গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হলেন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়। এমনই এক ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখে হুমায়ুন আজাদ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি এলেই যেন মুক্তমনা বাঙালি সন্তানদের ওপর শনির দৃষ্টি পড়ে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়।
জিয়া হায়দার কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, ‘বাঙালি বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে মৃত।’ আজ সেটাই প্রমাণিত হলো। অভিজিৎ রায় একজন ব্লগার ছিলেন। বিদেশ-বিভুঁইয়ে থেকেও মাতৃভাষা চর্চা করতেন। বাঙালির প্রাণের উৎসব বইমেলায় যোগদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এসে তাঁকে লাশ হতে হলো। অভিজিৎ রায় মরে প্রমাণ করলেন, মুক্তবুদ্ধি চর্চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনুর্বর ভূমি।
অভিজিৎ রায় ব্লগে লিখতেন। যদি তা ইসলামের বিরুদ্ধে হয়, তার প্রতিবাদের আরও ১০টি ইসলামপন্থী ব্লগ খোলা যেত। প্রয়োজন হলে মুখোমুখি বসে তর্ক করা যেত। কিন্তু তাঁকে হত্যা করতে হবে—এটা কেমন কথা।
একজন লেখক ও ব্লগার হিসেবে আমি অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিজিৎ হত্যার বিচার দাবি করছি। সবাইকে নিজ নিজ ধর্ম বা বিশ্বাস নিয়ে বসবাস করার অধিকার দিয়েছে বাংলাদেশ সংবিধান। তবে এমন কিছুই করা উচিত হবে না, যা কারও ধর্মানুভূতিতে সরাসরি আঘাত হানে। বরং ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা না করলেও অন্তত ভিন্নমতের মানুষকে নিজের বা ধর্মের শত্রু ভাবা নিছক গোঁড়ামি ছাড়া আর কিছু নয়। সবাই সবার বিশ্বাস নিয়ে বসবাস করবে—এটাই রাষ্ট্রের মূলনীতি। এই সহনশীলতা অর্জন না করলে রাষ্ট্র টিকতে পারে না।
রাসেল আহমদ, কুষ্টিয়া।