প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের ডান পাশে দোতলা মর্গ ভবনটির অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে মর্গটি তালাবদ্ধ থাকায় এর ফটকে মরিচা ধরেছে। জেলার ১৩টি উপজেলাসহ আশপাশের জেলা থেকে আনা লাশের ময়নাতদন্তের সব চাপ পড়ছে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ওপর।
এ ছাড়া জেনারেল হাসপাতালে লাশ সংরক্ষণের ফ্রিজার নেই। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তৈরিতে নারী লাশের জন্য নেই নারী চিকিৎসক ও ল্যাব-সুবিধা। ফরেনসিক বিভাগের কোনো চিকিৎসকও নেই। ফলে ঢাকার ল্যাব থেকে রাসায়নিকসহ অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এ কারণে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। ময়নাতদন্তের মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে অনেক সময়। ফলে মেডিকেল কলেজের মর্গটি এত দিন ধরে ফেলে রাখার কোনো মানে হয় না।
এত দিন মর্গটি পড়ে থাকার পেছনে কাজ করছে কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, মর্গটি চালু করতে প্রয়োজনীয় লোকবলের জন্য শুরু থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিয়ে আসছে তারা। মর্গ চালুর জন্য ফরেনসিক বিভাগে প্রয়োজনীয় প্রভাষক, একজন নারী চিকিৎসক, অফিস স্টাফ, ডোম ও প্রশিক্ষিত জনবলের সংকট রয়েছে।
এ ছাড়া নানা সমস্যা রয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেডিকেল কলেজ উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে মর্গ চালু হচ্ছে না। তাদের মতে, একজন অফিস স্টাফ ছাড়া সেখানে মর্গ চালুর সব ব্যবস্থাই রয়েছে। সেটিই যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে কেন মর্গটি চালু হচ্ছে না? ফলে এখানে সদিচ্ছার প্রশ্নও থাকছে।
মেডিকেল কলেজে এরই মধ্যে ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। প্রতি ব্যাচে ৬৫ শিক্ষার্থী। শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে কমপক্ষে ১০টি লাশের ময়নাতদন্ত দেখে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়।
এ জন্য অন্যত্র যাওয়া-আসার সময় নষ্টের পাশাপাশি বিভিন্ন ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। অনেক সময় কলেজের ক্লাসও বন্ধ রাখতে হয়। অথচ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মর্গ ভবন তৈরি করা হলেও মেডিকেল শিক্ষায় সেটি কোনো কাজে আসছে না।
অতএব কোনো সমস্যা থেকে থাকলে সেটি দ্রুত সমাধান করে মর্গটি চালু করা হোক।