সুস্থ মা-শিশুর জন্য

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে প্রসবকালে ও প্রসব–পরবর্তী জটিলতার কারণে মাতৃমৃত্যুর হার বেশি। বাংলাদেশে এ হার প্রতি লাখে ১৭০ জন। ১৯৯০ সালে এ হার ছিল ৫৭৪ জন। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রসবকালে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ৭০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশও সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রসবকালে মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে তিন হাজার প্রশিক্ষিত ‘মিডওয়াইফ বা ধাত্রী’ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ক্লিনিকের মাধ্যমে সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সারা দেশে কিছু সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা এলাকায় সরকারি হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক ও সরকারি সহায়তায় কয়েকটি এনজিও পরিচালিত প্রকল্প থেকে স্বল্পমূল্যে, কখনো কখনো বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে।
মা ও শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, শুধু দারিদ্র্য নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব, যাতায়াতের অসুবিধার করণেও বাড়িতে অদক্ষ ব্যক্তির হাতে প্রসব করানো হচ্ছে। আবার দেখা গেছে, দরিদ্র নারীদের সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে হাসপাতালে প্রসব করানোর সুযোগ দিলেও তাঁদের পরিবার রািজ হয় না।
নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে দরিদ্র গর্ভবতী মাকে (যারা প্রকল্পে তালিকাভুক্ত) গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ল্যাবরেটরি পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাম; নরমাল বা সিজারিয়ান প্রসব, প্রসবোত্তরকালে হাসপাতালে থাকা ইত্যাদি সেবা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে প্রদান করা হয়। তারপরও তাদের মধ্যে বাড়িতে প্রসবের প্রবণতা দেখা যায়। আবার একজন মা কোথায় প্রসব করাবেন, সে ব্যাপারে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখেন স্বামী বা শ্বশুর-শাশুড়ি।
ফলে দেশে এখন যে অবকাঠামো আছে, তাতে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে মাতৃমৃত্যুর হার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব।
মাহফিদা দীনা রুবাইয়া
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন।