বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে ডিজে পার্টি কাম্য নয়

যথাযথ মর্যাদা ও ঐতিহ্যে পালিত হোক বিজয় দিবস
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

চলছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছে। এই ডিসেম্বরেই দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বাঙালি জাতির সঙ্গে চলা অর্থনৈতিক, মানসিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধের অবসান ঘটে। এ মাস একদিকে যেমন গৌরব বয়ে আনে, ঠিক তেমনই বর্তমান প্রজন্মকে শিক্ষা দেয় স্বাধীনতা শব্দটা অর্জন করতে কত ত্যাগ, কত প্রাণ, কত রক্ত ঝরাতে হয়। এটা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে না পারলে, ধরে রাখতে না পারলে স্বাধীনতার আসল উদ্দেশ্য কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যাবে। এ জন্য বর্তমান প্রজন্মকে শহীদদের চেতনা বুকে ধারণ করতে হবে। তাঁদের স্মরণ করতে হবে।

দেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব হচ্ছে স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো ও নতুন প্রজন্মের কাছে শহীদদের স্মৃতিচারণ করা। কিন্তু আমাদের দেশে বর্তমানে মহান বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনে উদ্ভূত কিছু রীতি যুক্ত হতে দেখি আমরা। তরুণসহ সমাজের সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় লাউড স্পিকারে নানা রকম ডিজে গান বাজিয়ে অশ্লীল নৃত্য উল্লাসে মগ্ন হতে দেখা যায়। এসব কার্যকলাপ আমাদের দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রীয় অনুভূতিকে আঘাত করে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় আমাদের ঐতিহ্যে এ ধরনের অপসংস্কৃতি ঢুকে পড়বে, যার ফলে পরবর্তী প্রজন্ম ভুল ঐতিহ্য জেনে বড় হবে।

তা ছাড়া এ ধরনের ডিজে গান বাজিয়ে নাচানাচি করে আমাদের ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়কে কলঙ্কিত ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। আমাদের উচিত এসব কাজ বন্ধ করে সঠিক নিয়মে দেশের সব জাতীয় দিবস পালন করা।

আমাদের তরুণ সমাজের মনে রাখা উচিত আমরা বিজয় দিবসে গান বাজাব তবে দেশাত্মবোধক গান, শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত গান বাজিয়ে দেশের ইতিহাসকে তুলে ধরব। তা ছাড়া সৃষ্টিকর্তার কাছে শহীদদের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করব। আমাদের দেশে প্রতিটি জেলা-উপজেলাতে শহীদদের স্মৃতিস্বরূপ বিজয় স্তম্ভ রয়েছে। তাই দেশের সন্তান হিসেবে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমরা স্থানীয় বিজয় স্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাব। এ ছাড়াও আমাদের প্রতিটি জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে আমরা তা পালন করব। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের সতর্ক হওয়া উচিত। বিজয় দিবস উদ্‌যাপনের নামে অনাকাঙ্ক্ষিত অনুষ্ঠান বন্ধে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

মো. শাকিবুল হাসান
শিক্ষার্থী, বরেন্দ্র কলেজ, রাজশাহী