প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দাবি নয়, ন্যায্য অধিকার

বর্তমানে প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে পুরুষ ও নারীর যোগ্যতা স্নাতক (২য় বিভাগ) নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রথমবারের মতো একটি গ্র্যাজুয়েট ব্যাচ নিয়োগ পেয়েছে। যদিও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্তরে শিক্ষকদের বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদায় ১৩তম গ্রেড বাস্তবায়ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা। দেশের বিভিন্ন খাতে আমরা দেখি, মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগের যোগ্যতা স্নাতক সমমান, বেতন গ্রেড দশম; পুলিশের উপপরিদর্শকের নিয়োগের যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান, বেতন গ্রেড দশম; হাসপাতালের নার্সদের নিয়োগের যোগ্যতা বিএসসি ইন নার্সিং, বেতন গ্রেড দশম; উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নিয়োগের যোগ্যতা চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা, বেতন গ্রেড দশম; ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের নিয়োগের যোগ্যতা স্নাতক, বেতন গ্রেড দশম।

কিন্তু প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য যোগ্যতা স্নাতক সমমান (২য় বিভাগ) হওয়ার পরও সহকারী শিক্ষকদের বর্তমানে ১৩তম গ্রেডের বেতন নির্ধারণ করা হয়, যা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড নিছক কোনো দাবি নয়; ন্যায্য অধিকার। একজন স্নাতক, বিএড, ডিপিএড ট্রেনিংপ্রাপ্ত শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির চাকরিজীবী হিসেবে গণ্য হবেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

রাষ্ট্রকে শিক্ষকদের কল্যাণে দশম গ্রেড দিয়ে ন্যায্য দাবি পূরণ করতে হবে। শিক্ষকতা শুধু পেশা নয়; একজন শিক্ষককে দীর্ঘদিনের চর্চার মাধ্যমে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে শ্রেণি পাঠদান করতে হয়। একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকই শিক্ষার্থী, সমাজ ও দেশকে পরিবর্তন করতে পারেন। শিক্ষক তাঁর সততা, নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞা দিয়ে বদলে দিতে পারেন বিদ্যালয়ের সবকিছু। শিক্ষক সমাজের গুরু, পথনির্দেশক, আলোকিত ব্যক্তি। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি করতে হলে সবার আগে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি যৌক্তিকভাবে পূরণ করতে হবে। দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করা হলে সহকারী শিক্ষকদের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে; শিক্ষকদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকবে।

গাজী আরিফ মান্নান
আনন্দপুর, ফুলগাজী, ফেনী