সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পেনশন বিধিমালা ঔপনিবেশিক ধারাবাহিকতায় মূল আইন পেনশন রেগুলেশন ফর আর্মি ইন ইন্ডিয়া ১৯৪০-এর অ্যাপেনডিক্স ৯ অনুচ্ছেদ ১৬৭৯-এর আলোকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পেনশন মঞ্জুরির নীতিমালা সিএমপি ১৯৮১ (মিলিটারি পেনশনসংক্রান্ত) জারি করা হয়েছে। ওই সিএমপি ১৯৮১-এর বিধি ১০৫-এ বর্ণিত ব্যক্তিদের উত্তরসূরি হিসেবে সদস্য পারিবারিক সব সুবিধা পেনশনকারীর মৃত্যুর পর পাওয়ার হকদার, আবার সিএমপি ১৯৮১-এর বিধি ৮৩ এবং ১১২ উপ-অনুচ্ছেদ ‘বি’ এবং ‘এ’ যথাক্রমে উল্লেখ আছে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর কোনো স্ত্রী মৃত্যুজনিত অথবা বিচ্ছেদের কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করলে ওই সদস্যের অবসরকালীন সময় এবং মৃত্যুর পর পারিবারিক পেনশন পাওয়ার অযোগ্যতার কথা উল্লেখ আছে। তবে ওই বিধিদ্বয়ের অন্যান্য উপ-অনুচ্ছেদ মোতাবেক বিশেষ ক্ষেত্রে অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেলকে এ ধরনের পেনশন সুবিধাদি মঞ্জুরির ক্ষমতা প্রদানের কথা উল্লেখ থাকলেও তা বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনীতে প্রযোজ্য হচ্ছে না।
বেসামরিক সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন মঞ্জুরিও পরিশোধসংক্রান্ত বিধি-পদ্ধতি অধিকতর সহজীকরণের উদ্দেশে্য ২০০৯ সালে পেনশন সহজীকরণ আদেশ জারি করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীতে এ ধরনের পদক্ষেপ অদ্যাবধি নেওয়া হয়নি।
সিএমপি ১৯৮১-এর ৮৩ (বি) ধারা এবং ১১২ অনুযায়ী যথাক্রমে কমিশন্ড অফিসার এবং তদনিম্ন সদস্যদের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে যদি অবসর করার পর উল্লিখিত কর্মকর্তা-সদস্যরা বিবাহ করেন তাহলে তাঁদের স্ত্রী পারিবারিক পেনশন প্রাপ্য হবেন না। বাংলাদেশের কোনো সরকারি বিভাগে সশস্ত্র বাহিনী ব্যতীত এই ধরনের আইন নেই। পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে পেনশনারের স্ত্রী হলে তিনি পারিবারিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। এটা সিএমপির ধারা ১০৫ মোতাবেক পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু সিএমপি ৮৩ (বি) এবং ১১২ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বর্তমান আইনে পেনশন গ্রহণের পর দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তানও পেনশনের অধিকারী হবে না। এর মাধ্যমে স্ত্রীই তাঁর পেনশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন না, তাঁর সন্তানেরাও বঞ্চিত হচ্ছে।
আইনটি সংশোধনের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এম এ হোসেন
সাধারণ সম্পাদক, নৌবাহিনী (অব.) মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন, মহাখালী, ঢাকা।