যোগ্য জনপ্রতিনিধি কেমন হওয়া উচিত

৭ জানুয়ারি দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণত জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটেই নির্বাচিত হয়ে থাকেন সংসদ সদস্যরা, যাঁরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। একজন জনপ্রতিনিধি নির্দিষ্ট একটি এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সেখানে পাঁচ বছর জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার সুযোগ পান।

উন্নয়নশীল এই দেশে জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য একজন জনপ্রতিনিধির মধ্যে বেশ কিছু গুণ থাকা আবশ্যক। ঠিকভাবে বাংলা পড়তে পারেন না, এমন সংসদ সদস্যও আছেন আমাদের দেশে। যিনি জনগণের চাহিদা সংসদে উপস্থাপন করবেন, তাঁকে অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে। তাঁকে হতে হবে দায়িত্বসচেতন, নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারী ও জনদরদি।

জনগণের সেবার জন্যই নির্বাচিত হন জনপ্রতিনিধি। সেবাই তাঁদের লক্ষ্য। সেবাই তাঁদের উদ্দেশ্য। সেবার মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করা উচিত। একটি সুন্দর সমাজ গঠনে জনপ্রতিনিধির ভূমিকা অন্যতম। তিনি যদি তাঁর সময়, সুযোগ ও কর্তব্যের প্রতি সচেতন থাকেন, তাহলে তাঁর এলাকার উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রাখতে পারেন।

দুর্নীতির জোয়ারে ভাসছে দেশ। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে দুর্নীতি। প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিই আমাদের অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। একজন জনপ্রতিনিধি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যথাযথ প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারেন। তাঁর এলাকার বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করে অসচ্ছল ও অনাগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি জ্ঞান অর্জনে উৎসাহী করে তুলতে পারেন।

তিনি যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নসহ সমাজ থেকে অনিয়ম, ঘুষ, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দূর করে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। জনগণ যেন তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে লক্ষ রাখতে পারেন।

দেশে সুষ্ঠু রাজনীতির বিকাশ ঘটিয়ে তরুণ সমাজকে রাজনীতির ইতিবাচক দিকে ফেরাতে পারেন। এতে আমরা ভবিষ্যতে যোগ্য নেতা পাব।

একজন জনপ্রতিনিধি তাঁর এলাকার প্রত্যেকের নেতা। তাই তাঁর উচিত দল–বর্ণ–ধর্ম এমনকি ব্যক্তিগত স্বার্থ ভুলে সমাজের সব স্তরের মানুষকে এক দৃষ্টিতে দেখা, সবার চাহিদাকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া এবং যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। সর্বোপরি, যোগ্য নেতার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিই জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাম্য।

খাদিজা আক্তার
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়