সংবিধানের কোনো সংশোধনী আদালত যদি বাতিল করেন, তার সঙ্গে সরকারের পদত্যাগের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু যে মন্তব্য করেছেন, তা বেঠিক নয়। আদালত কোনো আইন বাতিল করলেই সরকারকে পদত্যাগ করত হবে, এমন বিধান সংবিধানে নেই। যদিও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়টি ঐতিহাসিক এবং যুগান্তকারী।...এই রায়ের পর বর্তমান সরকারের আর ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।’

যেখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা সারা দেশে নানা অঘটন ঘটাচ্ছেন, সেসব কারণে পদত্যাগ দাবি না করে আদালত ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করায় কেন মির্জা সাহেব সরকারের পদত্যাগ চাইলেন বোধগম্য নয়। সংবিধানের কোনো সংশোধনী বাতিল হলেই যদি সরকারকে পদত্যাগ করতে হয় তাহলে হাইকোর্টে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পর বিএনপির পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
আজ ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে যেভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পরও বিএনপি অনুরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। আদালত নিশ্চয়ই কোনো দলের মুখ চেয়ে মামলার রায় দেন না। সহকর্মী মিজানুর রহমান খানের লেখা থেকে আমরা জানতে পারি যে, প্রতিবেশী ভারতের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে পাস করা সংবিধানের ৯৯তম সংশোধনী সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেন। সেই সংশোধনীতে কংগ্রেস ও বিজেপি একমত হয়েই বিচারক নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ারে কিছুটা নির্বাহী অংশগ্রহণ চেয়েছিল। কারও পদত্যাগের দাবি ওঠেনি।

 ২.

আদালতের রায়ে দুটি বিষয় থাকে। একটি সিদ্ধান্ত, যা আমরা আদেশ হিসেবে পেয়ে থাকি। আরেকটি পর্যবেক্ষণ। ষোড়শ সংশোধনী মামলার ৭৯৯ পৃষ্ঠার পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আমাদের রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমাজ, ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে এমন কতগুলো মন্তব্য করেছেন, যা গোটা জাতিকে ধাক্কা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘এমন একটি পঙ্গু সমাজে আমরা আছি, যেখানে ভালো মানুষ আর ভালো স্বপ্ন দেখে না, কিন্তু খারাপ লোকেরা আরও লুটপাটের জন্য বেপরোয়া। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দাম্ভিকতা দেখানোর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার মতো কোনো নজরদারি বা তদারককারী প্রতিষ্ঠান নেই।’ যে সমাজে মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়, সেই সমাজ ভয়ংকর। যে রাষ্ট্রে মানুষ প্রতিবাদ করতে কুণ্ঠিত, সেই রাষ্ট্র কখনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক হতে পারে না।

সামরিক শাসনামলের সমালোচনা করে রায়ে বলা হয়, ‘ক্ষমতালোভীরা দুবার আমাদের রাষ্ট্রকে “ব্যানানা রিপাবলিকে” পরিণত করেছিল, যেখানে ক্ষমতালোভীরা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য জনগণকে পণ্যরূপে দেখেছে, ধোঁকা দিয়েছে। তারা জনগণের ক্ষমতায়ন করেনি, অপব্যবহার করেছে। তারা নানা রকম ধোঁকাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। কখনো ভোটের নামে, কখনো জোরপূর্বক নির্বাচনের মাধ্যমে, কখনো নির্বাচন না করে। আর এর মধ্য দিয়েই সুস্থ ধারার রাজনীতি পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। এসব অগণতান্ত্রিক শাসনামলের নোংরা রাজনীতির চর্চা আমাদের সার্বিক রাজনীতিকে মারাত্মক ক্ষতি করেছে।’

প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যকে যদি বিএনপির বিজ্ঞ নেতারা স্বাগত জানান তাহলে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে নিন্দা করতে হয়। সেই কাজটি করতে তাঁরা প্রস্তুত আছেন কি?

রায়টি প্রধান িবচারপতি লিখলেও অন্য িবচারপতিরাও তাঁর সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন। তাই এ কথা বলা যায় না যে এটি ব্যক্তির মত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও প্রতিরোধের স্পৃহার মাধ্যমে আমরা সামরিক শাসনের থাবা থেকে মুক্ত হয়েছি। কিন্তু পরাজিত হয়েছি স্বাধীন রাষ্ট্রে। এমনকি স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও আমরা আমাদের একটি জনপ্রতিষ্ঠানকেও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। রাষ্ট্রক্ষমতার যা রাজনৈতিক ক্ষমতার আরেক রূপ, সাম্প্রতিক সময়ে তা গুটিকয়েক মানুষের একচ্ছত্র বিষয়ে পরিণত করেছে। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূতকরণের আত্মঘাতী প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। ক্ষমতার লিপ্সা মহামারির মতো, যা একবার ধরলে তা দ্রুত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য ছিল না। আমাদের পূর্বপুরুষেরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন, কোনো ক্ষমতাধর দৈত্যের জন্য নয়।’

তাঁর এই বক্তব্য বিবেকপ্রসূত এবং সমগ্র জাতির চৈতন্যে নাড়া দিয়েছে। এখানে কোনো বিশেষ শাসনামলের কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা, অক্ষমতার কথা, যা থেকে স্বয়ং বিচার বিভাগও মুক্ত নয়। ব্যানানা রিপাবলিকের স্রষ্টা দুই সামরিক শাসককে তৎকালীন প্রধান বিচারপতিদ্বয়ই শপথ পড়িয়েছেন। কেউ তখন এ কথা বলেননি যে অসাংবিধানিক কোনো শাসককে আমরা শপথ পড়াব না।

৩.

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম লিখেছেন, ‘টেক দ্য সুপ্রিম কোর্ট কমেন্টস টু হার্ট।’ সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যগুলো হৃদয়ে ধারণ করো। তাঁর মন্তব্য কলামের এক জায়গায় আছে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যকার গতানুগতিক দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। আমাদের বক্তব্য হলো, এই রায়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো তুলে আনা হয়েছে, যা বাংলাদেশকে একটি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত করেছে। সুপ্রিম কোর্ট গণতন্ত্রকে কার্যকর করার কথা বলার পাশাপাশি কয়েক দশকের গণ-আন্দোলন ও একাত্তরে লাখ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে কীভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তার ওপর আলোকপাত করেছেন।

তিনি আরও লিখেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যেসব বিষয় উত্থাপন করেছেন, তার বেশির ভাগই গণমাধ্যমে আসার কথা থাকলেও আমি দুঃখের সঙ্গে বলছি যে সেটি সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বর্তমান পরিস্থিতিকে বস্তুনিষ্ঠ ও গভীরভাবে তুলে এনেছেন। এটি গ্রহণ করা কঠিন হলেও সৎ বিচার বলেই মনে করি। আমরা আশা করব, বর্তমান ক্ষমতাসীন নেতৃত্ব ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে সমালোচনার গুণ বিচার ও আমাদের সংবিধানের সব গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নেবে। এবং তারা আইনের অধীনে থেকে আমাদের এই সুন্দর ও দারুণভাবে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ভূখণ্ডকে একটি কার্যকর রাষ্ট্রে রূপ দিতে সচেষ্ট থাকবে।

আমরা যে জাতীয় সংসদকে কার্যকর করতে পারিনি তার প্রমাণ পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদে বিরোধী দলের অব্যাহত ওয়াক আউট বা বর্জন। আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপির সাংসদেরা এবং বিএনপি আমলে আওয়ামী লীগের সাংসদের গড় হাজির থাকা এবং রাজপথে সবকিছু দখলে নেওয়ার মানসিকতা দেশকে যে মহা বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। 

প্রধান বিচারপতি এক-এগারো সম্পর্কে লিখেছেন, ‘দুই বছরের জরুরি অবস্থার নামে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আর সেটা ঘটেছিল সেই সময়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের দূরদর্শিতার অভাব এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে তাদের অনীহার কারণে।’

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রয়োজন তখনই দেখা দেয় যখন ক্ষমতাসীনদের কাছে জনগণের ভোটাধিকার অনিরাপদ মনে করা হয়। নব্বইয়ের দশকে বিএনপি সরকার সেটি নিরাপদ করতে পারেনি বলেই আওয়ামী লীগ রাজপথে আন্দোলন করে সেই ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আজ আওয়ামী লীগ সরকারও জনগণের ভোটাধিকার নিরাপদ করতে পেরেছে, তা দেশের গরিষ্ঠসংখ্যক মানুষ মনে করে না।

 প্রধান বিচারপতি লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যার সুরক্ষায় শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তাই অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেগপূর্ণ যুক্তি গ্রহণ করতে আমরা অক্ষম। এটাও স্বীকৃত যে উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মৌলিক কাঠামো, আর মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা যায় না। আর এই আদালত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার স্বার্থে সুরক্ষা দিয়েছেন।’

 ৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের বেদনাহত এবং অসংগতভাবে তাঁদের অধিকারকে শৃঙ্খলিত করেছে। তাই সংসদের কোনো ইস্যুতেই তাঁরা দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নিতে পারেন না। সংবিধানের ৯৫ (২) গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো আইন না করা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে নির্বাহী বিভাগকে একটি বিশেষ সুবিধা
দিয়েছে। আর ১১৫ ও ১১৬ অনুচ্ছেদ ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নির্বাহী বিভাগের প্রভাব পড়বে।’ যাঁরা কথায় কথায় বাহাত্তরের সংবিধানের দোহাই পাড়েন, তাঁরা কী বলবেন?

 আজকে যঁারা রাজনীতির নেতৃত্বে আছেন, কিংবা আমরা যাঁরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমালোচনা করছি, তঁারা কেউ চিরদিন থাকব না। পুরোনোদের জায়গা দখল করবে নতুনেরা। কিন্তু আমরা সেই উত্তর প্রজন্মের কাছে কেমন বাংলাদেশ রেখে যাচ্ছি, আশা করি রাষ্ট্রের পরিচালকেরা ভেবে দেখবেন।

আমাদের সংবিধানে যে ১৬টি সংশোধনী হয়েছে, তার সব কটি জনস্বার্থে হয়েছে, সে কথা বলা যাবে না। আমরা একজন চাকরিজীবীকে রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড় করানোর জন্য সংবিধানে সংশোধনী এনেছি। আমরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করার জন্য ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করলাম। রাজনীতিকদের চোখ থাকতে হয় অনাগত ভবিষ্যতের দিকে। কিন্তু আমাদের নেতা–নেত্রীরা কেবল অতীতমুখী চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকতে ভালোবাসেন।

 ৪.

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন, ‘দেশ মানচিত্রে থাকে না। দেশ থাকে নাগরিকদের হৃদয়ে।’ কথাটি একটু ঘুরিয়ে বলি, গণতন্ত্রকে সংসদ ভবনের ইটপাথর কিংবা নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে পাওয়া যাবে না, খুঁজতে হবে মানুষের অন্তরে। নিজ দলের সবাই নেতার পক্ষে জয়ধ্বনি দেবে। কিন্তু সেই নেতাই মহান যিনি অন্য দলের নেতা বা মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারেন।

ভারতের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে লেখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠিটি আমাদের গণতন্ত্রের সিপাহশালারদের পড়তে সবিনয়ে অনুরোধ করব। প্রণব মুখার্জি ও নরেন্দ্র মোদি দুই ভিন্ন দলের মানুষ। একজন কংগ্রেসের, আরেকজন বিজেপির। এই দুই দলের মধ্যে নীতি ও আদর্শের ফারাকও বিস্তর। কিন্তু তারপরও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে প্রধানমন্ত্রী মোদি যে ভাষায় চিঠি লিখেছেন, সেটি সবাইকে অনুপ্রাণিত ও আপ্লুত করবে। আর আমরা কী করছি? একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে বিএনপি গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে, আরেকজন রাষ্ট্রপতিকে আওয়ামী লীগ বিদায় বেলায় চরমভাবে অপমান করেছে। ভারতের গণতন্ত্র থেকে আমাদের গণতন্ত্রের তফাত এখানেই। মানবসম্পদসহ অনেক সূচকে ভারত থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বলে নেতা–নেত্রীরা গর্ববোধ করেন। গণতন্ত্রের সূচকে একটু এগিয়ে থাকার চেষ্টা করুন। অন্যের চোখে ধূলি না ছড়িয়ে আত্মসমালোচনা করুন। তখন সুপ্রিম কোর্টের রায় কিংবা প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ বিস্বাদ মনে হবে না। বরং এই রায় হতে পারে আমাদের গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য জাগ্রত বিবেকের ডাক।

সোহরাব হাসান: কবি, সাংবাদিক।