নিজ নিজ ভাষায় পড়াশোনা করে, কিন্তু অনেকেই অন্য এক বা একাধিক ভাষা ভালোমতো রপ্ত করে। সেখানে এক ভাষা আরেক ভাষার বিরোধী হিসেবে হাজির হয় না। চীন বা জাপান বা কোরিয়া নিজেদের ভাষাতেই উন্নতির মন্ত্র পেয়ে গেছে। ওসব ভাষা বাংলার চেয়ে ‘উন্নত’—এমন প্রমাণ দাখিল করা সহজ হবে না। আসলে পাশের দেশ ভারত ছাড়া দুনিয়ায় এমন দেশ সম্ভবত একটাও পাওয়া যাবে না, ইংরেজি যেখানে অন্তত বাহ্যত চাকরি বা উন্নতির কারণ হয়েছে। বাংলাদেশের বহু মানুষ ভারতের উদাহরণ দিয়ে থাকে। কিন্তু উদাহরণটা অতিশয় অন্যায্য। ভারত একটা বিশাল বহুভাষী দেশ। হিন্দির প্রতি অন্য অনেক ভাষাভাষীর বিদ্বেষ বা উন্নাসিকতা আছে। উপনিবেশের কল্যাণে ইংরেজি ভাষার ইতিহাসটা বেশ পুরোনো। আর, অনেকেই ভুলে যান, ভারতে কোটি কোটি লোকের মাতৃভাষা ইংরেজি। বহুভাষিক বাস্তবতার কারণে ইংরেজি রপ্ত করার ব্যবহারিক চাপ সেখানে প্রবল। সব মিলিয়ে সেখানে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার একটা উল্লেখযোগ্য সাফল্য আছে। কিন্তু ভারতের মোট জনসংখ্যার শতকরা কত ভাগ সে সাফল্যের অংশীদার? আর বাংলাদেশের ভাষাপরিস্থিতির সঙ্গে ভারতের কি একবিন্দুও মিল আছে?
চাকরির বরাতে ইংরেজি-মাধ্যম শিক্ষার দ্বারস্থ হওয়া যে আসলে নিজেকে নিজে ভুলভাবে বুঝ দেওয়া, তার এক নগদ প্রমাণ দেশীয় বাজারেই তৈরি আছে। পত্রিকার রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে মোটা মাইনার চাকরির একটা বড় অংশ ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার দখলে। এই গরিব দেশের বৈদেশিক মুদ্রা নাকি এভাবে দেদার বাইরে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর এ চাকুরেরা কি ভাষার দক্ষতাহেতু বাংলাদেশে কাজ পেয়ে যাচ্ছে? নিশ্চয়ই না। যদি তা হয়ও, তাহলে প্রশ্ন জাগে, গত দশকগুলোতে ক্রমবর্ধমান হারে বাংলাদেশের যেসব নাগরিক ইংরেজি মাধ্যমে পড়ল, তারা স্বদেশের এ বাজারটা কেন কব্জা করতে পারল না। তাদের লক্ষ্য সম্ভবত আন্তর্জাতিক বাজার। কথিত ‘উচ্চশিক্ষার কৌশলপত্রে’ ওই বাজারের কথাই বলা হয়েছে। সেই লক্ষ্য কতটা অর্জিত হচ্ছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। তবে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার দৌলতে ইউরো-আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের নাম দাখিল করাটা অনেক সহজ হয়। সত্য হলো, বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত অভিভাবকেরা এ দেশে সন্তানের ভবিষ্যৎ দেখতে পান না। বিদেশে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েই সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠান। ফলে ইংরেজি শিখে কাজটা এগিয়ে রাখার লক্ষ্যেই প্রাথমিক স্কুলিংটা শুরু হয়। শিক্ষা বা চাকরির বাজার কথার কথা মাত্র।
বাংলাদেশের সচ্ছল নাগরিকদের বড় অংশটা যদি দেশে নিজেদের ভবিষ্যৎ না দেখে, তাহলে বিদেশে থিতু হওয়ার উপযোগী শিক্ষা গ্রহণের অধিকার তাদের থাকাই উচিত। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষে এ রকম দায়সারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। তার প্রধান কারণ, রাষ্ট্র কেবল উচ্চবিত্তের নয়। কতগুলো মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা-গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা এবং স্বার্থের সমন্বয়সাধন রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে। ধনী মানুষজন রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ-নিরপেক্ষভাবে ‘আন্তর্জাতিক’ শিক্ষা গ্রহণ করবে আর গরিব মানুষেরা ইহলোকে দাখিল হতে না পেরে পরলোকের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার শিক্ষা-পরিকল্পনা করবে—এটা রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা হতে পারে না। বাংলাদেশে এ অবস্থাই চলছে। বহুদিন ধরে আমরা ‘তিনধারা’ শিক্ষাব্যবস্থার সংকট নিয়ে কথা বলে আসছি। তাতে নানা যৌক্তিক-অযৌক্তিক কারণে মাদ্রাসাশিক্ষার সংকটের কথা বেশি আলোচিত হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের দিক থেকে অধিকতর ক্ষতিকর এবং অন্যায্য ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার প্রতি আমাদের বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষাতাত্ত্বিকদের নজর অতটা পড়েনি বলেই মনে হয়। বস্তুত উচ্চশ্রেণি সম্পূর্ণভাবে ইংরেজি মাধ্যমে দাখিল হওয়ার কারণেই মধ্যশ্রেণি মনস্তাত্ত্বিক সংকটে পড়েছে। এই চাপ সামলানোর জগাখিচুড়ি উপায় হিসেবে এসেছে তথাকথিত ‘ইংলিশ ভার্শন’। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ‘মূলধারা’র শিক্ষা নতুন করে সংকটে পড়ল। সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক থেকে বাংলা বনাম ইংরেজি দ্বৈরথটা তৈরিই ছিল। এবার এর প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলল।
বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে যদি ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া যেত, তাহলে সম্ভবত ভালোই হতো। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়। আমি এখানে শিক্ষাতত্ত্বের কথা তুলছি না। আজতক শিক্ষাতত্ত্বে মাতৃভাষার বিকল্প প্রস্তাবিত হয়নি। কিন্তু সে কথা মুলতবি রেখে যদি বিশুদ্ধ বাজারের দিক থেকেই কথাটা তুলি, তাহলেও বলা যাবে, ইংরেজিতে সব মানুষের শিক্ষার বন্দোবস্ত করা সম্ভব নয়। কারণ, ভিনদেশি-ভিনভাষী শিক্ষা অসম্ভব ব্যয়বহুল। বাংলাদেশের ধনী অভিভাবকেরা সন্তানদের প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য যে বিপুল খরচ করেন, তার একটা অংশ যদি ‘মূলধারা’র শিক্ষায় আনা যেত, তাহলে শিক্ষার চেহারা আমূল বদলে যেত। এ কাজ ব্যক্তিগত উদ্যোগের কাজ নয়। শিক্ষায় বিনিয়োগের ধরনই হলো, এ বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি এবং লাভের হিসাবটাও ভিন্ন। কারণ, এখানে দুইয়ের মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছে ‘মানুষ’ নামের সক্রিয় বৈচিত্র্যপূর্ণ এজেন্ট। ব্যক্তির মধ্যে শিক্ষাপ্রক্রিয়াটা কীভাবে কাজ করবে, তা আগেভাগে বলা সম্ভব নয়। এই পরিকল্পনাটা তাই করতে হয় সামষ্টিকভাবে। রাষ্ট্রের পক্ষেই তা সম্ভব।
বাংলার বিপরীতে ইংরেজির যে কুসংস্কার তৈরি হয়েছে পুরো সমাজে, তা নিরসনের দায়িত্বও নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। শিক্ষা পণ্য বটে; কিন্তু, আগেই বলেছি, একটু ভিন্ন ধরনের পণ্য। আর ভাষাশিক্ষা কোনো একজনকে তুলনামূলক সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে উপনীত করতে পারে বটে, কিন্তু সেটা শিক্ষার খুব সামান্য অংশ। অংশকে মাথায় রেখে সমগ্রের পরিকল্পনা করা যায় না। আবার ইংরেজি শিক্ষাকে অধিকাংশ মানুষ যেহেতু অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, তাকে অগ্রাহ্য করাও গণতান্ত্রিক হবে না। দরকার এ দুয়ের সমন্বয়। তুলনামূলক অনেক কম খরচে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এ কাজটা করা সম্ভব।
বাংলাদেশের মূলধারার শিক্ষার্থীরা অন্তত বারো বছর ইংরেজি পড়ে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বারো বছর পড়ার পরও ভাষাটা কাজ চালানোর উপযোগী পরিমাণে রপ্ত করতে পারছে না। পদ্ধতিগত ঘাটতি ছাড়া এর আর কোনো ব্যাখ্যা হয় না। তাহলে প্রথম করণীয় হলো, বিদ্যমান ইংরেজি-শিক্ষার পদ্ধতিগত সংস্কার। যদি মনে হয়, এ-ও যথেষ্ট নয়, তাহলে ইংরেজি ভাষাশিক্ষা খাতে আরও নম্বর বরাদ্দ করা যেতে পারে। বলা, শোনা, লেখা ও পড়া—ভাষাশিক্ষার এ চার ধাপেই প্রশিক্ষণের বাড়তি বন্দোবস্ত বারো বছর ধরেই বিভিন্ন মাত্রায় হতে পারে। দরকার যোগ্য প্রশিক্ষক গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ। স্কুল ও কলেজের বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যেই এ উদ্যোগ সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যদি দেখা যায়, তারপরও স্নাতক পর্যায়ে পড়ার জন্য যথেষ্ট শিক্ষার্থী তৈরি হয়নি, তাহলে স্নাতক পর্যায়েও বাড়তি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব। পৃথিবীর সর্বত্র সে ব্যবস্থাই আছে। বাংলাদেশের মতো ভাষা রপ্ত করার জন্য খোদ শিক্ষাটাকেই কোথাও বদলে ফেলা হয়নি।
বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কেতাবাদি রচিত হয়নি। অনুবাদের সংস্কৃতিও যথেষ্ট পোক্ত নয়। কিন্তু পরিকল্পিত দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নিলে বাংলায় এসব কাজ করা যাবে না, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। বাংলা প্রায় পঁচিশ-ত্রিশ কোটি লোকের ভাষা। বাংলাভাষীদের নিজেদের বাজারই যথেষ্ট বড়। ভাষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে বেশ সুবিধাজনক সাম্য আছে। এ সাম্যকে কাজে খাটিয়ে সবার জন্য শিক্ষার বন্দোবস্ত করা যেমন তুলনামূলক সহজ, তেমনি ভালো শিক্ষা ব্যবস্থাপনাও সম্ভব। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ তো নেওয়া হয়ইনি, এখন ‘ইংলিশ ভার্সনে’র নামে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায়ও গুরুতর সংকট তৈরি করা হয়েছে। মধ্যবিত্ত স্বভাবতই এ ধারার প্রতি আকৃষ্ট হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে না পারায় শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রজন্ম-পরম্পরায় ক্ষতির শিকার হওয়ার আগেই এ অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন দরকার। ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব না কমিয়েই তা করতে হবে। ‘ইংলিশ মিডিয়াম’ স্কুল এবং ওসব স্কুলের শিক্ষার্থী-উভয়কে নিরুৎসাহিত করার সরকারি কৌশলপত্র প্রণীত হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা পড়বে মূলত বাংলায়, রপ্ত করবে ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষা—এবং তা মূলধারার সরকারি ব্যবস্থাপনার অধীনে। বাজারি শিক্ষা এবং সে শিক্ষার খরিদ্দারদের সুষ্ঠু বিকাশ কেবল এভাবেই সম্ভব হতে পারে। ‘প্রকৃত’ শিক্ষা ও শিক্ষাতত্ত্বের কথা না হয় নাই তুললাম।