পরীক্ষার্থীদের বিলম্ব হলে কী উপায়

প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন পরীক্ষার সময় বিশেষ একটা বিষয় লক্ষণীয় যে বিলম্বে উপস্থিতির জন্য পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয় অনেক শিক্ষার্থী। এসএসসি, এইচএসসিসহ বিভিন্ন বোর্ড ছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়। কিন্তু এমনটা কেন হচ্ছে, আমরা কি তা গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছি?

যানজটের ভোগান্তি এটার একটা অন্যতম কারণ। বিশেষ করে ঢাকা শহরের মতো বিভাগীয় শহরের মধ্যে এর প্রভাব বেশি দেখা যায়। এই ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের উচিত নির্ধারিত সময়ের আরও আগে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া। কারণ, শহরগুলোর বিভিন্ন জায়গায় কোনো কোনো সময় পাঁচ মিনিটের পথ পার হতে সময় লেগে যায় আধা ঘণ্টার বেশি। তাই হাতে প্রচুর সময় নিয়ে বের হওয়া উচিত।

অন্যদিকে কিছু পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ভুল করে অন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে যায়, তখন নিজের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হয়। এই ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের হতে হবে খুব সচেতন। যেহেতু পরীক্ষাগুলো শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়; তাই এক-দুই দিন আগেই শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক কেন্দ্র ও কক্ষ নম্বর জেনে রাখা জরুরি। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র আগে থেকেই ফাইলে ঢুকিয়ে রাখা প্রয়োজন। পরীক্ষার আগের রাতে বেশি জেগে থাকা উচিত নয়। কারণ, এর ফলে দেখা যায় সঠিক ঘুমের অভাবে অনেকের পরীক্ষার দিন ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়। এটিও পরীক্ষায় বিলম্ব হওয়ার একটি কারণ হতে পারে কারও কারও জন্য।

অন্যদিকে বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ড ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও কিছু ধারা ও নীতি পরিবর্তন করা অতি জরুরি। যেমন কিছু পরীক্ষার্থী দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় বা প্রিয়জন হারানোসহ অনাকাঙ্ক্ষিত গুরুতর ঘটনার শিকার হওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে বিলম্বে উপস্থিত হয়। সে ক্ষেত্রে কীভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয় আচরণ করা যায়, তা বিবেচনা করতে হবে। কোনো না কোনোভাবে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সব দায়িত্বশীলের সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এমনটি সম্ভব। একটি পরীক্ষা দিতে না পেরে কোনো শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন থেকে এক বছর পিছিয়ে যাক এবং হতাশায় নিমজ্জিত হোক, তা আমরা কেউ চাই না।

ফারিয়া ইসলাম

শিক্ষার্থী, জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজ, কিশোরগঞ্জ