সন্তান লড়ছে, অভিভাবক কী করবেন

ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগে অভিভাবকের সঙ্গে এক পরীক্ষার্থীফাইল ছবি

দোরগোড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা কেউবা ইতিমধ্যে পাড়ি জমিয়েছেন নতুন শহরের নামী কোচিং সেন্টারে, কেউ আবার নিজ শহরে দিনরাত পরিশ্রম করছেন স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আসন নিশ্চিত করতে।

টেবিল ল্যাম্পের ক্ষীণ আলোয় তারা মুখস্থ করছেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ, ভয়েস–ন্যারেশনের নিয়ম, কিংবা পদার্থবিজ্ঞানের ভারী সূত্র। চোখে-মুখে স্বপ্ন, ক্লান্তি আর আতঙ্কের ছায়া—হবে তো একটা সিট? নাকি সব পরিশ্রম বৃথা যাবে?

অতিরিক্ত পড়ার চাপ, বন্ধুর চেয়ে পিছিয়ে পড়ার ভয়, আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ—সব মিলিয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময়টা শিক্ষার্থীদের জন্য এক কঠিন মানসিক লড়াই। তাদের নীরব কান্না গ্রামের বাড়ির মা–বাবার কানে পৌঁছায় না, কাছের মানুষেরাও বোঝেন না তাঁদের মনের অবস্থা।

এর মধ্যেই শুরু হয় আত্মীয়স্বজনের ফোন, ‘কোথায় পড়ছিস?’/ ‘টার্গেট বুয়েট না ঢাবি?’/ ‘এইবার না পারলে তো শেষ!’—এমন প্রশ্নবাণ আরও বাড়িয়ে দেয় উদ্বেগ ও হতাশা।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রত্যাশীদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ উদ্বেগে, ৪৫ শতাংশ বিষণ্নতায়, আর প্রায় ৯ শতাংশ আত্মহননের চিন্তায় ভোগেন, যা ভর্তি পরীক্ষার চাপের সরাসরি প্রতিফলন।

তাই প্রিয় অভিভাবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি অনুরোধ, এ সময় সন্তানকে প্রশ্নের চাপে ফেলবেন না। তাদের পাশে থাকুন, সাহস দিন, আশ্বাস দিন। মনে রাখবেন, আপনার একটি অনুপ্রেরণামূলক বাক্যই হতে পারে তার ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি।

  • আরিফুল ইসলাম
    শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা