গণপরিবহনে নারীর সংরক্ষিত আসন বাড়ানো এখন সময়ের দাবি

সর্বশেষ জনশুমারির মতে, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ। এর মধ্যে যথাক্রমে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ আর নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন। অনুপাতের হিসাবে দাঁড়ায় ৯৯:১০০। এই জনশুমারিতে দেশের সাক্ষরতার হার ৭৪। পুরুষের সাক্ষরতার হার ৭৬, নারীরাও পিছিয়ে নেই। নারীদের সাক্ষরতার হার ৭২।
সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর দেশে নারীদের অবস্থান খুব একটা মন্দ নয়। নিজেদের সম্ভ্রম ও সংস্কৃতি রক্ষা করে পুরুষদের সঙ্গে চরম প্রতিযোগিতায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছেন। সরকারি-বেসরকারি খাতে তাঁদের সরব উপস্থিতি।

পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের অর্থনীতিসহ নানা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। মোদ্দাকথা, দেশের সব সেক্টরে তাঁরা নিজেদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন, যা বাংলাদেশের মতো মধ্যম আয়ের দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

দেশের জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং উন্নয়নে অবদান রাখা এই নারীদের গণপরিবহনে সুযোগ-সুবিধা কেমন? বেশ কয়েক বছর ধরে পাবলিক বাসগুলোতে তাঁদের সংরক্ষিত সিটের সংখ্যা তাদের তুলনায় কত? উত্তরে যা আসবে, তাতে তাঁদের প্রতি অবিচারের দৃশ্য ফুটে উঠবে। গণপরিবহনে তাঁরা যৌন হয়রানিসহ কিছু সমস্যায় ভোগেন।

নারীদের সংরক্ষিত সিটসংখ্যা মোট সিটের ২৫ শতাংশের কম। সংরক্ষিত সিট ছাড়া অন্য আসনগুলো অধিকারে নিতে ঘোড়দৌড়ের মতো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হয়। কিন্তু সেখানে নারীরা পেরে উঠতে পারেন না।

ফলে গণপরিবহনে মেয়েদের সঙ্গে চরম বৈষম্য প্রতীয়মান হচ্ছে। নারীদের স্বভাবগত ধীরগতির কারণে প্রতিনিয়ত বাসের সুপারভাইজার কর্তৃক বঞ্চনার স্বীকার হতে হচ্ছে এবং গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে করতে তাঁদের মূল্যবান সময়ের খেসারত দিতে হচ্ছে।

তাই নারীদের সুরক্ষা ও এই বৈষম্য নিরসনে সরকারের সুনজর একান্ত কাম্য। তা ছাড়া আজ সময়ের দাবি, গণপরিবহনে নারীদের সংরক্ষিত আসন বাড়াতে হবে। আশা করছি সাধারণ নারী যাত্রীদের কল্যাণে এবং তাঁদের এই ভোগান্তি লাঘব করতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

মো. ইমরানুল হক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়