বর্তমানে বেকারত্ব নিরসনে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয় একটি যুগান্তকারী প্রতিষ্ঠান। এ কমিটি তৈরি হওয়ার পর থেকে সাধারণ বেকারেরা ব্যাংকে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন। প্রতিবছর প্রায় সরকারি ১৪ ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া, পরীক্ষা নেওয়া ও সুপারিশ করা হয়। এখানে মেধার ভিত্তিতে প্যানেল তৈরি করা হয়। যাঁরা চাকরি গ্রহণ করেননি, তাঁদের জায়গায় সেই প্যানেল থেকে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু বর্তমানে কিছু প্রতিষ্ঠান সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ দিতে বিলম্ব করছে। ২০১৮ ভিত্তিক সিনিয়র অফিসারের ৭৭১টি পোস্টের বিপরীতে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট সুপারিশ করা হয়। উল্লেখ্য, ২ হাজার ৪০৪ প্রার্থী এতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টিই নিয়োগ দিয়ে দিয়েছে, কিন্তু রূপালী ব্যাংক তাদের এখনো নিয়োগ সম্পন্ন করেনি। ফলে ২১১ প্রার্থী এখনো বেকার। ৭৭১ জনের পর অন্য যাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি, এ রকম ১০০ থেকে ১৫০ জন মৌখিক পরীক্ষা দেওয়া প্রার্থী আশায় বসে আছেন। কিন্তু রূপালী ব্যাংকের দীর্ঘসূত্রতার জন্য তাঁরাও মর্মাহত।
রূপালী ব্যাংকের—
২০১৬ ভিত্তিক ১৩৪ জন অফিসার
২০১৮ ভিত্তিক ৬০ জন সহকারী নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
২০১৮ ভিত্তিক ২১১ জন সিনিয়র অফিসার
২০১৯ ভিত্তিক ৭৭ জন সিনিয়র অফিসার
২০১৮ ভিত্তিক ৪৭০ জন অফিসার
এ রকম প্রায় এক হাজার জন প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও এক থেকে আট মাস ধরে বসে আছেন। ফলে নিয়োগ হচ্ছে না, প্যানেল থেকে অপেক্ষমাণ প্রার্থীরাও নিয়োগ পাচ্ছেন না প্রায় এক বছর ধরে। এ ছাড়া ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও এ রকম বিলম্ব করে পাঁচ থেকে সাত মাস।
যেখানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ে এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই নিয়োগ দিচ্ছে, যেমন কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক।
এ বিষয়ে ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ছয় মাস বেশি বেতন-ভাতা, বোনাস পাচ্ছে আর অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়োগই দিচ্ছে না। সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রদান করে ১৫ দিনের মধ্যে কতজন যোগদান করেননি, সে তালিকা পাঠানোর জন্য নিয়ম করা যেতে পারে। এর ফলে নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা, একজনের একাধিক চাকরি, বেকারত্বের সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করি।
সাধারণ চাকরিপ্রার্থী
শাহবাগ, ঢাকা