শিক্ষায় কেন মেগা প্রকল্প নয়?

মেগা প্রকল্প বলতে আমরা বুঝি বিপুল অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থনীতি, পরিবেশ এবং সমাজের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিস্তারকারী বড় কোনো উন্নয়ন প্রকল্প। বর্তমানে সরকার বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করেছে।

এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয়ের অর্থ বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়ে থাকে। যদিও পরোক্ষভাবে ঋণকৃত অর্থের বিশাল একটি অংশ বাইরেই চলে যাচ্ছে। তার কারণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য যেসব দক্ষ লোকবল প্রয়োজন তা আমাদের দেশে নেই। ফলে বাইরের দেশের অভিজ্ঞ শ্রমিকগণ এসে এসব কাজ সম্পাদন করছে।

আমি মনে করি, আমাদের দেশের এই তরুণ শিক্ষিত সমাজ দ্বারাও বড় ধরনের মেগা প্রকল্প করানো সম্ভব। আমাদের শিক্ষানীতি নির্ধারকেরা যদি এই তরুণ সমাজকেই একটি মেগা প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে তবেই সম্ভব।

বর্তমানে আমরা দেখতে পাই শিক্ষা খাতটা অনেকটাই অবহেলিত। এই খাতে খুব বেশি একটা বিনিয়োগ হয় না। জাতীয় বাজেটের ১০ থেকে ১২ শতাংশের উপর এই খাতে বিনিয়োগ হয় না বললেই চলে। যার ফলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা বিকশিত করার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও পরিবেশ পায় না।

বর্তমানে পত্রিকা পড়লেই দেখতে পাই, দেশের উচ্চশিক্ষিত মেধাবীদের একটি বৃহৎ অংশ দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছে। যার ফলে দেশটা একটা সময় মেধাশূন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি আমরা এই শিক্ষিত সমাজের জন্য এখনই কিছু করতে না পারি তবে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে না।

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করা ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী বেকার। শৈশবে উজ্জ্বল স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠা এসব শিক্ষার্থীদের দিন কাটে এখন হতাশায়। চাকরির পত্রিকাগুলোতে কিছু চাকরির খবর থাকলেও তা তাদের ভাগ্যে জোটে না। এসব চাকরির অধিকাংশ পদপূরণ হয় স্বজনপ্রীতি বা অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে। ফলে সাধারণ নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেটির স্বপ্নের চাকরি পাওয়া স্বপ্নেই থেকে যায়। তাদের কেউ কেউ দেশে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি না পাওয়াই বিদেশে শ্রমিক হিসেবে পাড়ি জমাচ্ছে জীবিকার তাগিদে।

আমি অনুরোধ করব দেশের নীতি নির্ধারকদের এসব শিক্ষিত বেকারদের নিয়ে ভাবার। সরকার মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন করছে বটে কিন্তু শিক্ষার উন্নয়ন হচ্ছে কম। সরকারকে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের মতো শিক্ষা খাতকেও  মেগা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে ভবিষ্যৎ শিক্ষিত তরুণদের দিয়ে স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আবু জাহিদ
শিক্ষার্থী, সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া
২০১৮-১৯ সেশন
গ্রাম: নান্দিনাচর
ডকঘর:মথুরাপাড়া
থানা:সারিয়াকান্দি
জেলা:বগুড়া