সুজনের নেতার সাক্ষাৎকার
চাঁদা তুলে জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনা দিতে বাধ্য করা মানুষ ভালো চোখে দেখেন না
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তিতে ‘বিশেষ ভূমিকা’ রাখায় শিক্ষকেরা চাঁদা তুলে একজন জনপ্রতিনিধিকে গণসংবর্ধনা দেন। অভিযোগ উঠেছে, গণসংবর্ধনার বিষয়টি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসেনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে তাঁদের এ আয়োজন করতে বাধ্য করেছেন। এ নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কলেজশিক্ষক তরুণ ইউসুফের সঙ্গে।
প্রথম আলো: সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন জনপ্রতিনিধিকে শিক্ষকেরা চাঁদা তুলে সংবর্ধনা দিয়েছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
তরুণ ইউসুফ: শিক্ষকেরা স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে যদি এ সংবর্ধনা দিয়ে থাকেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই বলে আমি মনে করি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোসহ যেকোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা লাগে। তবে জনপ্রতিনিধিদের দলীয় লোকজন চাপ দিয়ে যদি সংবর্ধনা দিতে বলেন এবং এ জন্য শিক্ষকদের চাঁদা দিতে হয়, তা দুঃখজনক। আমি নিজেও একটি কলেজের শিক্ষক। আমাদের প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অতিথি করে আনা হয়। তাঁদের সম্মান জানানো হয়। কিন্তু এটি কারও চাপে নয়।
প্রথম আলো: টাঙ্গাইলের সখীপুরে শিক্ষকেরা কি স্বপ্রণোদিত হয়ে চাঁদা তুলে সংবর্ধনা দিয়েছেন? নাকি তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে? আপনি কী মনে করেন?
তরুণ ইউসুফ: আমি তো প্রত্যক্ষদর্শী নই। তাই এ সম্পর্কে বলতে পারব না। তবে শিক্ষকেরা স্বল্প আয়ের মানুষ। কোনো অনুষ্ঠানে চাঁদা দিলে তাঁদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। তা ছাড়া বিষয়গুলো মানুষ ভালো চোখে দেখেন না।
প্রথম আলো: চাঁদা তুলে সংসদ সদস্যকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ওই সাংবাদিকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন তাঁর অনুসারীরা...
তরুণ ইউসুফ: বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ধরনের আচরণ শোভনীয় নয়। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।
প্রথম আলো: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
তরুণ ইউসুফ: শুধু অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেই চলবে না। পাশাপাশি আমাদের মানসিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন প্রয়োজন। কাজে-কর্মে স্বচ্ছতা আনতে হবে। সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি শিক্ষিত ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের দিয়ে গঠন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে নয়; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার ফলাফল ইত্যাদি বিবেচনা করে এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।