মানবপাচারের ফাঁদ বন্ধ হোক

বিদেশের কারাগারে কাঁদছে মানবপাচারের শিকার বাংলাদেশিরা

মানবপাচার আধুনিক সভ্যতার একটি নিকৃষ্টতম সামাজিক অপরাধ। প্রাচীনকাল ও মধ্যযুগের দাসপ্রথা আধুনিক যুগে মানব পাচারে পরিণত হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের নির্মম আঘাতে নিম্নবিত্ত পরিবারের কিছু মানুষ উন্নত জীবনের আশায় অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে দাসত্ব বরণ করছেন। মানবপাচার সমস্যাটি স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়। পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় মানুষের বিদেশের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তাই মানব পাচারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশেও তেমনটা দেখতে পাচ্ছি আমরা।

বাংলাদেশের বিদেশগামী নারী ও অবুঝ শিশুদের একটা অংশ বরাবরই মানবপাচারের শিকার হচ্ছে। অসাধু অপরাধী গোষ্ঠীর মাধ্যমে মানব পাচার সংঘটিত হয়। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। প্রথমে তারা বিদেশে যেতে আগ্রহী নিরীহ ও দরিদ্র মানুষকে চিহ্নিত করে। তারপর তাঁদের ছলে–বলে–কৌশলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখানো হয়। বিদেশে চাকরির নাম করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করে দেয়। এশিয়ায় নেপালের পরই মানবপাচারে বাংলাদেশের স্থান।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পাচারের জন্য নারীদের সংগ্রহ করছে চক্রটি। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। বাংলাদেশে মানব পাচারকারীদের জন্য কঠোর আইন রয়েছে। প্রশাসনকে আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে মানবপাচারকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সর্বোপরি প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের সবার সচেতনতার মাধ্যমে মানব পাচার বন্ধ হবে বলে প্রত্যাশা করি।

মো. সাইফুল মিয়া
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়