মাত্র ৫৩ বর্গ কিলোমিটারের শহর কুমিল্লা। ছোট্ট এই শহরে যানজট যেন পিছু ছাড়ছে না। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৩০ মিনিটেরও বেশি। মাত্র ১ হাজার প্যাডেলে চালিত রিকশার অনুমোদন থাকলেও শহরের অলিগলিতে ব্যাপক হারে বেড়েছে সিএনজি-মিশুক-অটোরিকশা। অথচ এসব ছোট যানের বেশির ভাগই শহরে চলাচলের অনুমতি নেই। অবৈধ এসব যানবাহন যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাঝে মাঝে পুলিশি তদারকিতে থাকলেও সুফল মিলছে না।
অভিযোগ আছে, লাইসেন্সবিহীন যানবাহনগুলো অবৈধ চাঁদা দিয়ে টোকেনে চলাচল করছে। এতে পরিবহন রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি করপোরেশন।
ছোট্ট এই শহরে রাস্তার প্রসারতা বাড়ালেও যানজট নিরসন সম্ভব হয়নি। রাস্তার দ্বারে যত্রতত্র পার্কিং, মিশুক-সিএনজির বেপরোয়া প্রতিযোগিতাসহ সামগ্রিক অব্যবস্থাপনা কুমিল্লা শহরকে বিশৃঙ্খল করে তুলেছে। শুধু তাই নয়, দ্রুতগতির এসব মিশুকের ধাক্কায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ আহত হচ্ছেন। হাত-পায়ে আঘাত পেয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিতে হয়েছে অনেক পথচারীকে। রাস্তা পারাপার এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কুমিল্লার হেলিকপ্টারখ্যাত এসব মিশুক পরিবহনগুলোর চালকেরা স্টিয়ারিংয়ে বসলে ভুলেই যান যে, এটা তিন চাকার বাহন। তাঁরা নিজেদের পাইলট মনে করেন, যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত গতি কোনোভাবেই থামছে না। শহরের যানজটের কারণে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন আশপাশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসগুলো নগরীর মূল পয়েন্ট পাড়ি দিতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে অবৈধ অটোরিকশা নিষিদ্ধ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চেয়েছিল। দেশের অন্য কোনো শহরে এমন নজির নেই, কেবল কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এমন সিদ্ধান্তে অনেকে হতভম্ব হয়েছিল বটে। ইতিহাস ঐতিহ্যের শহর কুমিল্লাতে অবৈধ ছোট পরিবহনগুলো সরিয়ে প্রয়োজনে গণপরিবহন সেবা চালু করা সময়ের দাবি। পাশাপাশি যত্রতত্র পার্কিংয়ের বিষয়ে নজর দেওয়া অতীব প্রয়োজন। জনভোগান্তির দূরীকরণে সুপরিকল্পিত নগরায়ণ বাস্তবায়ন হোক।
আবু মো. ফজলে রোহান
শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়