বাঘের ভবিষ্যৎ কী

১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে রাজকীয় আভিজাত্য ও চেহারার জন্য বেঙ্গল টাইগার জাতীয় পশুর মর্যাদা পায়।
ছবি: আলম হাওলাদার

বাঘের নিরাপত্তাব্যবস্থা হচ্ছে, টহলদারিও নিবিড় হচ্ছে, এ রকম খবরাখবর প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু বনাঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে সেভাবে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।
সারা বিশ্বে বেঙ্গল টাইগারের যে মর্যাদা গড়ে উঠেছে, তার গুরুত্ব এখনো শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষের মধ্যে আছে বলে সন্দেহ রয়ে গেছে। নিজেদের জীবনযাপনের তাড়নায় চুপিচুপি জঙ্গলে ঢুকে বাঘদের উত্ত্যক্ত করে তোলে। বাঘকে কীভাবে জঙ্গল ছাড়া করা যায়, কীভাবে জঙ্গলকে লোকালয় হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সে চেষ্টাও চলে। তাহলে প্রশ্ন, জাতীয় পশু বেঙ্গল টাইগারের ভবিষ্যৎ কী।

আমাদের জাতীয় পশু কী, প্রশ্ন করা হলে সবাই একবাক্যে বাঘ বলবেন। ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে বেঙ্গল টাইগারকে করা হয় জাতীয় পশু।

একসময় এ অঞ্চলে সিংহ ছিল জাতীয় পশু। কিন্তু সিংহ যেহেতু আদিকাল থেকে আমাদের এ অঞ্চলের প্রাণী ছিল না, তাই ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে রাজকীয় আভিজাত্য ও চেহারার জন্য বেঙ্গল টাইগার জাতীয় পশুর মর্যাদা পায়। এরপর বাঘ সংরক্ষণের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

আমাদের জাতীয় পশু বেঙ্গল টাইগার, কিন্তু এর সংখ্যা বৃদ্ধির হার সেই তুলনায় কম। বাঘ যে কত আছে, তার সঠিক গণনা আজ পর্যন্ত হয়নি। এর কারণ হলো, সুন্দরবনের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৬০ শতাংশ বাংলাদেশে। বাকি ৪০ শতাংশ ভারতের অভ্যন্তরে। তাই সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার হামেশাই দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগতে পারে, বাঘের সঠিক গণনা কি সম্ভব।

বাঘের সঠিক সংখ্যা কখনোই পাওয়া যাবে না।

বাঘ একদিকে কমছে, এর কারণ হিসেবে জানা যায়, চোরা শিকার আর পিটিয়ে হত্যা করা। কমে যাওয়ার আরেক কারণ হলো বেঙ্গল টাইগারের যথার্থ পরিচর্যার অভাব।

আরও প্রশ্ন জাগতে পারে, বাঘের খাদ্যের সুরাহা ও সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা কি রয়েছে?
বনাঞ্চলে যখন একটি বাঘও থাকবে না, তখন জাতীয় পশু কী হতে পারে, কেউ ভেবে দেখেছেন কি? চিড়িয়াখানাতে একটি বাঘও যদি না থাকে, তখনই-বা কী হবে?

লিয়াকত হোসেন
রূপনগর, ঢাকা